জীববিজ্ঞান প্রশ্ন ও উত্তর (পর্ব-১৩)
প্রশ্ন-১। জীবন্ত জীবাশ্ম কাকে বলে?
উত্তরঃ বর্তমান কালের কোনো জীবিত উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্য অতীতকালের কোন জীবাশ্ম উদ্ভিদের সাথে মিল সম্পন্ন হলে তাকে জীবন্ত জীবাশ্ম বলে।
প্রশ্ন-২। জিনের কাজ কি?
উত্তরঃ জিনের প্রধান কাজগুলো হলো–
১. জীবদেহের বাহ্যিক বৈশিষ্ট্যের প্রকাশকে নিয়ন্ত্রণ করা;
২. বংশগতির একক হিসেবে বংশপরম্পরায় সঞ্চারিত হওয়া;
৩. প্রজাতির নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যের সংরক্ষণকে নিশ্চিত করা।
প্রশ্ন-৩। মিথোজীবিতা কি?
উত্তরঃ যখন দুটি ভিন্ন প্রজাতিভুক্ত জীব ঘনিষ্ঠভাবে সহাবস্থানের ফলে পরস্পরের কাছ থেকে উপকৃত হয়, তখন এ ধরনের সাহচর্যকে মিথোজীবিতা বলে। এ অবস্থায় জীবদুটিকে মিথোজীবী বলা হয়।
প্রশ্ন-৪। ভ্রূণস্তর কাকে বলে?
উত্তরঃ যৌন জননে অংশগ্রহণকারী প্রাণিতে শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর নিউক্লিয়াসের একীভবনের ফলে জাইগোট সৃষ্টি হয়৷ জাইগোট ক্রমাগত বিভক্ত হয়ে পরিস্ফুটনের মাধ্যমে ভ্রূণ সৃষ্টি করে। ভ্রূণের যে সব কোষস্তর থেকে ভবিষ্যতের বিভিন্ন টিস্যু ও অঙ্গ পরিস্ফুটিত হয়, সেগুলোকে ভ্রূণস্তর বলে।
প্রশ্ন-৫। শ্বেতকণিকা কীভাবে দেহকে রক্ষা করে?
উত্তরঃ শ্বেত কণিকা প্রহরীর মতো দেহকে বিভিন্ন রোগ জীবাণুর হাত থেকে রক্ষা করে। ক্ষণপদ সৃষ্টির মাধ্যমে শ্বেত কণিকা রোগ জীবাণুকে ভক্ষণ করে এবং রোগের হাত থেকে দেহকে রক্ষা করে। শুধু তাই নয় এন্টিবডি তৈরির মাধ্যমেও শ্বেত কণিকা দেহকে বিভিন্ন ধরনের রোগের হাত থেকে রক্ষা করে থাকে।
প্রশ্ন-৬। লিপোভাইরাস কাকে বলে?
উত্তরঃ লিপোপ্রোটিন আবরণ বিশিষ্ট ভাইরাসকে লিপোভাইরাস বলে।
প্রশ্ন-৭। প্রস্বেদন কি?
উত্তরঃ প্রস্বেদন হল উদ্ভিদদেহের বিভিন্ন অংশ দিয়ে বাষ্প আকারে অপ্রয়োজনীয় পানি নিষ্কাশনের প্রক্রিয়া। প্রস্বেদনের কাজ হলো মাটির রস শোষণ, উত্তোলন, পাতায় খনিজ লবণ পরিবহণ, ফলের মিষ্টতা বৃদ্ধি, সালোকসংশ্লেষণের জন্য পানি ও কার্বন ডাই-অক্সাইড আহরণ ইত্যাদি।
প্রশ্ন-৮। ল্যাকটিয়াল কি?
উত্তরঃ ল্যাকটিয়াল হল প্রতিটি ভিলাসের মধ্যস্থলে রক্তের কৈশিক নালি দ্বারা পরিবেষ্টিত কণিকা জালক। স্নেহ পদার্থের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণা ল্যাকটিয়ালে শোষিত হয়ে লসিকা দ্বারা বাহিত হয়ে রক্ত স্রোতে মিশে।
প্রশ্ন-৯। শস্য স্যালাইন কি?
উত্তরঃ শস্য স্যালাইন হলো সম্প্রতি আবিষ্কৃত বাড়িতে তৈরিযোগ্য খাবার স্যালাইন। এক লিটার পানি, ৫০ গ্রাম চালের গুঁড়া, এক চিমটি লবণ মিশিয়ে বাড়িতে এ স্যালাইন তৈরি করা যায়। এটি ডায়রিয়া রোগীর দেহে পানিশূন্যতা রোধে সহায়তা করে।
প্রশ্ন-১১। অণুজীববিজ্ঞান কি?
