Modal Ad Example
পড়াশোনা

ভূমিকম্প কাকে বলে? ভূমিকম্প কেন হয়?

1 min read

প্রাকৃতিক কারণে ভূ-আন্দোলনের ফলে ভূপৃষ্ঠের কোন কোন অংশে আকস্মিক ও ক্ষণস্থায়ী স্পন্দন বা কম্পনের সৃষ্টি হলে তাকে ভূমিকম্প বলে। ভূমিকম্প একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ।

সাধারণত তিনটি প্রধান কারণে ভূমিকম্পের সৃষ্টি হতে পারে:

  • ভূপৃষ্ঠজনিত কারণ: বিভিন্ন কারণে কোন কোন সময় পাহাড়ি এলাকায় ধ্বস নামার ফলে ভূমিকম্পের সৃষ্টি হয়। বন্যা, সুনামি, জলোচ্ছ্বাস এ কারণের সাথে সম্পর্কযুক্ত।
  • আগ্নেয়গিরিজনিত কারণ: আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণ ও গলিত লাভা উৎক্ষিপ্ত হওয়ার ফলে ভূমিকম্পের সৃষ্টি হয়। ভূগর্ভ থেকে গলিত লাভা বেরিয়ে আসার চেষ্টায় প্রচণ্ড শক্তিতে আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখের ভেতরের ভূস্তরে আঘাত করতে থাকে। সেই প্রচণ্ড সংঘর্ষে ভূমিকম্পের সৃষ্টি হতে পারে।
  • শিলাচ্যুতিজনিত কারণ: ভূগর্ভের ভেতরে শিলাচ্যুতির ফলে ভূমিকম্পের সৃষ্টি হতে পারে।

এছাড়াও কতগুলো কারণে ভূমিকম্প হতে পারে। যেমন:
১. ভূগর্ভস্থ প্রবল বাষ্পচাপ;
২. ভূ-সংকোচন অথবা প্রসারণ;
৩. খনিজ পদার্থের মাত্রারিক্ত উত্তোলন;
৪. অধিক পলি উৎপাদন;
৫. ভূ-গর্ভস্থ পানির মাত্রারিক্ত ব্যবহার।

ভূমিকম্পের সময় কী করবেন?

