কম্পিউটারের প্রকারভেদ। Types of Computer

কাজ করার পদ্ধতির দিক থেকে কম্পিউটার তিন প্রকার। যথা–
১. ডিজিটাল কম্পিউটার
২. এনালগ কম্পিউটার
৩. হাইব্রিড কম্পিউটার

ডিজিটাল কম্পিউটার :
 বাইনারি সংখ্যা ব্যবহার করে সমস্যার সমাধান করে। গণনা করে তথ্যকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশে বিভক্ত করে। এটি প্রথম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উদ্ভাবিত হয়। ডিজিটাল কম্পিউটারে প্রক্রিয়াকরণের ফলাফল সরাসরি মনিটরে বা অন্য কোনাে আউটপুট ডিভাইসে প্রদর্শিত হয়। ডিজিটাল কম্পিউটারে ডিজিটাল সংকেত বা বিদ্যুৎপ্রবাহ চালু বা বন্ধ করে হিসাব কাজ করা হয়ে থাকে অর্থাৎ এটি ‘০’ বা ‘১’ দিয়ে সব ধরনের কাজের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে।

এনালগ কম্পিউটার : পরিমাপ সংক্রান্ত কাজ করে। অ্যানালগ কম্পিউটারে পরিমাপ করে ফলাফল বের করা হয় বলে এর সূক্ষ্মতা কম, মােটামুটি ০.১%। অ্যানালগ কম্পিউটারের উদাহরণ- মােটরগাড়ির স্পিডােমিটার, স্লাইড রুল, অপারেশনাল অ্যামপ্লিফায়ার ইত্যাদি।

হাইব্রিড কম্পিউটার : এনালগ ও ডিজিটাল দুই ধরনের কম্পিউটার মিলিয়ে হাইব্রিড কম্পিউটার তৈরি হয়। পরমাণু শক্তি উৎপাদন প্লান্ট, জঙ্গী বিমান, মহাকাশযান, ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ ইত্যাদি ক্ষেত্রে হাইব্রিড কম্পিউটার ব্যবহৃত হয়।

আকৃতি এবং কার্যদক্ষতার উপর ভিত্তি করে ডিজিটাল কম্পিউটারকে চার ভাগে ভাগ করা যায়—
মাইক্রো কম্পিউটার : মাইক্রোপ্রসেসর দিয়ে তৈরি ছোট আকারের কম্পিউটার হচ্ছে মাইক্রো-কম্পিউটার। মাইক্রো কম্পিউটার বিভিন্ন ধরনের হতে পারে— ডেক্সটপ, ল্যাপটপ, নােটবুক, পামটপ, পিডিএ ওয়ার্কস্টেশন ইত্যাদি। দুটি মাইক্রো কম্পিউটার হলাে IBM PC, APPLE POWER PC.

মিনি কম্পিউটার : মাইক্রো কম্পিউটার অপেক্ষা বড় কম্পিউটার হচ্ছে মিনি কম্পিউটার। এ কম্পিউটারে কিছু ছােট কম্পিউটার যুক্ত করে এক সঙ্গে কিছু লােক কাজ করতে পারে। ক্লিনিক, হাসপাতাল, বড় গার্মেন্টস, বহুজাতিক কোম্পানি প্রভৃতিতে এটি ব্যবহৃত হয়। মিনি কম্পিউটারের উদাহরণ হলাে- PDP II, NOVA 3, IBM 5/36। মিনি কম্পিউটারের জন্মদাতা কেনেথ এইচ ওলসেন। মিনি কম্পিউটারকে বলা হয় মাধ্যম সারির (Midrange) কম্পিউটার। প্রথম মিনি কম্পিউটারের নাম হলো পিডিপি-১।

মেইনফ্রেম কম্পিউটার : এটি এমন একটি বড় কম্পিউটার যার সঙ্গে অনেকগুলাে ছােট কম্পিউটার যুক্ত করে একসঙ্গে অনেকে কাজ করতে পারে। ব্যাংক, বীমা, অর্থলগ্নী প্রতিষ্ঠান, গবেষণা প্রতিষ্ঠানে তথ্য আদান-প্রদান, সংরক্ষণ এবং জটিল ও সূক্ষ্ম উপাত্ত বিশ্লেষণ এবং বৈজ্ঞানিক কর্মতৎপরতা পরিচালনার জন্য এই কম্পিউটার ব্যবহার করা যায়। মেইনফ্রেম কম্পিউটারের উদাহরণ হলাে- IBM 6120, IBM 4143, NCRN 8370. ১৯৬৪ সালে বাংলাদেশে (পরমাণু শক্তিকেন্দ্রে) স্থাপিত প্রথম কম্পিউটারটি ছিল IBM 1620 মডেলের যা একটি মেইনফ্রেম কম্পিউটার।

সুপার কম্পিউটার : অত্যন্ত শক্তিশালী ও দ্রুতগতিতে কাজ করতে সক্ষম এ কম্পিউটার। বৈজ্ঞানিক গবেষণা, জঙ্গী বিমান এবং ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ন্ত্রণ, মহাকাশ গবেষণা ইত্যাদি কাজে ব্যবহৃত হয়। এতে একই সাথে ২০০ টার্মিনাল লাগানাে যায় এবং ২০০ জন User কাজ করতে পারে। বর্তমানে এর দাম প্রায় ৬০ মিলিয়ন ডলার। কয়েকটি সুপার কম্পিউটারের উদাহরণ হলাে- CRAY-1, CRAY X-MP, CYBER-205.

  • প্রতি সেকেন্ডে বিলিয়ন বিলিয়ন হিসাব করতে পারে – সুপার কম্পিউটার।
  • বর্তমানে বিশ্বের দ্রুততম সুপার কম্পিউটার হলাে – তিয়ানহে – ২ (চীন)।
  • ‘পরম’ নামে সুপার কম্পিউটার তৈরি করে যে দেশ – ভারত।
  • বাংলাদেশের একমাত্র সুপার কম্পিউটারটি আছে – বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল ল্যাবে।
  • বাংলাদেশের সুপার কম্পিউটারটি হলাে — IBM RS/6000 SP মডেলের।
বিভিন্ন ধরনের কম্পিউটার
‘HAL – 9000’ : একটি অত্যাধুনিক কম্পিউটার। এটি মানুষের মুখের ভাষা বুঝে যে কোন বিষয়ে যৌক্তিক আলােচনা করতে পারে।
পামটপ : পামটপ এক ধরনের ছােট কম্পিউটার। হাতের তালুতে নিয়ে কাজ করা যায়। এর অন্য নাম হান্ডেল্ড পার্সোনাল কম্পিউটার (HPC) ও পার্সোনাল ডিজিটাল অ্যাসিস্ট্যান্ট (PDA)।
ল্যাপটপ : এটি ছােট মাপের ব্রিফকেসের মত মাইক্রো কম্পিউটার। এর অপর নাম নােটবুক/পাওয়ার বুক। এটি প্রথম তৈরি করে ‘এপসন’ কোম্পানি ১৯৮১ সালে। বাংলাদেশে প্রস্তুতকৃত ল্যাপটপ কম্পিউটার ‘দোয়েল’ যা তৈরি করে টেলিফোন শিল্প সংস্থা (টেশিস)।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *