রসায়ন প্রশ্ন ও উত্তর (পর্ব-৩৮)

প্রশ্ন-১। উত্তেজক রাসায়নিক পদার্থ কাকে বলে?
উত্তরঃ যেসব রাসায়নিক পদার্থ ত্বকের সংস্পর্শে এলে ত্বককে ক্ষতিগ্রস্থ করে সেই পদার্থগুলিকে উত্তেজক রাসায়নিক পদার্থ বলে। উত্তেজক রাসায়নিক পদার্থসমূহ হচ্ছে- সিমেন্ট গুড়া, লঘু এসিডের দ্রবণ, লঘু ক্ষারের দ্রবণ, সোপ পাউডার, বিরঞ্জক পদার্থ, ফরমালডিহাইড, ক্লোরোফরম, ক্লোরিন গ্যাস ইত্যাদি।

প্রশ্ন-২। সংকুচিত গ্যাস কাকে বলে?
উত্তরঃ উচ্চচাপে যেসব গ্যাসকে সংকুচিত করে সিলিন্ডার জাতকরণ করে সংরক্ষণ করা হয় তাদেরকে সংকুচিত গ্যাস বলে। সংকুচিত গ্যাসসমূহ হচ্ছে- CH₄ ; O₂; N₂ ; CO₂ ; Cl₂ ; C₂H₂ ;NH₃ ; SO₂; NO₂ ; H₂ ; LPG, CNG, LPG, He, অ্যারোসল, অগ্নিনির্বাপক গ্যাস ইত্যাদি।

প্রশ্ন-৩। ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ কাকে বলে?
উত্তরঃ যে সকল রাসায়নিক পদার্থ স্বাস্থ্য ও পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতিসাধন করে তাদেরকে ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ বলে। ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থগুলি হচ্ছে-  সকল অ্যাসিড, ক্ষার, ক্লোরোফরম, ফরমালিন, অ্যাসিটিলিন গ্যাস, ফসজিন গ্যাস, অ্যামোনিয়া, বেনজয়িক এসিড, টলুইন, লিকার অ্যামোনিয়া, ইথানল, বেরিয়াম ক্লোরাইড, বিরঞ্জক পদার্থ,  H₂S; Cl₂; SO₂; NO₂; Paints, Floor polishes জাতীয় পদার্থ, অ্যান্টিফ্রিজ, পোকামাকড় মারার ঔষধ ইত্যাদি।

প্রশ্ন-৪। অ্যান্টাসিড কি?
উত্তরঃ অ্যান্টাসিড হলো মূলত ম্যাগনোসিয়াম হাইড্রোক্সাইড যা সাসপেনশন ও ট্যাবলেট দু‘ভাবেই পওয়া যায়।

প্রশ্ন-৫। রাসায়নিক বিশ্লেষণ কত প্রকার ও কী কী?
উত্তরঃ রাসায়নিক বিশ্লেষণ দুই প্রকার। যথাঃ- ১. গুণগত বিশ্লেষণ বা আঙ্গিক বিশ্লেষণ এবং ২. পরিমাণগত বিশ্লেষণ বা মাত্রিক বিশ্লেষণ।

প্রশ্ন-৬। ইবনে আল হাইয়াম কোন দেশের নাগরিক?
উত্তরঃ ইবনে আল হাইয়াম আরব দেশের নাগরিক।

প্রশ্ন-৭। অক্সিহাইড্রোজেন শিখা কি?
উত্তরঃ অক্সিজেন ও হাইড্রোজেনের মিশ্রণ দহন করে যে শিখা পাওয়া যায় তা-ই হলো অক্সিহাইড্রোজেন শিখা। এর তাপমাত্রা ২৮০০° সে.। ধাতু গলানো ও ঝালাইয়ের কাজে এ শিখা ব্যবহৃত হয়।

প্রশ্ন-৮। ম্যাগসল্ট বলতে কি বুঝ?