উত্তরঃ অণুজীববিজ্ঞান হচ্ছে জীববিজ্ঞানের একটি শাখা, যেখানে ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক এবং অন্যান্য অণুজীব সম্পর্কিত আলোচনা করা হয়।
প্রশ্ন-১২। পুস্টুলেটেড হরমোন কি?
উত্তরঃ উদ্ভিদ দেহের যে সকল হরমোনগুলোকে আলাদা করা যায়নি তাদের বলা হয় পুস্টুলেটেড হরমোন। এরা সাধারণত উদ্ভিদের ফুল ও জনন সংশ্লিষ্ট অঙ্গের বিকাশে সাহায্য করে। এদের মধ্যে রয়েছে- ফ্লোরিজেন ও ভার্নালিন।
প্রশ্ন-১৩। সহবাসী উদ্ভিদ কাকে বলে?
উত্তরঃ যৌন প্রজননে দুটি বিপরীতধর্মী জনন কোষের মিলন ঘটে। এদের একটি পুংজনন কোষ ও অপরটি স্ত্রী জনন কোষ। যেসব উদ্ভিদে এ দুই ধরনের জনন কোষ একই দেহে সৃষ্টি হয় তাদেরকে সহবাসী উদ্ভিদ বলে।
প্রশ্ন-১৪। উদ্ভিদ পুষ্টি কাকে বলে?
উত্তরঃ উদ্ভিদ মাটি ও পরিবেশ থেকে তার স্বাভাবিক বৃদ্ধি, শারীরবৃত্তীয় কাজ এবং প্রজননের জন্য যেসব পুষ্টি উপাদান গ্রহণ করে তাকে উদ্ভিদ পুষ্টি বলে।
প্রশ্ন-১৫। সিস্টেমা ন্যাচারাই (Systema naturae) কি?
উত্তরঃ Systema naturae হচ্ছে ক্যারোলাস লিনিয়াসের একটি গ্রন্থ। তিনি এই গ্রন্থের ১০ম সংস্করণে (১৭৫৮) দ্বিপদ নামকরণ নীতি প্রবর্তন করেন এবং গণ ও প্রজাতির সংজ্ঞা দেন।
প্রশ্ন-১৬। স্বভোজী কাকে বলে?
উত্তরঃ যে সকল উদ্ভিদ নিজের খাবার নিজেই তৈরি করতে পারে, অন্য কোনো জীবের উপর খাদ্যের জন্য নির্ভর করতে হয় না তাদেরকে স্বভোজী বলে। উৎপাদক উদ্ভিদগুলোকে স্বভোজী বলা হয়।
প্রশ্ন-১৭। বিএমআই (BMI) কি?
উত্তরঃ BMI-এর পূর্ণরূপ হল– Body Mass Index। বিএমআই মানব দেহের গড়ন ও চর্বির সূচক নির্দেশক। এটি সুস্থ জীবনযাপনে মানব শরীরের সুস্বাস্থ্য রক্ষায় কোনো নির্দিষ্ট বয়সে শরীরের দৈর্ঘ্যের সাথে চর্বির পরিমাণগত সম্পর্ক মান নির্দেশ করে।
প্রশ্ন-১৮। টেনডন কাকে বলে?
উত্তরঃ যে ঘন, শ্বেত তন্তুময় যোজক টিস্যু মাংসপেশির প্রান্তভাগে রজ্জুর মতো শক্ত হয়ে অস্থিগাত্রের সাথে সংযুক্ত হয় তাকে টেনডন বলে। টেনডনের সাহায্যে একটি হাড়ের সাথে অন্য হাড় আটকে থাকে।
প্রশ্ন-১৯। প্রোফেজ কি?
উত্তরঃ প্রোফেজ হচ্ছে মাইটোসিস কোষ বিভাজনের প্রথম পর্যায়। এ পর্যায়ে কোষের নিউক্লিয়াস আকারে বড় হয় এবং ক্রোমোজম থেকে পানি কমতে থাকে। প্রতিটি ক্রোমোজম সেন্ট্রোমিয়ার ব্যতীত লম্বালম্বি দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে দুটি ক্রোমাটিড উৎপন্ন করে।
প্রশ্ন-২০। পাতা কী কী কারণে রূপান্তরিত হয়?
উত্তরঃ বিশেষ বিশেষ কাজ সমাধা করার জন্য পাতার রূপ পরিবর্তিত হয়। নিচে কারণগুলো দেওয়া হলো–
- কোনো কিছুকে আঁকড়ে ধরতে।
- খাদ্য সঞ্চয় করতে।
- পতঙ্গ ফাঁদ তৈরি করতে।
- প্রজননে অংশগ্রহণ করতে।
- কণ্টকপত্র বা কাঁটায় রূপান্তরিত হতে।
- কাক্ষিত মুকুলকে রক্ষা করতে।