ষষ্ঠ অধ্যায় : জ্যামিতিক আলকবিজ্ঞান, একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির পদার্থবিজ্ঞান ২য় পত্র
প্রশ্ন-১। জ্যামিতিক আলোকবিজ্ঞান কি? (What is meant by geometrical optics?)
উত্তর : জ্যামিতিক আলোকবিজ্ঞান হচ্ছে আলোকবিজ্ঞান তথা পদার্থবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। জ্যামিতিক আলোকবিজ্ঞানে আলোক রশ্মির সাহায্যে আলোর সঞ্চারণ বর্ণনা করা হয়।
প্রশ্ন-২। দূরবীক্ষণ যন্ত্র কাকে বলে?
উত্তর : দুরের বস্তুকে ভালোভাবে দেখার জন্য যে আলোক যন্ত্র ব্যবহার করা হয় তাকে দূরবীক্ষণ যন্ত্র বলে।
প্রশ্ন-৩। দূরবীক্ষণ যন্ত্র কত প্রকার ও কি কি?
উত্তর : দূরবীক্ষণ যন্ত্র দুই প্রকার। যথাঃ- ১। প্রতিসরণ দূরবীক্ষণ যন্ত্র এবং ২। প্রতিফলক দূরবীক্ষণ যন্ত্র।
প্রশ্ন-৪। প্রিজমের কয়টি তল থাকে?
উত্তর : প্রিজমের মোট পাঁচটি তল থাকে।
প্রশ্ন-৫। বিচ্ছুরণ ক্ষমতা কাকে বলে?
উত্তর : কোনো একটি স্বচ্ছ মাধ্যম কর্তৃক সৃষ্ট বর্ণালীতে দুই অন্তিম রশ্মির (বা যে কোনো দুটি বর্ণের আলোক রশ্মির) কৌণিক বিচ্যুতির পার্থক্য এবং মধ্য বা গড় রশ্মির কৌণিক বিচ্যুতির অনুপাতকে উক্ত মাধ্যমের বিচ্ছুরণ ক্ষমতা বলে।
প্রশ্ন-৬। অণুবীক্ষণ যন্ত্র কাকে বলে? (What is called microscope?)
উত্তর : যে যন্ত্রের সাহায্যে নিকটবর্তী ক্ষুদ্র বস্তুকে অনেক বড় করে দেখা যায় তাকে অণুবীক্ষণ যন্ত্র বলে। অণুবীক্ষণ যন্ত্র দুই প্রকার। যথাঃ (১) সরল অণুবীক্ষণ যন্ত্র বা বিবর্ধক কাচ এবং (২) জটিল বা যৌগিক অণুবীক্ষণ যন্ত্র।
প্রশ্ন-৭। সরু প্রিজম কাকে বলে?
উত্তর : কোনো প্রিজমের প্রতিসারক কোণ 6° বা তা অপেক্ষা কম হলে তাকে সরু প্রিজম (Thin prism) বলে। একটি সরু প্রিজমের ওপর ক্ষুদ্র আপতন কোণে রশ্মি আপতিত হলে বিচ্যুতি কোণের মান আপতন কোণের ওপর নির্ভর করে।
প্রশ্ন-৮। বিবর্ধন বলতে কি বুঝায়? (What does magnification mean?)
উত্তর : বিবর্ধন বলতে প্রতিবিম্বের আকার ও লক্ষ্যবস্তুর আকারের অনুপাতকে বুঝায়। যৌগিক অণুবীক্ষণ যন্ত্রে প্রতিবিম্ব দুবার বিবর্ধিত হয়, প্রথম অভিলক্ষ্য দ্বারা এবং পরে অভিনেত্র দ্বারা।
প্রশ্ন-৯। দৃষ্টিকোণ কাকে বলে?
উত্তর : কোন বস্তুর প্রান্ত বিন্দুদ্বয় চোখের লেন্সে যে কোণ উৎপন্ন করে তাকে দৃষ্টিকোণ বলে।
প্রশ্ন-১০। আলোকের বিচ্ছুরণ কী? (What is dispersion of light?)
উত্তর : কোন স্বচ্ছ মাধ্যমে প্রতিসরণের ফলে সূর্যালোক বা যৌগিক আলোক রশ্মির বিভিন্ন মূল বর্ণের আলোক রশ্মিতে বিশিষ্ট হবার ঘটনাকে আলোকের বিচ্ছুরণ বলে।
প্রশ্ন-১১। টেলিস্কোপ কাকে বলে? (What is called Telescope?)
উত্তরঃ যে যন্ত্রের সাহায্যে বহু দূরের বস্তু পরিষ্কারভাবে দেখা যায় তাকে দূরবীক্ষণ যন্ত্র বা টেলিস্কোপ বলে।
প্রশ্ন-১২। আলোর প্রতিসরণ কাকে বলে? (What is refraction of light short answer?)
উত্তরঃ ভিন্ন ঘনত্বের দুইটি স্বচ্ছ মাধ্যমের বিভেদ তলে আলো যদি তির্যকভাবে আপতিত হয়, তাহলে দ্বিতীয় মাধ্যমে প্রবেশের সময় রশ্মির দিক পরিবর্তিত হয়। এ দিক পরিবর্তন হওয়াকে আলোর প্রতিসরণ বলে।
প্রশ্ন-১৩। স্নেলের সূত্র কী? (What is Snell’s law?)
উত্তরঃ একজোড়া নির্দিষ্ট মাধ্যম ও নির্দিষ্ট রং-এর আলোর জন্যে আপতন কোণের সাইন ও প্রতিসরণ কোণের সাইনের অনুপাত ধ্রুব থাকে।
প্রশ্ন-১৪। প্রতিসরাঙ্ক কী? (What is refractive index?)
উত্তরঃ আলোক রশ্মি এক স্বচ্ছ মাধ্যম থেকে অন্য কোনো স্বচ্ছ মাধ্যমে প্রতিসৃত হলে আপতন কোণের সাইন এবং প্রতিসরণ কোণের সাইনের অনুপাতকে প্রথম মাধ্যমের সাপেক্ষে দ্বিতীয় মাধ্যমের প্রতিসরাঙ্ক বলে।
একবণী আলো কাকে বলে?
উত্তর : যে আলোক রশ্মির একটিমাত্র তরঙ্গদৈর্ঘ্য থাকে তাকে একবর্ণী আলো বলে।
চক্ষুর উপযোজনী ক্ষমতা কাকে বলে?
উত্তর : যে কোন দূরত্বের বস্তু দেখার জন্য চোখের লেন্সের ফোকাস দূরত্ব নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতাকে চক্ষুর উপযোজনী ক্ষমতা বলে।
প্রশ্ন-১৫। লেন্সের ক্ষমতা কী? (What is power of lens?)
উত্তরঃ কোনো লেন্স দ্বারা আলোক রশ্মির অভিসারিতা বা অপসারিতা উৎপাদনের সামর্থ্যকে লেন্সের ক্ষমতা বলে।
লেন্স ও প্রিজমের মধ্যে আলোর প্রতিসরণের তুলনা কর।
উত্তরঃ লেন্সে দুইবার আলোর প্রতিসরণ ঘটে। প্রিজমেও দুইবার আলোর প্রতিসরণ ঘটে। তবে লেন্সের ক্ষেত্রে প্রতিসরণ ঘটে গোলকীয় পৃষ্ঠে, আর প্রিজমে প্রতিসরণ ঘটে সমতল পৃষ্ঠে।
কাচের সমবর্তন কোণ 57° বলতে কী বুঝায়?
উত্তর : কাচের সমবর্তন কোণ 57° বলতে বুঝায়, অসমবর্তিত আলোক রশ্মি কাচে 57° কোণে আপতিত হলে প্রতিফলিত রশ্মি সর্বাধিক পরিমাণ সমবর্তীত হবে।
একটি ভালো বীক্ষণ যন্ত্রের কী কী বৈশিষ্ট্য থাকতে হবে?
উত্তর : একটি ভালো বীক্ষণ যন্ত্রের যা যা বৈশিষ্ট্য থাকতে হবে সেগুলো নিম্নরূপঃ
- দৃষ্টিকোণ বা বীক্ষণ কোণ বড় হবে।
- পর্যবেক্ষণের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করবে।
এদের জন্য প্রয়োজনীয় শর্তঃ
- দৃষ্টিক্ষেত্র বৃদ্ধি করা ও উজ্জ্বল প্রতিবিম্ব সৃষ্টি করা।
- বিশ্লেষণী ক্ষমতা বৃদ্ধি করা।
সাদা আলো প্রিজমের মধ্য দিয়ে যাবার সময় বিচ্ছুরিত হয় কেন?
উত্তরঃ আমরা জানি, একটি নির্দিষ্ট বর্ণের আলোর জন্য কোনো মাধ্যমের প্রতিসরাংক একটি ধ্রুব সংখ্যা। কিন্তু বিভিন্ন বর্ণের আলোর জন্য এই সংখ্যা বিভিন্ন। বিভিন্ন বর্ণের আলোর প্রতিসরাঙ্ক বিভিন্ন হওয়ায় আলো এক মাধ্যম থেকে অন্য মাধ্যমে প্রতিসরণের সময় একই কোণে আপতিত হলেও বিভিন্ন বর্ণের প্রতিসরণ কোণ বিভিন্ন হয়। ফলে বর্ণগুলো পরস্পর থেকে আলাদা হয়ে পড়ে। প্রিজমে আলো প্রতিসরণের ক্ষেত্রে দুইবার ভূমির দিকে বেঁকে যায়। তাই বিভিন্ন আলোক রশ্মির জন্য আপতন কোণ i1 এক হলেও নির্গমন কোণ i2 ভিন্ন হয়। আমরা জানি প্রিজমের বিচ্যুতি, S = (i1 + i2) – A। i2 ভিন্ন হওয়ার কারণে বিভিন্ন বর্ণের বিচ্যুতি ভিন্ন হয়। এ কারণে সাদা আলো প্রিজমের মধ্য দিয়ে প্রতিসরণের সময় বিচ্ছুরিত হয়।