উত্তরঃ ‘ম্যাগসল্ট’ নতুন সন্ধান পাওয়া বিশেষ ধরনের লবণ। সম্প্রতি আইসল্যান্ডের একটি খনিতে ডাচ গবেষক ডাইডেবিক গ্রোবি এবং আমেরিকার হৃদরোগ গবেষক ডা. স্ট্যামলাম এ লবণের সন্ধান পান। এ লবণে থাকে সোডিয়াম, পটাসিয়াম এবং ম্যাঙ্গানিজ। উচ্চ রক্তচাপ রোগীদের জন্য এ লবণ উপকারী।

প্রশ্ন-৯। অক্সিজেনের ভরসংখ্যা ১৬ বলতে কী বুঝায়?
উত্তরঃ কোনো মৌলের পরমাণুতে প্রোটন ও নিউট্রনের সমষ্টিকে বলা হয় ভরসংখ্যা।
অর্থাৎ ভরসংখ্যা = প্রোটনের সংখ্যা + নিউট্রনের সংখ্যা।
∴ অক্সিজেনের ভর সংখ্যা ১৬ বলতে বোঝায় অক্সিজেনের একটি পরমাণুতে প্রোটন ও নিউট্রনের মোট সংখ্যা ১৬টি।
প্রশ্ন-১০। SMP বা ভাসমান বস্তুকণা কাকে বলে?

উত্তরঃ SMP এর পূর্ণরূপ হচ্ছে- Suspended Particle of Matter। বাতাসে ভেসে বেড়ানো সীসা, আর্সেনিক, নিকেল প্রভৃতি ধূলিকণাকে SMP বা ভাসমান বস্তুকণা বলে। এ কণাগুলো স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে অধিক মাত্রায় থাকলে বাতাস দূষিত হয়। বাতাসে SMP-এর স্বাভাবিক মাত্রা হলো ২০০ মাইক্রো গ্রাম/ঘনমিটার।

প্রশ্ন-১১। সিলিন্ডার রেগুলেটর কাকে বলে?
উত্তরঃ যে সকল রেগুলেটর শুধুমাত্র একক সিলিন্ডারের গ্যাস প্রেসার ও ওয়ার্কিং প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করে, তাকে সিলিন্ডার রেগুলেটর বলে। সিলিন্ডারের রক্ষিত যে নির্দিষ্ট গ্যাসের নিয়ন্ত্রণের জন্য এটি ব্যবহৃত হয়, তার নাম অনুসারেই এদের নামকরণ করা হয়। যেমন- অক্সিজেন রেগুলেটর, অ্যাসিটিলিন রেগুলেটর, আর্গন রেগুলেটর ইত্যাদি।

প্রশ্ন-১২। বাইমোলার দ্রবণ কাকে বলে?
উত্তরঃ নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় 1L বা 1000ml দ্রাবকে 2mole দ্রব্য দ্রবীভূত থেকে যে দ্রবণ তৈরি করে তাকে বাইমোলার দ্রবণ বলে। এক্ষেত্রে দ্রবণের ঘনমাত্রা 2M হয়।

