জিএসএম কি? (What is GSM in Bengali/Bangla?)
জিএসএম (GSM) হচ্ছে FDMA (Frequency Division Multiple Access ) এবং TDMA (Time Division Multiple Access) এর সম্মিলিত একটি চ্যানেল অ্যাকসেস পদ্ধতি। বাংলাদেশে টেলিটক, গ্রামীণফোন, বাংলালিংক, রবি ও এয়ারটেল মােবাইল অপারেটর GSM প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। ১৯৯১ সালে GSM কনসাের্টিয়ামের মাধ্যমে GSM প্রযুক্তি মােবাইল ফোনের ক্ষেত্রে ব্যবহার শুরু হয়। GSM প্রযুক্তি বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় মােবাইল নেটওয়ার্ক যা ২১৮টি দেশে ব্যবহৃত হয়। কাজেই এ প্রযুক্তিতে আন্তর্জাতিক রােমিং সুবিধা বেশি পাওয়া যায়। SIM সহজলভ্যতার কারণে ব্যবহারকারীগণ ইচ্ছামতাে GSM নেটওয়ার্ক এবং হ্যান্ডসেট বা মােবাইল সেট পরিবর্তন করতে পারে। এ প্রযুক্তি মােবাইল ডেটা ট্রান্সমিশনের ক্ষেত্রে উচ্চগতির প্রযুক্তি GPRS (General Packet Radio Service) ও EDGE ( Enhanced Data Rate for GSM Evolution) সুবিধা প্রদান করে। এর সেল কাভারেজ এরিয়া এখন পর্যন্ত কমবেশি ৩৫ কিলােমিটারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। এতে বিদ্যুৎ খরচ তুলনামূলকভাবে বেশি যা গড়ে প্রায় ২ ওয়াট; যেখানে CDMA টেকনােলজির ক্ষেত্রে গড়ে মাত্র ২০০ মাইক্রোওয়াট। এর ডেটা ট্রান্সফার রেট তুলনামূলক কম যা ৫৬ kbps। GSM এ পালস টেকনােলজি ব্যবহারের কারণে হাসপাতাল, অ্যারােপ্লেন প্রভৃতি স্থানে মােবাইল ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা থাকে।
GSM প্রযুক্তির সুবিধা
- বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং বহুল ব্যবহৃত মােবাইল নেটওয়ার্ক প্রযুক্তি যা বিশ্বের প্রায় ২১৮টি দেশে ব্যবহৃত হয়।
- সিগনালে ক্ষয় ও দূর্বলতা অনেক কম।
- অধিক দক্ষ ও কার্যকর ফ্রিকুয়েন্সি।
- উচ্চমানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
- ট্রান্সমিশন কোয়ালিটি উচ্চ ও গুণগত মানসম্পন্ন।
- ফ্রিকুয়েন্সি হােপিং সুবিধা প্রদান। অর্থাৎ কম ফ্রিকুয়েন্সিতে সমস্যা হলে ফ্রিকুয়েন্সি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বেড়ে যায়।
- আন্তর্জাতিক রােমিং সুবিধা প্রদান।
- যেকোন ডিজাইনের হ্যান্ডসেট ব্যবহারের সুবিধা।
- ব্যবহৃত সিম (SIM) কার্ড সহজলভ্য।
- উচ্চগতির ডেটা ট্রান্সমিশনের জন্য GPRS এবং EDGE সুবিধা প্রদান।
GSM প্রযুক্তির অসুবিধা
- সেল কভারেজ এরিয়া কমবেশি ৩৫ কিলােমিটারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ।
- বিদ্যুৎ খরচ তুলনামূলকভাবে বেশি যা প্রায় ২ ওয়াট।
- ডেটা ট্রান্সফার রেট তুলনামূলক কম যা ৫৬ kbps।
- ইলেকট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশন অত্যাধিক যা জীববৈচিত্রের জন্য হুমকিস্বরূপ।
- হ্যান্ডঅফ পদ্ধতি জটিল ফলে অনেক ক্ষেত্রে কল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
- পালস ট্রান্সমিশন টেকনােলজি ব্যবহারের ফলে হাসপাতাল, অ্যারােপ্লেন প্রভৃতি স্থানে মােবাইল ফোন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা।
- সেল কভারেজ এরিয়া ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত।
- ডেটা ট্রান্সফার রেট ১৫৪-৬১৪ kbps।
- ট্রান্সমিশন পাওয়ার খুবই কম তাই কথা বলার সময় রেডিয়েশন কম হয়।
- ব্যাটারির আয়ুষ্কাল বেশি।
- ব্যান্ডউইডথ বরাদ্দ তুলনায় GSM থেকে ৪ থেকে ৫ গুণ বেশী।
- নিরাপত্তা ব্যবস্থা তুলনামূলক বেশি।
- ইলেকট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশন কম হওয়ায় এ প্রযুক্তিকে গ্রীণফোন প্রযুক্তিও বলা হয়।
- আন্তর্জাতিক রোমিং সুবিধা নেই।
- যে কোন হ্যান্ডসেট ব্যবহারের সুবিধা নেই।
- ব্যবহারকারী বৃদ্ধি পেলে ডেটা ট্রান্সমিশনের গুনগত মান হ্রাস পায়।
- এর জনপ্রিয়তা ও ব্যবহার তুলনামূলক কম।
শেষ কথা:
আশা করি আপনাদের এই আর্টিকেলটি পছন্দ হয়েছে। আমি সর্বদা চেষ্টা করি যেন আপনারা সঠিক তথ্যটি খুজে পান। যদি আপনাদের এই “জিএসএম (GSM) এবং সিডিএমএ (CDMA) প্রযুক্তি কি?” আর্টিকেল পছন্দ হয়ে থাকে, তাহলে অবশ্যই ৫ স্টার রেটিং দিবেন।