পড়াশোনা

অষ্টম শ্রেণির তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রথম অধ্যায় প্রশ্ন ও উত্তর

1 min read

অষ্টম শ্রেণির তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ১ম অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর আলোচনা করবো। প্রতিটি প্রশ্নের সাথে উত্তর দেয়া থাকবে, যাতে করে শিক্ষার্থীরা কোন প্রকার গাইড বই ছাড়াই নিজেকে প্রস্তুত করে নিতে পারে।

প্রশ্ন-১। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পর্কে লেখ।

অথবা, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কী?

উত্তর : তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বলতে আমরা তথ্য প্রযুক্তি ও যোগাযোগ প্রযুক্তির এক ধরনের একীভূত অবস্থাকে বুঝি। টেলিযোগাযোগ, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক ও তৎসম্পর্কিত সফটওয়্যার, তথ্য সংরক্ষণ, অডিও-ভিডিও সিস্টেম ইত্যাদির সমন্বয়ে গঠিত এ ব্যবস্থার মাধ্যমে একজন ব্যবহারকারী খুব সহজে তথ্য গ্রহণ, সংরক্ষণ, সঞ্চালন ও বিশ্লেষণ করতে পারেন। এর ব্যাপক ব্যবহারের ফলে বর্তমান বিশ্ব মানুষের জন্য শ্রেয় হতে শ্রেয়তর হচ্ছে। সাধারণ মানুষের ব্যক্তিগত কাজ থেকে রাষ্ট্রের বড় বড় কাজে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অবাধ ব্যবহার হচ্ছে। এখন অনেক কাজ সহজ হয়ে গেছে এবং নতুন নতুন কাজ সৃষ্টি হচ্ছে এই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির কল্যাণে।

প্রশ্ন-২। দৈনন্দিন জীবনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার উল্লেখ কর।

উত্তর : দৈনন্দিন জীবনে প্রায় সব ক্ষেত্রেই এখন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রভাব আছে। তার মধ্যে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ব্যবহার উল্লেখ করা হলো :

১. বিদেশ থেকে সহজেই মোবাইল ফোনের মাধ্যমে টাকা পাঠানো।

২. মোবাইল ফোনেই পরীক্ষার ফলাফল জেনে নেওয়া।

৩. ঘরে বসেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে চাকরির দরখাস্ত করা।

৪. মোবাইলের মাধ্যমেই ট্রেনের টিকেট কাটা।

৫. প্রয়োজনীয় তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে ইন্টাররেটের মাধ্যমে জেনে নেওয়া

৬. বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে নাগরিক সেবাসমূহ অনলাইনের মাধ্যমে জেনে নেওয়া।

৭. একজন শিক্ষার্থীর শ্রেণির কাজের কঠিন সমস্যাটি ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে সাহায্য নেওয়া।

এ রকম প্রভৃতি ক্ষেত্রে আমরা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিকে ব্যবহার করছি।

প্রশ্ন-৩। দ্বিমুখী যোগাযোগ পদ্ধতি কী?

উত্তর : যোগাযোগের একমুখী ব্রডকাস্ট পদ্ধতির সম্পূরক রূপটি হচ্ছে দ্বিমুখী যোগাযোগ পদ্ধতি। যখন একাধিক ব্যক্তি একই সময়ে একে অপরের সাথে যোগাযোগ করতে পারে তখন তাকে দ্বিমুখী যোগাযোগ পদ্ধতি বলে। যেমন— মোবাইল ফোন, টেলিফোন। টেলিফোনে দুজন একই সাথে পরস্পরের সাথে যোগাযোগ করতে পারে। মাত্র একযুগ আগেও বাংলাদেশে শুধু সচ্ছল ও ক্ষমতাবান মানুষদের কাছে টেলিফোন ছিল। এখন এদেশে যেকোনো মানুষ মোইল টেলিফোনে একে অন্যের সাথে যোগাযোগ করতে পারে এবং এটি সম্ভব হয়েছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অভূতপূর্ব উন্নয়নের জন্য।