  • ভূমিকম্প হচ্ছে টের পেলে বা খবর পেলে সঙ্গে সঙ্গে ফাঁকা ও উন্মুক্ত স্থানে আশ্রয় নিন।
  • উঁচু ভবনে থাকলে এবং বের হতে না পারলে জানালা বা দেয়ালের পাশে অবস্থান না নিয়ে শক্ত কোনো বীম, টেবিলের নিচে অবস্থান নিন।
  • হতবিহ্বল না হয়ে ধৈর্য ধরে পরিস্থিতি মোকাবেলা করুন।
  • বহুতল ভবনে একই জায়গায় অনেক মানুষ একসঙ্গে না থেকে ভাগ হয়ে আশ্রয় নিন।
  • আপনার মুঠোফোনে ফায়ার সাভির্স এবং দরকারি মোবাইল নম্বরগুলো আগাম সতর্কতা হিসেবে আগেই রেখে দিন। বিপদের সময় আপনার কাজে লাগবে।
  • দ্রুত নামার জন্য ভবন থেকে লাফিয়ে পড়বেন না।
  • ভূমিকম্পের সময় সম্ভব হলে মাথার ওপর শক্তকরে বালিশ অথবা অন্য কোনো শক্ত বস্তু [কাঠবোর্ড, নরম কাপড় চোপড়ের কুণ্ডলি] ধরে রাখুন।
  • গ্যাস এবং বৈদ্যুতিক সংযোগ থেকে দূরে অবস্থান নিন।
  • উচু ভবন থেকে দ্রুত নামার জন্য লিফট ব্যবহার করবেন না।
  • ভূমিকম্পের সময় গাড়িতে থাকলে গাড়ি খোলা জায়গায় থামিয়ে গাড়িতেই থাকুন।
  • একবার ভূমিকম্পের পরপরই আরেকটা ছোট ভূমিকম্প হয় যাকে ‘আফটার শক’ বলে। নিজেকে বিপদমুক্ত ভাবতে অন্তত একঘণ্টা সময় নিন।
বাংলাদেশকে ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল বলার কারণ কি?
ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে বাংলাদেশ ইন্ডিয়ান ও ইউরোপিয়ান প্লেটের সীমানার কাছে অবস্থিত। এ কারণে বাংলাদেশ ভূমিকম্প প্রবণ অঞ্চল। ভূমিরূপ ও ভূ-অভ্যন্তরীণ কাঠামোগত কারণে বাংলাদেশে ভূ-আলোড়নজনিত শক্তি কার্যকর এবং এর ফলে এখানে ভূমিকম্প হয়।
বিভিন্ন মানবীয় ও প্রাকৃতিক কারণে দেশের কিছু অংশে দেবে যাচ্ছে আবার কিছু অংশ উঠে যাচ্ছে। এভাবে ভূ-স্থিতির ফলে ভূমিকম্পের সম্ভাবনা বাড়ছে। পাহাড়িয়া অঞ্চলে ভূমিকম্পের কারণে ফাটলের সৃষ্টি হলে সেই ফাইল থেকে আবার ফাটল বৃদ্ধি পেলে ভূমিকম্প হয়। ভূমিরূপজনিত কারণে ভূমিকম্পের সম্ভাবনা দেখা দেয়। পাহাড়কাটাসহ মানবীয় বিভিন্ন কারণে বাংলাদেশে ভূমিকম্পের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এ সম্পর্কিত বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তরঃ–
১। ভূমিকম্প কি দুর্যোগ হিসেবে স্বীকৃত?
ক) বাহ্যিক দুর্যোগ
খ) অভ্যন্তরীণ দুর্যোগ
গ) প্রাকৃতিক দুর্যোগ
ঘ) কৃত্রিম দুর্যোগ
সঠিক উত্তর : গ) প্রাকৃতিক দুর্যোগ
২। ভূপৃষ্ঠে আকস্মিক পরিবর্তন আনে–
অথবা, ভূপৃষ্ঠের দ্রুত পরিবর্তন সাধিত হয় কোন শক্তির মাধ্যমে?
ক) নগ্নীভবন
খ) বিচূর্ণীভবন
গ) অবক্ষেপণ
ঘ) ভূমিকম্প
সঠিক উত্তর : ঘ) ভূমিকম্প
৩। ভূপৃষ্ঠের অভ্যন্তরে কত কিলোমিটার পর্যন্ত ভূকম্পন সৃষ্টি হতে পারে?
ক) ৫ কিলোমিটার – ১,১২৬ কিলোমিটার
খ) ১০ কিলোমিটার – ৫০০ কিলোমিটার
গ) ৫ কিলোমিটার – ১,২৩০ কিলোমিটার
ঘ) ৭ কিলোমিটার – ১,০০০ কিলোমিটার
সঠিক উত্তর : ক) ৫ কিলোমিটার – ১,১২৬ কিলোমিটার
৪। ভূকম্পন কেন্দ্রের অবস্থানের গভীরতার ভিত্তিতে কেন্দ্রকে কয়টি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়?
ক) ৫টি
খ) ২টি
গ) ৮টি
ঘ) ৩টি
সঠিক উত্তর : ঘ) ৩টি
৫। ভূকম্পনের ফলে বাংলাদেশের কোন নদীর তলদেশ উচু হয়ে যায়?
ক) শীতলক্ষ্যা
খ) কুশিয়ারা
গ) ব্রহ্মপুত্র
ঘ) তিতাস
সঠিক উত্তর : গ) ব্রহ্মপুত্র
৬। যেসব শক্তিশালী ভূমিকম্প পৃথিবীতে সংঘটিত হয়েছে তার সবগুলো কোন শ্রেণীভুক্ত?
ক) অগভীর
খ) মাঝারি
গ) গভীর
ঘ) ফাটল
সঠিক উত্তর : ক) অগভীর
৭। কোথায় ভূমিকম্পের প্রকোপ সবচেয়ে বেশি?
ক) আটলান্টিক মহাসাগরে
খ) প্রশান্ত মহাসাগরের বহিঃ সীমানা বরাবর
গ) হিমালয়ে
ঘ) ভারতে
সঠিক উত্তর : খ) প্রশান্ত মহাসাগরের বহিঃ সীমানা বরাবর
৮। রিক্টার স্কেল দিয়ে কি পরিমাপ করা হয়?
ক) ভূআলোড়নের সংখ্যা
খ) কম্পনের সংখ্যা
গ) ভূকম্পন শক্তি
ঘ) ঝাঁকুনির সংখ্যা
সঠিক উত্তর : গ) ভূকম্পন শক্তি
৯। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলকে কি বলে?
ক) উপকেন্দ্র
খ) কেন্দ্র
গ) ভূমিকম্প
ঘ) আগ্নেয়গিরি
সঠিক উত্তর : খ) কেন্দ্র
১০। ভূ-কম্পনে সৃষ্ট সমুদ্র ঢেউকে কি বলে?
ক) সুসামী
খ) সুনামী
গ) সুরামী
ঘ) কম্পন ঢেউ
সঠিক উত্তর : খ) সুনামী
১১। কোন স্থানটি প্রশান্ত মহাসাগরীয় ভূমিকম্প প্রবণ এলাকায় অবস্থিত?
ক) ইন্দো চীন
খ) নিউজিল্যান্ড
গ) চিলি
ঘ) ইরান
সঠিক উত্তর : গ) চিলি
১২। ৬০ কিলোমিটার গভীরতায় যে ভূকম্পন সৃষ্টি হয় তাকে বলা হয়–
ক) গভীর
খ) মধ্যম
গ) অগভীর
ঘ) সমতল
সঠিক উত্তর : গ) অগভীর
১৩। ভূমিকম্পের সময় ভূমিকম্প কেন্দ্র থেকে যে পরিমাণ শক্তি ছড়িয়ে পড়ে তাকে কি বলে?
ক) শক্তি
খ) ভূ-কম্পন শক্তি
গ) ভূমিকম্প
ঘ) ভূশক্তি
সঠিক উত্তর : খ) ভূ-কম্পন শক্তি
Rate this post
Mithu Khan

I am a blogger and educator with a passion for sharing knowledge and insights with others. I am currently studying for my honors degree in mathematics at Govt. Edward College, Pabna.

Leave a Comment

x