প্রশ্ন-১৩। ২-ডিজিট ব্যালেন্স কাকে বলে?
উত্তরঃ রসায়ন পরীক্ষাগারে যে ডিজিটাল ব্যালেন্স দ্বারা কোন রাসায়নিক বস্তুর ভর 0.01g পর্যন্ত সঠিকভাবে নির্ণয় করা যায়, তাকে ২-ডিজিট ব্যালেন্স বলে। মূলত সেকেন্ডারি স্ট্যান্ডার্ড পদার্থের ওজন পরিমাপ করার জন্য এই ব্যালেন্স ব্যবহার করা হয়।  এ ব্যালেন্সকে রাফ ব্যালেন্সও বলে।
প্রশ্ন-১৪। তাপ রাসায়নিক সমীকরণ কাকে বলে?
উত্তরঃ কোন রাসায়নিক বিক্রিয়ায় তাপ শক্তি উৎপাদিত বা শোষিত হলে যে সমীকরণের সাহায্যে প্রকাশ করা হয় তাকে ঐ সমীকরণের তাপ রাসায়নিক সমীকরণ বলে।
প্রশ্ন-১৫। ভরভিত্তিক বিশ্লেষণ কাকে বলে?
উত্তরঃ রাসায়নিক বিশ্লেষণে কোন নমুনায় উপস্থিত নির্দিষ্ট উপাদানকে অধঃক্ষিপ্ত করে সেই অধঃক্ষেপকে পৃথক করার পর শুষ্ক করে গ্রাম এককে ভর নির্ণয়ের পদ্ধতিকে ভরভিত্তিক বিশ্লেষণ বলে।
প্রশ্ন-১৬। দাহ্য রাসায়নিক পদার্থ কি কি?
উত্তরঃ আমরা প্রতিনিয়ত যে সব রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করি তার মধ্যে অনেক পদার্থই দাহ্য। যেমনঃ অ্যালকোহল, পেট্রোল, মিথাইলেটেড স্পিরিট, অ্যারোসল, ইথাইন গ্যাস (অ্যাসিটিলিন), প্যারাফিন অয়েল, কেরোসিন, বেনজিন, ইথোক্সি ইথেন (ডাই ইথাইল ইথার), ইথানয়িক এসিড, প্রোপানোন, টলুইন, মিথেন, অ্যানিলিন, হাইড্রোজেন, বিউটেন, ইথানল, Zn-পাউডার, LiH, Na, NaH, LPG, CNG, LNG, LiAlH₄ ইত্যাদি।
প্রশ্ন-১৭। বিজারক পদার্থ ইলেকট্রন ত্যাগ করে কেন?
উত্তরঃ যে সকল পদার্থ অন্য পদার্থকে বিজারিত করে এবং সেই সাথে নিজে জারিত হয় তাকে বিজারক পদার্থ বলে। অর্থাৎ বিজারক পদার্থসমূহ ইলেকট্রন ত্যাগ করে। বিজারক পদার্থ রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করার সময় ইলেকট্রন ত্যাগ করতে সক্ষম হয়।  কারণ বিজারক পদার্থগুলি সাধারণত ইলেকট্রন ত্যাগ করে স্থিতিশীল অবস্থা প্রাপ্ত হয়। এজন্য বিজারক পদার্থগুলি ইলেকট্রন প্রদানে সক্ষম হয়।
প্রশ্ন-১৮। বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ কাকে বলে?
উত্তরঃ যে সকল রাসায়নিক পদার্থ শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে গ্রহণ করলে স্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি সাধিত হয়, এমনকি মৃত্যুও হতে পারে সেই পদার্থগুলিকে বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ বলে।
প্রশ্ন-১৯। সক্রিয় নাইট্রোজেন কি?
উত্তরঃ নাইট্রোজেন গ্যাসের মধ্যে বিদ্যুৎ ক্ষরণের ফলে নাইট্রোজেনের যে রূপভেদ পাওয়া যায় তা সাধারণ নাইট্রোজেন অপেক্ষা যথেষ্ট ক্রিয়াশীল বলে এরূপ নাইট্রোজেনকে সক্রিয় নাইট্রোজেন বলে। সক্রিয় নাইট্রোজেন অনেক রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটায়। যা সাধারণ নাইট্রোজেনের পক্ষে সম্ভব নয়। যেমনঃ সক্রিয় নাইট্রোজেনের সাথে লোহিত ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, আর্সেনিক এর বিক্রিয়ায় এদের নাইট্রাইট গঠিত হয়।
প্রশ্ন-২০। ১৯৯২ সালে পরিবেশ ও উন্নয়ন নামে সম্মেলনের প্রতিপাদ্য বিষয় কি ছিল?
উত্তরঃ ১৯৯২ সালে পরিবেশ ও উন্নয়ন নামে সম্মেলনের প্রতিপাদ্য বিষয়ঃ
১. রাসায়নিক পদার্থকে ঝুঁকি ও ঝুঁকির মাত্রা ভিত্তিতে ভাগ করা।
২. ঝুঁকির সতর্কতা সংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত (ডাটাবেজ) তৈরি করা।
৩. ঝুঁকি (Hazard) ও ঝুঁকির মাত্রা বুঝাবার জন্য সার্বজনীন সাংকেতিক চিহ্ন নির্ধারণ করা।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *