রক্ত কণিকা কি ও কত প্রকার | লোহিত রক্ত কণিকা, শ্বেত রক্ত কণিকা, ও অণুচক্রিকা কি এবং এদের কাজ

রক্তকণিকা কি রক্তরসে ভাসমান অবস্থায় যে কোষগুলো বিদ্যমান থাকে, তাদেরকে রক্ত কণিকা বলে। রক্তে তিন ধরনের কণিকা থাকে, যথা – লোহিত রক্ত কণিকা (Erythrocyte), শ্বেত রক্ত কণিকা (Leucocyte) এবং অণুচক্রিকা (Thrombocyte)। (i) লোহিত রক্ত কণিকা (R.B.C) কি লোহিত রক্ত কণিকা দ্বিঅবতল এবং চাকতির মত। স্তন্যপায়ীর রক্তের লোহিত কণিকা দ্বিঅবতল গোলাকার এবং নিউক্লিয়াসবিহীন। উটের লোহিত কণিকা…

ডিম্বাণু কি | ডিম্বাণুর গঠন | ডিম্বাণুর প্রকারভেদ

ডিম্বাণু কি যৌন জননের সাথে জড়িত স্ত্রী প্রাণীকুল, যে স্ত্রী জনন কোষ সৃষ্টি করে তাকে ডিম্বাণু বলে। ডিম্বাণু মূলত একটি হ্যাপ্লয়েড কোষ। ডিম্বাণুর প্লাজমা পর্দা দিয়ে ঘেরা থাকে ও এর অভ্যন্তরে নিউক্লিয়াস ও সাইটোপ্লাজম থাকে।  ডিম প্রসবকারী বিভিন্ন মেরুদণ্ডী প্রাণীর ডিমের বহিরাবরণগুলি পরিস্ফুটনরত ভ্রূণকে তাপমাত্রা, শুষ্কতা, পরিবর্তিত pH, বিকিরণ, দূষণ, যান্ত্রিক আঘাত ইত্যাদি থেকে রক্ষা করে। এরা শুক্রাণু দ্বারা ডিম্বাণুর নিষেককে…

প্রজনন কি এবং কাকে বলে | প্রজনন কত প্রকার ও কি কি

প্রজনন কি এবং কাকে বলে প্রজনন একটি শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া। যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কোন জীব নিজেদের মত অপত্য সৃষ্টি করতে সক্ষম, তাকে প্রজনন বলে। প্রাণিজগতের বিভিন্ন প্রাণী বিভিন্ন পদ্ধতিতে প্ৰজনন সম্পন্ন করে। প্রজনন কত প্রকার ও কি কি প্রাণী প্রজনন প্রধানত দু’প্রকার। যথা- ১। অযৌন প্রজনন ও ২। যৌন প্রজনন। ১। অযৌন প্রজনন (Asexual reproduction) : গ্যামিট সৃষ্টি ছাড়া অর্থাৎ প্রত্যক্ষভাবে যেমন মুকুলোদ্দাম…

বৃক্কের সাধারণ গঠন চিত্রসহ বর্ণনা কর

বৃক্ক মেরুদণ্ডী প্রাণীদের প্রধান রেচন অঙ্গ। মানুষের উদর গহ্বরের পশ্চাতে মেরুদণ্ডের উভয় পাশে একটি করে মোট দুটি বৃক্ক থাকে। বৃক্ক ও বৃক্কের গঠন বৃক্ক মেরুদণ্ডী প্রাণীদের প্রধান রেচন অঙ্গ। মানুষের উদর গহ্বরের পশ্চাতে মেরুদণ্ডের উভয় পাশে একটি করে মোট দুটি বৃক্ক থাকে। বাম বৃক্কটি ডান বৃক্ক থেকে কিছু উপরে অবস্থান করে। পূর্ণাঙ্গ মানুষের বৃক্ক দৈর্ঘ্যে প্রায় ১১…

রেচন কি | রেচন তন্ত্র কি | মূত্র কি

রেচন কি বিপাকীয় কাজের ফলে উৎপন্ন অপ্রয়োজনীয়, অতিরিক্ত ও দূষিত পদার্থ যে শারীরবৃত্তীয় পদ্ধতিতে দেহ থেকে দ্রুত ও নিয়মিত হারে অপসারিত হয়, তাকে রেচন বলে। রেচন তন্ত্র কি প্রাণীদেহের রেচনে সাহায্যকারী অঙ্গগুলো মিলিত হয়ে যে তন্ত্র গঠন করে তাকে রেচন তন্ত্র বলে। মূত্র কি নাইট্রোজেন ঘটিত রেচন পদার্থের জলীয় দ্রবণকে মূত্র বলে। আমিষ জাতীয় খাদ্য…

কার্ডিয়াক চক্র কি | অলিন্দ ও নিলয়ের সিস্টোল-ডায়াস্টোল বর্ণনা কর

কার্ডিয়াক চক্র কি (Cardiac Cycle) হৃদপিন্ড দেহে রক্ত সঞ্চালনে পাম্প যন্ত্রের ন্যায় কাজ করে। এর সংকোচন-শ্লথনে রক্ত দেহে সঞ্চালিত হয়। হৃদপিন্ডের একবার সংকোচনকে সিস্টোল এবং একবার শ্লথনকে ডায়াস্টোল বলে। একবার সিস্টোল ও একবার ডায়াস্টোল সংঘটনকে একত্রে হৃদস্পন্দন বা heart beat বলে। তবে, হৃদপিন্ডের অলিন্দ ও নিলয়ের সংকোচন শ্লথন একইসাথে না ঘটে পর্যায়ক্রমে ঘটে। প্রতিবার হৃদস্পন্দনে হৃদপিন্ডে সংঘটিত ধারাবাহিক পরিবর্তনের…

রক্তের গ্রুপ এবং A-B-O রক্ত গ্রুপ কি

রক্তের গ্রুপ কি মানুষের রক্ত কণিকার প্লাজমা মেমব্রেনে বিভিন্ন এন্টিজেনের উপস্থিতির ভিত্তিতে রক্তের শ্রেণীবিন্যাসকে রক্ত গ্রুপ বলে। রক্ত কণিকায় এন্টিজেনের উপস্থিতি ও অনুপস্থিতির উপর নির্ভর করে বিজ্ঞানী ল্যান্ড স্টেইনার মানুষের রক্তকে ABO রক্ত গ্রুপে বিভক্ত করেন। মানব রক্তের লোহিত কণিকার ঝিল্লিতে অবস্থিত মিউকোপলিস্যাকারাইড জাতীয় পদার্থ যা এন্টিবডি উৎপাদনে উদ্দীপনা যোগায়, তাকে এন্টিজেন বা অ্যাগুটিনোজেন বলে। এন্টিবডি হল বহিরাগত পদার্থের…

রক্ত কি | রক্তের গঠন, কাজ ও উপাদান কি কি

রক্ত কি রক্ত এক প্রকার তরল যোজক কলা। রক্তের রং লাল, স্বাদে লবণাক্ত, অস্বচ্ছ এবং ক্ষারীয়। একজন পূর্ণ বয়স্ক পুরুষ মানুষের দেহে ৫-৬ লিটার ও স্ত্রীদেহে ৪-৫ লিটার রক্ত থাকে যা দেহ ওজনের ৭-৯%। রক্তের উপাদান রক্ত মূলত রক্তরস বা প্লাজমা এবং রক্ত কণিকা নিয়ে গঠিত। রক্তরস বা Plasma রক্তের তরল অংশকে রক্তরস বলে। রক্তের শতকরা প্রায় ৫৫…

সংবহনতন্ত্র কি | মুক্ত ও বদ্ধ রক্ত সংবহন তন্ত্র কি | একবর্তনী ও দ্বিবর্তনী রক্তসংবহন

