পড়াশোনা

শক্তি কি বা কাকে বলে? শক্তির রূপ ও সংরক্ষণশীলতা নীতি

1 min read

পদার্থ বিজ্ঞানের ভাষায় কাজ করার সামর্থ্যকে শক্তি বলে। কাজ হচ্ছে বল ও বলের দিকে স্মরণের গুণফল। কৃতকাজের পরিমাণ দ্বারায় শক্তি পরিমাপ করা যায়। অর্থাৎ, কোন বস্তুর শক্তি হচ্ছে ঐ বস্তুটি মোট কতটুকু কাজ করতে পারে। তাই কাজের একক ও শক্তির একক একই। শক্তির একক জুল। কাজের এককও জুল। শক্তি একটি অদিক রাশি।

নোটঃ- ১ জুল = ১ নিউটন × ১ মিটার

শক্তির রূপ

শক্তির অনেক রূপ আছে। এর রূপগুলোকে সংশ্লিষ্ট বল অনুসারে ডাকা হয়। প্রতিটি শক্তিকে অন্য শক্তিতে রূপান্তর করা যায়। এর মাঝে কয়েকটি হলো –

  • আলোকশক্তি
  • তাপশক্তি
  • যান্ত্রিকশক্তি
  • মহাকর্ষীয়শক্তি
  • বিদ্যুৎশক্তি
  • শব্দশক্তি
  • বিভবশক্তি
  • রাসায়নিকশক্তি
  • পরমাণুশক্তি ইত্যাদি।

নোটঃ শক্তির মূল দুটি ভাগ হলো – স্থিতিশক্তি ও গতিশক্তি। চলমান বাস্তু বা ভরের শক্তি হলো গতিশক্তি। যেমন – যান্ত্রিকশক্তি, বিদ্যুৎশক্তি। আর যে শক্তি ভবিষ্যতের সম্ভাবনা হিসাবে সঞ্চিত আছে তাকে স্থিতিশক্তি বলে। যেমন – পরমাণুশক্তি, রাসায়নিকশক্তি ইত্যাদি।

রাসায়নিকশক্তি

রাসায়নিক যৌগের বন্ধনে যে শক্তি সঞ্চিত আছে তাই রাসায়নিকশক্তি। সাধারণ তাপ হিসেবে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় রাসায়নিকশক্তি নির্গত হয়। যেমন – কাঠ কয়লার মতো জ্বালানি পুড়িয়ে আমরা সেগুলোর রাসায়নিকশক্তি ব্যবহার করি।

বিদ্যুৎশক্তি

তড়িৎ পরিবাহী পদার্থে ছুটন্ত ইলেকট্রনরা যে শক্তি বহন করে তাকে বিদ্যুৎশক্তি বলে। সবচেয়ে পরিচিত এবং কার্যকর শক্তি হলো এটি। যেমন – বজ্র-বিদ্যুৎ। অন্য শক্তিকে বিদ্যুৎশক্তিতে রূপান্তর করা যায়।

যান্ত্রিকশক্তি

কোন বস্তুর গতিজনিত যে শক্তি তাই যান্ত্রিকশক্তি। যেমন – মেশিন তার যান্ত্রিকশক্তিকে ব্যবহার করে কাজ করে। এটি দুই প্রকার। যথা –

  • বিভবশক্তি
  • গতিশক্তি

বিভবশক্তি

স্বাভাবিক অবস্থা থেকে পরিবর্তন করে কোন বস্তুকে অন্য কোন অবস্থান বা অবস্থায় আনলে বস্তু কাজ করার যে সামর্থ্য অর্জন করে তাকে বিভবশক্তি বলে।

গতিশক্তি

লোন গতিশীল বস্তু তার গতির জন্য কাজ করার যে সামর্থ্য লাভ করে, তাকে গতিশক্তি বলে।

তাপশক্তি

একটি বস্তুর তাপজনিত যে শক্তি তাই তাপশক্তি। যেমন – কম্পমান অণুর শক্তি।

পরমাণুশক্তি

প্রতিটি পরমাণুর মধ্যে যে শক্তি মজুত আছে তাই পরমাণু শক্তি। ফিউশন বা ফিশন প্রক্রিয়ায় পরমাণুশক্তি উৎপাদন করা যায়।

মহাকর্ষীয়শক্তি

মহাকর্ষীয় ক্ষেত্রে একটা বস্তু যে শক্তি ধরে রাখে তা-ই মহাকর্ষীয়শক্তি। যেমন – জলপ্রপাত থেকে দুর্দান্ত বেগে পড়া জল।

শক্তির সংরক্ষণশীলতা নীতি

শক্তির যেকোন রূপকে অন্য যেকোনো রূপে রূপান্তর করা যায় তবে মোট শক্তির পরিমাণ একই থাকে। একেই শক্তির সংরক্ষণশীলতা নীতি বলে। একে এভাবেও বলা যায় –

শক্তির সৃষ্টি বা বিনাশ নেই, এটি শুধু এক রূপ থেকে অপর এক বা একাধিকরূপে পরিবর্তিত হতে পারে। মহাবিশ্বের মোট শক্তির পরিমাণ নির্দিষ্ট এবং অপরিবর্তনীয়।

কাজ – শক্তি উপপাদ্য

কোন বস্তুর উপর কৃতকাজ তার গতিশক্তির পরিবর্তনের সমান। অর্থাৎ, কোন বস্তুর উপর কাজ করলে তা বস্তুকে গতি দেয়, আবার ঐ গতিকে কাজে রূপান্তর করা সম্ভব, এ কারণে আমরা বলতে পারি ঐ বস্তুতে শক্তি এসেছে।

Rate this post
Mithu Khan

I am a blogger and educator with a passion for sharing knowledge and insights with others. I am currently studying for my honors degree in mathematics at Govt. Edward College, Pabna.

Leave a Comment

x