প্রশ্ন-৪। ব্যবসা-বাণিজ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রভাব উল্লেখ করো।

অথবা, ব্যবসায়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির গুরুত্ব বর্ণনা কর।

উত্তর : জীবনের অন্য সকল ক্ষেত্রের মতো তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বা আইসিটির প্রয়োগ ব্যবসা-বাণিজ্যে আমূল পরিবর্তনের সূচনা করেছে। যেকোনো ব্যবসার মূল উদ্দেশ্য থাকে কম সময়ে এবং কম খরচে পণ্য বা সেবা উৎপাদন করা এবং দ্রুততম সময়ে তা ভোক্তার কাছে পৌঁছে দেওয়া। পণ্যের জন্য কাঁচামাল সংগ্রহ থেকে শুরু করে উৎপাদনের কাজে নিয়োজিত কর্মীদের ব্যবস্থাপনা, তাদের দক্ষতার মান উন্নয়ন, উৎপাদন ব্যবস্থাপনা, বিপণন এবং সবশেষে পণ্য বা সেবার বিনিময় মূল্য প্রাপ্তির ক্ষেত্রে আইসিটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যারের সমন্বিত এবং উদ্ভাবনী প্রয়োগের মাধ্যমে ব্যবসায়ীগণ তাদের ব্যবসার উন্নয়নের পাশাপাশি মুনাফাও বাড়াতে পারে। তাই বলা যায় ব্যবসা-বাণিজ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রভাব সময়োপযোগী ও গুরুত্বপূর্ণ।

প্রশ্ন-৫। প্রযুক্তিতে জনগণের সংযুক্তি বাড়লে তাদের উৎপাদনশীলতা বাড়ে— ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে প্রযুক্তির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে একজন কর্মী অনেক বেশি দক্ষ হয়ে ওঠে ফলে অনেক প্রতিষ্ঠানই কম কর্মী দিয়ে বেশি কাজ করিয়ে নিতে পারে। বিপদজ্জনক কাজে রোবট ব্যবহার করার ফলে অনেক কম সময়ে বেশি কাজ নিরাপদে করা যায়, কম্পিউটারের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে মনিটরিং করা সম্ভব হওয়াতে কর্মীদের উপস্থিতির সময়কাল, ওভার ডিউটি ইত্যাদি নিখুতভাবে হিসাব করা সম্ভব হচ্ছে। ফলে কাজে ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে। যা যেকোনো প্রতিষ্ঠানের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ভবিষ্যতে তথ্যপ্রযুক্তিতে জনগণের সম্পৃক্ততা যত বৃদ্ধি পাবে উৎপাদনশীলতাও দিন দিন তত বাড়বে।

প্রশ্ন-৬। কর্মসৃজন ও কর্ম প্রত্যাশীদের কাজের সুযোগ প্রাপ্তিতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কী ভূমিকা পালন করে বলে তুমি মনে করো?

উত্তর : বর্তমানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সমৃদ্ধ বিশ্বে কর্মসৃজন ও কর্ম প্রাপ্তি এক নতুন মাত্রা পেয়েছে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির বিপুল বিকাশের ফলে সমাজের বিভিন্ন স্তরে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তনের গুরুত্বপূর্ণ একটি হলো নতুন কাজের সুযোগ সৃষ্টি। তথ্য প্রযুস্তির বিকাশের ফলে কিছু কিছু সনাতনী কাজ বিলুপ্ত হয়েছে বা বেশ কিছু কাজের ধারা পরিবর্তিত হয়েছে বটে, তবে অসংখ্য নতুন কাজের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি এক হাজার ইন্টারনেট সংযোগের ফলে নতুন ৮০টি কাজের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। মানুষ এখন ঘরে বসেও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুস্তির কল্যাণে আয় করতে পারছে। সুতরাং বলা যায়, কর্মসূজন ও কর্ম প্রাপ্তিতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুস্তির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ।

