লেখচিত্র কাকে বলে? লেখচিত্রের শ্রেণিবিভাগ।
লেখচিত্র কাকে বলে?
রেখার সাহায্যে অঙ্কিত পরিসংখ্যান উপাত্তের চিত্ররূপই লেখচিত্র। এক্ষেত্রে উপাত্তসমূহ নির্দিষ্ট স্কেল অনুযায়ী চিত্রের সাহায্যে অত্যন্ত সহজ ও সুন্দরভাবে প্রদর্শন করা হয়।
লেখচিত্রের শ্রেণিবিভাগ
লেখচিত্রকে চারটি শ্রেণিতে বিভক্ত করা হয়। যেমন –
১। রৈথিক লেখচিত্র (Line Graph)
২। স্তম্ভ লেখচিত্র (Bar Graph)
৩। বৃত্ত বা চক্র লেখচিত্র (Circular or pie Graph)
৪। চিত্রের মাধ্যমে লেখচিত্র (Pictorial Diagrams বা Pictograms)
১। রৈখিক লেখচিত্রঃ যখন রেখার সাহায্যে লেখচিত্র অঙ্কন করা হয়, তখন তাকে রৈখিক লেখচিত্র বলে। সাধারণত পরস্পরক সম্পর্কযুক্ত তথ্যগুলোর চিত্রগুলোর চিত্ররূ প প্রদান করার জন্য এ ধরণের লেখচিত্র ব্যবহৃত হয়। জলবায়ু সংক্রান্ত পরিসংখ্যান (যেমন – উপাত্ত), কৃষিপণ্যের উৎপাদন, শিল্পোৎপাদন, আমদানি, রপ্তানি প্রভৃতি এ পদ্ধতিতে দেখান যায়।
সুবিধাঃ
(ক) রেখচিত্রের সাহায্যে যেকোনো উৎপাদনের হ্রাসবৃদ্ধির প্রবণতা অতি সহজেই দেখান যায়।
(খ) এর দ্বারা একটি তথ্যের সাথে অপরটির তুলনামূলক সম্পর্ক সম্বন্ধে সুস্পষ্ট ধারণা করা যায়।
অসুবিধাঃ
(ক) অন্যান্য লেখচিত্রের ন্যায় এটি অধিক চিত্তাকর্ষক নয়।
(খ) সুবিধার মন্তব্যের সাথে পরস্পর বিরোধী।
২। স্তম্ভ লেখচিত্রঃ তুলনামূলক কোনো উপাত্তকে যখন স্তম্ভের সাহায্যে প্রদর্শন করা হয়, তখন তাকে স্তম্ভ লেখচিত্র বলা হয়।
সুবিধাঃ
(ক) স্তম্ভ লেখচিত্র দ্বারা একই প্রকার উপাত্তের বিভিন্ন অথবা বিভিন্ন স্থান বা সময়ের দেশের তুলনামূলক রূপ সহজেই প্রকাশ করা যায়।
(খ) এটি অঙ্কন করা সহজ, গণনার জটিলতা নেই এবং দেখতে বেশ চিত্তাকর্ষক।
(গ) এতে পরিসংখ্যানের মান সহজেই বুঝা যায়।
৩। বৃত্ত লেখচিত্রঃ বৃত্তের সাহায্যে উপাত্তকে উপস্থাপন করাকে বৃত্ত বা পাই লেখচিত্র বলে। এ ধরনের লেখচিত্রে আয়তন বৃত্ত অঙ্কন করে দেখান হয়। স্কেল অনুসারে বৃত্তটিকে বিভিন্ন অংশে ভাগ করে বিভিন্ন উপাত্তের দেখান হয়।
সুবিধাঃ
(ক) বৃত্ত লেখচিত্রের দ্বারা একটি উৎপাদনের বা উপাত্তের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশগুলোর আনুপাতিক বিস্তৃতিকে চিত্রের মাধ্যমে প্রদর্শন করা সহজ।
(খ) কতিপয় তথ্যের পরস্পরের মধ্যে এবং ঐ তথ্যগুলোর সমষ্টির সাথে প্রতিটি তথ্যের সম্পর্ক বুঝানো সহজ।
(গ) এটি দেখতে চিত্তাকর্ষক।
অসুবিধাঃ এটি দেখা মাত্র সঠিক তথ্য বুঝা যায় না।
৪। চিত্রের মাধ্যমে লেখচিত্রঃ উপাত্ত সমূহকে চিত্রের মাধ্যমে উপস্থাপনকে লেখচিত্র বলে। এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন উপাত্তের সাপেক্ষে এক একটি চিত্রকে প্রতীক হিসেবে ধরে উপস্থাপন করা হয়। এ ক্ষেত্রে কিছু বিষয় সম্পর্কে সচেতন থাকা আবশ্যক। যেমন –
প্রতীকঃ প্রতীক চিহ্নটি যেন নির্দিষ্ট উপাত্ত বিষয়ক অর্থ প্রকাশ করে। বিভিন্ন দেশের গাড়ির সংখ্যা বুঝাতে মানুষের চিত্র দিলে হবে না। আবার শহরের জনসংখ্যা বুঝাতে মানুষের চিত্রই প্রতীক রূপে ব্যবহার করতে হবে। প্রতীক চিহ্নগুলো সহজবোধ্য ও সরল হতে হবে।
সুবিধাঃ চিত্রের মাধ্যমে প্রকাশ করায় এটি অত্যন্ত সহজবোধ্য। একজন অজ্ঞ ব্যক্তিও ঐ চিত্ররূপ দেখে উপাত্তগুলো সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে পারবেন।
অসুবিধাঃ চিত্র লেখচিত্রের উপস্থাপনে মোটামুটি বা সামগ্রিক অবস্থা বুঝায়, সূক্ষ্ম পরিমাণ বোঝায় না। উপাত্তগুলোকে সঠিকভাবে না দেখিয়ে প্রায় কাছাকাছি অবস্থা দেখান হয়।