কৃষি শিক্ষা বিষয়ক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন-১। কৃষি শিক্ষা কাকে বলে?
উত্তরঃ বিজ্ঞানের যে শাখায় ফসল, পশু, মাছ, হাঁস-মুরগি, বৃক্ষ ইত্যাদি বিষয়ে যাবতীয় শিক্ষা ও জ্ঞান অর্জন করা হয় তাকে কৃষি শিক্ষা বলে।
প্রশ্ন-২। উদ্যান ফসল কাকে বলে?
উত্তরঃ বসতবাড়ির চারপাশের উঁচু জমিতে যেসব ফুল, ফল, শাকসবজি ও মসলা জাতীয় ফসল চাষ করা হয় তাকে উদ্যান ফসল বলে। যথা : আম, শিম, গোলাপ, রসুন ইত্যাদি।
প্রশ্ন-৩। বালাইনাশক কি?
উত্তরঃ বালাইনাশক হলো ফসলি জমিতে কীটপতঙ্গ দমনে ব্যবহৃত এক প্রকার উপাদান। বালাইনাশককে বলা হয় নীরব ঘাতক।
প্রশ্ন-৪। গবাদি পশু কাকে বলে?
উত্তরঃ যে সব পশু গৃহে লালন-পালন করা হয়, বংশবৃদ্ধি ঘটে এবং যাদের অর্থনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে তাদের গবাদি পশু বলে। গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া ইত্যাদি হচ্ছে বাংলাদেশের গবাদি পশু।
প্রশ্ন-৫। অর্থকরী ফসল কাকে বলে?
উত্তরঃ যে সকল ফসল সরাসরি বিক্রির জন্য চাষ করা হয় তাকে অর্থকরী ফসল বলে। যেমন- পাট, ইক্ষু, চা, ইত্যাদি। পাট বাংলাদেশের প্রধান অর্থকরী ফসল।
প্রশ্ন-৬। তেল জাতীয় ফসল কাকে বলে?
উত্তরঃ যেসব ফসলের বীজ থেকে ভোজ্য তেল পাওয়া যায় তাদেরকে তেল জাতীয় ফসল বলে। বাংলাদেশে চাষকৃত তেল জাতীয় ফসলগুলো হচ্ছে সরিষা, সয়াবিন, সূর্যমুখী, চীনাবাদাম, তিল, তিসি, কুসুম ফুল প্রভৃতি।
প্রশ্ন-৭। সবুজ সার কাকে বলে?
উত্তরঃ কোনো সতেজ ও সবুজ উদ্ভিদকে জমিতে জন্মিয়ে গাছ সবুজ ও কচি থাকা অবস্থায় চাষ দিয়ে মাটির সাথে মিশিয়ে ও পচিয়ে যে সার তৈরি করা হয় তাকে সবুজ সার বলে।
প্রশ্ন-৮। পোল্ট্রি কাকে বলে?
উত্তরঃ যেসব প্রজাতির পাখি মানুষের তত্ত্বাবধানে লালনপালন হয়, বংশবিস্তার করে এবং যাদের অর্থনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে তাদের পোল্ট্রি বলে। যেমন– হাঁস, মুরগি, কোয়েল, কবুতর, রাজহাঁস ইত্যাদি।
প্রশ্ন-৯। জাবড়া প্রয়োগ কাকে বলে?
উত্তরঃ খরা প্রবণ এলাকায় মাটিস্থ পানির বাষ্পীভবন রোধের জন্য খড়কুটো, লতাপাতা ও কচুরিপানা দিয়ে মাটি ঢেকে দেওয়াকে জাবড়া প্রয়োগ বলে।
প্রশ্ন-১০। দাপোগ বীজতলা কাকে বলে?
উত্তরঃ বন্যাকবলিত স্থানে কলাপাতা ও পলিথিন শিট বিছিয়ে হালকা কাঁদার প্রলেপ দিয়ে তৈরি বীজতলাকে দাপোগ বীজতলা বলে।
প্রশ্ন-১১। মিশ্র বৃক্ষ চাষ কাকে বলে?