প্রশ্ন-৭। “সংযুক্তিই উৎপাদনশীলতা” উক্টিটি বিশ্লেষণ করো।

উত্তর : “Connectivity is Productivity”- কথাটির অর্থ হলো- সংযুক্তিই উৎপাদনশীলতা । তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রয়োগে উৎপাদনশীলতার বৃদ্ধিকে বাঙালি শিক্ষাবিদ ও বর্তমান আমেরিকার ম্যাসাসুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি – এর অধ্যাপক ড, ইকবাল কাদির সংজ্ঞায়িত করেছেন “Connectivity is Productivity” অর্থাৎ “সংযুক্তি উৎপাদনশীলতা” কথাটি বলে। কথাটি দ্বারা বোঝানো হয়েছে প্রযুক্তির সাথে উৎপাদনশীলতার সম্পর্কের কথা। প্রযুক্তির সাথে জনগণের সংযুক্তি বাড়লে তাদের উৎপাদনশীলতা বাড়ে। ফলে তৈরি হয় নতুন নতুন কর্মদ্যোগ। সৃষ্টি হয় নতুন কাজের সুযোগ । এর ফলে কর্মসূজন ও কর্মপ্রাপ্তির এক নতুন জগৎ সৃষ্টি হয়। সামগ্রিকভাবে দেশের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পায়।

প্রশ্ন-৮। বাংলাদেশে মোবাইল ফোনের বিস্তার কীভাবে নতুন কর্ম সৃজনের দিগন্ত উন্মোচন করেছে? সংক্ষেপে লেখ।

উত্তর : তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রয়োগের ফলে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রযুক্তিতে জনগণের সংযুক্তি বাড়ে। ফলে সৃষ্টি করে নতুন নতুন -কর্মসংস্থান। তদুপরি বাংলাদেশে মোবাইল ফোনের বিস্তার-এ নতুন কর্ম সৃজনের দিগন্ত উল্মোচন হয়েছে। নিচে তা সংক্ষেপে লেখা হলো:

মোবাইল কোম্পানিতে কাজের সুযোগ: দেশের প্রায় ৯ টি মোবাইল অপারেটর কোম্পানিতে বিপুলসংখ্যক কমীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। মোবাইল কোম্পানিই বর্তমান দেশের প্রযুক্তি বিষয়ক কোম্পানি।

মোবাইল ফোনসেট বিক্রয়, বিপনন ও রক্ষণাবেক্ষণ: দেশের প্রায় ১২ কোটি মোবাইল গ্রাহককে মোবাইল ফোন সেট সরবরাহ, সেগুলোর বিপনন, ইত্যাদি বিভিন্ন মানের সেবার জন্য বিপুল পরিমাণ কর্মীর চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে।

বিভিন্ন মোবাইল সেবা প্রদান: বর্তমানে মোবাইলে নতুন নতুন সুযোগ সুবিধা যুক্ত হওয়ায় সৃষ্টি হচ্ছে বিভিন্ন মোবাইল সেবাকেন্দ্র। ফলে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাচ্ছে।

নতুন খাতের সৃষ্টি: মোবাইলে প্রযুক্তি বিস্তারের ফলে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মতো অসংখ্য নতুন খাতের সৃষ্টি হয়েছে। যার মাধ্যমে অনেক নতুন কালির কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে।

প্রশ্ন-৯। আউটসোর্সিং বলতে কী বোঝ? সংক্ষেপে বর্ণনা দাও।

উত্তর : ইন্টারনেটের বিকাশের ফলে বর্তমানে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর জন্য ঘরে বসে অন্য দেশের কাজ করে দেওয়ায় সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রক্ষণাবেক্ষণ, মাসিক বেতন ভাতার বিল প্রস্তুতকরণ, ওয়েবসাইটে তথ্য যোগ করা, সফটওয়্যার তৈরি ইত্যাদি অন্য দেশের কর্মীর মাধ্যমে সম্পন্ন করে থাকে। এটিকে বলা হয় আউটসোর্সিং। ইন্টারনেট সংযোগ থাকলে যে কেউ এ ধরনের কাজের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে। এক্ষেত্রে কাজের দক্ষতার পাশাপাশি ভাষা দক্ষতাও সমানভাবে প্রয়োজন হয়। এই সকল কাজ ইন্টারনেটে অনেক সাইটে পাওয়া যায়। এর মধ্যে জনপ্রিয় কয়েকটি হলো ওডেস্ক, ফিল্যান্সার এবং ইল্যান্স ইত্যাদি। বর্তমানে বাংলাদেশের প্রায় তিরিশ সহস্রাধিক মুক্ত পেশাজীবী এই সকল সাইটের মাধ্যমে আন্তকর্মসংস্থানে সক্ষম হয়েছে।

প্রশ্ন-১০। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে একজন কমী তার কর্মে অনেক দক্ষ হয়ে ওঠে – উক্তিটি বুঝিয়ে লিখ ।

উত্তর : তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে একজন কর্মী অনেক বেশি দক্ষ হয়ে ওঠে। প্রযুক্তির কারণে অনেক কাজের ধরণ প্রতিনিয়ত বদলে যাচ্ছে। ফলে একজন কর্মীর দক্ষ হয়ে ওঠার পেছনে নিচের বিষয়গুলো ভূমিকা রাখে:

তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে পরিবর্তিত পরিস্থীতিতে কর্মক্ষেত্রে টিকে থাকার জন্য নিজেকে ক্রমাগত দক্ষ করে তুলতে হয়। ফলে দক্ষতা উন্নয়নের কর্মসূচিগুলোতে প্রতিনিয়ত পরিবর্তন সাধিত হচ্ছে।

কম্পিউটারের সাহায্যে অনেক ধরনের কাজ ঘরে বসেই করা সম্ভব হচ্ছে। আবার অনেক ক্ষেত্রে পূর্বে বিশেষ দক্ষতা না থাকলে যে কাজ সম্পন্ন করা যেত না, এরূপ অনেক কাজ কম্পিউটারের সহায়তায় সহজে সম্পন্ন করা যাচ্ছে। যেমন ফটোগ্রাফি বা ভিডিও এডিটিং।

অনেকে ঘরে বসে কাজ করছে। ফলে অনেক প্রতিষ্ঠানই এখন ভার্চুয়াল প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। এ সকল প্রতিষ্ঠানে সহায়ক কর্মীর সংখ্যা যেমন কমেছে, তেমনি তাদের কাজের ধরনও পাল্টে গেছে।

স্বয়ংক্রিয়ভাবে মনিটরিং করা সম্ভব হওয়াতে কর্মীদের কাজে ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতাও ক্রমান্বয়ে হাস পাচ্ছে।

প্রশ্ন-১১। গবেষণাগার ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ভূমিকা ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : তথ্য প্রযুক্তির কারণে গবেষণার জগতে শুধু যে একটা বিশাল উন্নতি হয়েছে তা নয় বলা যেতে পারে এখানে সম্পূর্ণ নতুন একটা মাত্রা যোগ হয়েছে। মানুষ এখন সাহিত্য, শিল্প বা সমাজবিজ্ঞান অথবা গণিত, প্রযুক্তি আর বিজ্ঞান, যা নিয়েই গবেষণা করুক না কেন তারা কম্পিউটার এবং তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্য ছাড়া সেই গবেষণার কথা চিন্তাও করতে পারে না।

বর্তমানে সকল বৈজ্ঞানিক কর্মকাণ্ড কম্পিউটারের ওপর নির্ভরশীল। পদার্থের অণু-পরমাণুর গঠন প্রকৃতি, রাসায়নিক দ্রব্যের বিচার বিশ্লেষণে, জটিল গাণিতিক হিসাব-নিকাশে, প্রাণিকোষের গঠন প্রকৃতি বিশ্লেষণে, উষধের মান নিয়ন্ত্রণে, সূর্যের আলোকমণ্ডল ও বর্ণমণ্ডলের মৌলিক পদার্থের অবস্থান নির্ণয়ে কম্পিউটার একটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তি। মহাকাশযান ডিজাইন, পাঠানোর পরিকল্পনা ও বাস্তাবয়ন কম্পিউটার দ্বারা দ্রুত সমাধান করা হয়।

প্রশ্ন-১২। চিকিৎসা ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অবদান ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : চিকিৎসা ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে কম্পিউটারের দ্বারা রোগ নির্ণয় ও ওষুধের মান নিয়ন্ত্রণের কাজ করা হয়। ফলে ভুল হবার সন্তাবনা কম থাকে। রোগ নির্ণয়ের জন্য বিভিন্ন ধরনের সফটওয়্যার পাওয়া যায়। রোগীর সব লক্ষণ ও রক্ত, মৃত্র ইত্যাদি পরীক্ষার ফল কম্পিউটারে ইনপুট দিলে কম্পিউটার উভয়ের তুলনা করে সম্ভাব্য রোগ বলে দেয়। এছাড়া কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত স্ক্যান্যার মস্তিষ্ক ও শরীরের অন্যান্য গুরুতপূর্ণ ইউনিট সূক্ষ্মভাবে বিচার করে কোথাও কোনো অস্বাভাবিকতা আছে কিনা বা থাকলে কী ধরনের অস্বাভাবিকতা আছে তা বলে দিতে পারে।

চিকিৎসা ছাড়াও হাসপাতাল ও ক্লিনিকের প্রশাসনিক দক্ষতা নিশ্চিত করার জন্য কম্পিউটার গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বর্তমানে ক্যান্সার রোগের চিকিৎসা ও টিউমারের গঠন প্রকৃতি সম্পর্কে কম্পিউটারের সাহায্যে গবেষণা কাজ করা হয়। এছাড়া চোখের ক্ষমতা নির্ণয়, এক্স-রে ইত্যাদি অনেক পরীক্ষায় কাজ কম্পিউটর নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রের সাহায্যে করা হয়। সম্প্রতি ভিডিও কনফারেন্সিং, ইন্টারনেট ইত্যাদি প্রযুক্তির সাহায্যে বহু দূরবর্তী স্থান থেকেও চিকিৎসা সুযোগ প্রদান ও গ্রহণ করা শুরু হয়েছে।

প্রশ্ন-১৩। কিভাবে আইসিটি বিশ্বকে পরিবর্তন করতে পারে? বর্ণনা করো।

উত্তর : আইসিটি আজ বিশ্ব পরিচালনায় মূল চাবিকাঠি। সমস্ত ক্ষেত্রে আজ আইসিটির প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। যেকোনো জনপদকে উন্নত হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে আইসিটি ছাড়া উপায় নেই। কারণ যেকোনো উন্নয়নমূলক কাজ আজ আইসিটি নির্ভর হয়ে গেছে।

শুধু তাই নয়, মানুষের দৈনন্দিন জীবনের বেশিরভাগ কাজ আজ আইসিটি নির্ভর। কর্মসূৃজন-কর্মপ্রাপ্তি, যোগাযোগ, ব্যবসা, সরকারি কাজ, চিকিৎসা, গবেষণা সব কিছু আজ আইসিটি দ্বারা প্রভাবিত। মানুষ আইসিটিকে ভিত্তি করে জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করছে। পৃথিবীকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তাই বলা যায়, আইসিটি বিশ্বকে খুব সহজেই পরিবর্তন করতে পারে।

Rate this post
Mithu Khan

I am a blogger and educator with a passion for sharing knowledge and insights with others. I am currently studying for my honors degree in mathematics at Govt. Edward College, Pabna.

Leave a Comment

x