সংবহনতন্ত্র কি এবং কাকে বলে পরিপাকনালী থেকে শোষিত খাদ্যসার, অক্সিজেন, এনজাইম, হরমোন ইত্যাদি প্রয়োজনীয় উপাদান বহুকোষী প্রাণীর দেহের সকল কোষে পৌঁছে দেয়া এবং উৎপন্ন বিপাকজাত বর্জ্য যেমন- CO2, ইউরিয়া প্রভৃতি দেহ থেকে অপসারণের জন্য সমগ্রদেহে রক্ত, লসিকা অথবা অন্য কোন দেহতরলের চক্রাকার সঞ্চালনকে সংবহন বলে। সংবহনের জন্য বিভিন্ন অঙ্গ সমন্বয়ে যে তন্ত্র গঠিত হয় তাকে সংবহন তন্ত্র বলে। প্রাণীতে দুই ধরনের সংবহন তন্ত্র বিদ্যমান। যথা- ১. রক্ত সংবহন তন্ত্র বা Blood vascular system. ২. লিম্ফেটিকতন্ত্র বা Lymphatic system. রক্ত সংবহন তন্ত্র প্রধানত দুই ধরনের। যেমন- ১. মুক্ত রক্ত সংবহন তন্ত্র (Open blood circulatory system) যে সংবহন তন্ত্রে রক্তের সঞ্চালন কেবল রক্তনালীর মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে দেহের বিভিন্ন ফাঁকা স্থান ও ল্যাকুনিসহ কোষ কলার মধ্যবর্তী স্থান দিয়ে পরিবাহিত হয় তাকে মুক্ত রক্ত সংবহন তন্ত্র বলে। অধিকাংশ আর্থ্রোপোডা ও কিছু সেফালোপোড মোলাস্কাতে মুক্ত সংবহন তন্ত্র দেখা যায়। ২. বদ্ধ সংবহন তন্ত্র (Closed blood circulatory system) যে সংবহন তন্ত্রে রক্ত সর্বদা হৃদপিন্ড ও নালিকা পথে বাহিত হয় এবং কখনই নালিকার বাইরে আসে না তাকে বদ্ধ রক্ত সংবহনতন্ত্র বলে। ইকাইনোডার্মস, অধিকাংশ সেফালোপোড মোলাস্কা, অ্যানিলিডা এবং মানুষসহ সকল মেরুদণ্ডী প্রাণীতে বদ্ধ রক্ত সংবহনতন্ত্র দেখা যায়। এসকল প্রাণীতে হৃদপিন্ড থেকে উৎপন্ন বৃহৎ ধমনীগুলো বিভক্ত হয়ে আর্টেরিওল এবং আর্টেরিওলগুলো বিভাজিত হয়ে ক্যাপিলারী সৃষ্টি করে যারা দেহকোষের অন্তর্বর্তী স্থানে অবস্থান করে। ক্যাপিলারীগুলো পুনঃমিলিত হয়ে ভেনিউল এবং ভেনিউল মিলিত হয়ে শিরা গঠন করে যা হৃদপিন্ডে ফিরে আসে। একবর্তনী রক্তসংবহন সমগ্র দেহ পরিভ্রমণ করতে রক্ত যদি একবার হৃদপিন্ড অতিক্রম করে তখন একে একবর্তনী রক্ত সংবহন বলে। মাছের মধ্যে একবর্তনী রক্ত সংবহন প্রক্রিয়া দেখা যায়। মাছের হৃদপিন্ড থেকে CO2 যুক্ত রক্ত প্রথমে ফুলকায় যায়। ফুলকায় CO2 ত্যাগের পর রক্ত O2 সমৃদ্ধ হয়। এই রক্ত সমগ্রদেহ পরিভ্রমণ পূর্বক কোষে কোষে O2 সরবরাহ করে এবং কোষে উৎপন্ন CO2 গ্রহণপূর্বক পুনরায় হৃদপিন্ডে ফিরে আসে। দ্বিবর্তনী রক্ত সংবহন সমগ্র দেহ পরিভ্রমণ করতে রক্ত যদি দু’বার হৃদপিন্ড অতিক্রম করে তখন তাকে দ্বিবর্তনী রক্ত সংবহন বলে। যেমন পাখি ও স্তন্যপায়ী প্রাণীদের রক্ত সংবহন। CO2 সমৃদ্ধ রক্ত প্রথমে হৃদপিন্ডের ডান নিলয় থেকে ফুসফুসে যায়। ফুসফুসে CO2 ত্যাগ পূর্বক রক্ত O2 সমৃদ্ধ হয়ে হৃদপিণ্ডের বাম অলিন্দে ফিরে আসে। হৃদপিন্ডের ডান নিলয় থেকে ফুসফুস হয়ে বাম অলিন্দে ফিরে আসা রক্তের এই সংবহনকে ফুসফুসীয় সংবহন বলে। বাম অলিন্দ থেকে বাম নিলয়ে আগত O2 সমৃদ্ধ রক্ত সমগ্র দেহে সঞ্চালিত হয় এবং কোষে কোষে O2 সরবরাহ করে। কোষে কোষে উৎপন্ন CO2 গ্রহণ করার পর রক্ত পুনরায় ডান অলিন্দে ফিরে আসে। ডান অলিন্দের CO2 সমৃদ্ধ রক্ত এরপর ডান নিলয়ে প্রবেশ করে। অতঃপর পূর্বের ন্যায় চক্রাকারে আবর্তিত হয়।

অগ্ন্যাশয় কি এবং অগ্ন্যাশয় এর কাজ কি কি

অগ্ন্যাশয় কি অগ্ন্যাশয় একইসাথে অন্তঃক্ষরা ও বহিঃক্ষরা গ্রন্থি হিসেবে কাজ করে। যকৃত ও ডিওডেনামের মধ্যবর্তীস্থানে এটা অবস্থান করে। অগ্ন্যাশয় উত্থিত অগ্ন্যাশয়নালী পিত্তনালীর সাথে যুক্ত হয়ে ডিওডেনামে থাকে। শিথিল যোজক কলার ঝিল্লী দ্বারা সমগ্র অগ্ন্যাশয় গ্রন্থিটি আবৃত থাকে। এই ঝিল্লী গ্রন্থির বিভিন্ন অংশে প্রবিষ্ট হয়ে গ্রন্থিটিকে কতকগুলো লোবিউলে বিভক্ত করে। প্রতিটি লোবিউল অসংখ্য গ্রন্থিথলি এবং কতিপয় বিক্ষিপ্ত দ্বীপগ্রন্থির সমন্বয়ে গঠিত। গ্রন্থিথলিসমূহ…