উত্তরঃ যে বনায়ন ব্যবস্থায় ফলদ, বনজ ও ঔষধি গাছের সমন্বিত চাষ করা হয় তাকে মিশ্র বৃক্ষ চাষ বলে। মিশ্র বৃক্ষরোপণ করলে এলাকায় বসবাসকারী জনগণের জ্বালানি, পুষ্টি, খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান ইত্যাদির চাহিদা মেটানো যায়। গ্রামীণ জনসাধারণের কাজের ক্ষেত্র বাড়ে।
প্রশ্ন-১২। নার্সারি কি?
উত্তরঃ নার্সারি হলো চারা উৎপাদন কেন্দ্র যেখানে চারা উৎপাদন করে রোপণের পূর্ব পর্যন্ত পরিচর্যা ও রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়।
আতুড় পুকুর কাকে বলে? এর বৈশিষ্ট্যগুলো কী কী?
উত্তরঃ যে পুকুরে ৪-৫ দিন বয়সের রেণুপোনা মজুদ করা হয় তাকে আতুড় পুকুর বলে। আতুড় পুকুরের বৈশিষ্ট্যগুলো হলো– ১. এর গভীরতা ১-১.৫ মিটার পর্যন্ত হবে; ২. পুকুরের আয়তন ১০-২৫ শতাংশ পর্যন্ত হবে।
প্রশ্ন-১৩। কেঁচো সার বা ভার্মি কম্পোস্ট কি?
উত্তরঃ কেঁচো সার বা ভার্মি কম্পোস্ট একটি উন্নত মানের জৈব সার। খামার, পশুপাখির মলমূত্র ও উদ্ভিদ আবর্জনা নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে কেঁচো দ্বারা খাইয়ে কেঁচোর মল আকারে যে সার তৈরি হয় তাকে কেঁচো সার বলে।
প্রশ্ন-১৪। দস্তার অভাবে কৃষি ফসলের কী কী ক্ষতি হয়?
উত্তরঃ দস্তার অভাবে ফসলের সাধারণত দুই ধরনের ক্ষতি হয়–
১. পাতার বৃদ্ধি ব্যাহত হয় এবং
২. ফল আকারে ছোট হয় ও ফলন কমে যায়।
দস্তার অভাব দেখা দিলে জিঙ্ক সার প্রয়োগ করে এর অভাব দূর করা যায়।
প্রশ্ন-১৫। ব্রি ধান-৫২ কি? এটি প্রসিদ্ধ কেন?
উত্তরঃ ব্রি ধান-৫২ হলো বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনন্সিটিউট কর্তৃক উদ্ভাবিত ধান যা বন্যাকবলিত এলাকায় চাষ করা হয়। এ ধান পানির নিচে ১০-১৫ দিন টিকে থাকতে পারে এবং ফলনেও তেমন প্রভাব পড়ে না। এজন্য ব্রি ধান-৫২ প্রসিদ্ধ।
প্রশ্ন-১৬। পিসিকালচার বলতে কি বুঝায়?
উত্তরঃ বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে মাছ চাষ তথা মাছ আহরণ ও সংরক্ষণ করার পদ্ধতিকে পিসিকালচার বলে। মাছ ছাড়াও শামুক, ঝিনুক, কাঁকড়া, চিংড়ি প্রভৃতি চাষ, আহরণ ও সংরক্ষণ পিসিকালচারের অন্তর্ভুক্ত।
প্রশ্ন-১৭। এপিকালচার বলতে কি বুঝায়?
উত্তরঃ আধুনিকভাবে বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে মৌমাছি প্রতিপালন ও মৌমাছির মধু সংগ্রহ করাকে এপিকালচার (apiculture) বলে।
প্রশ্ন-১৮। লেয়ার মুরগি কি?
উত্তরঃ ডিম পাড়া মুরগিকে লেয়ার মুরগি বলা হয়। বাণিজ্যিকভাবে ডিম উৎপাদনের জন্য লেয়ার মুরগি পালন করা হয়। লেয়ার পালন সাধারণত ২১-৭২ সপ্তাহ পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকে। কয়েকটি উন্নত জাতের লেয়ার মুরগি হলো– ১. ইসা ব্রাউন, ২. স্টারক্রস ব্রাইন, ৩. স্টারক্রস-৫৭৯, ৪. হাইসেক্স ব্রাউন এবং ৫. হাইসেক্স হোয়াইট।
সেরিকালচার কি?
উত্তরঃ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে রেশম চাষকে সেরিকালচার বলে। দেশের অর্থনীতিতে এর গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে।