রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলোতে যে নিয়োগ চলছে তাতে আবেদন করতে গেলে প্রথমেই যে বিষয়টি গুরুত্ব পায় তা হ’ল চয়েজ লিস্ট পূরণ। এ চয়েজ লিস্ট অনেকেই চিন্তাভাবনা না করে পূরণ করে দিচ্ছেন। তবে পরবর্তীতে চয়েজ লিস্ট পরিবর্তন বা চাকুরীতে যোগদানের পর ব্যাংক পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় সতর্কতার সাথে এটি পূরণ করা উচিৎ।
আমার কাছে সবচেয়ে বেশি বোকামী মনে হয়েছে যেটি, তা হ’ল পদসংখ্যা অনুযায়ী চয়েজ লিস্ট পূরণ করা। কেউ কেউ মনে করেন, যে ব্যাংকে বেশি লোক নিবে তাকে প্রথম চয়েজে রাখলে চাকরি পেতে সুবিধা হবে। আপনাদের সুবিধার্থে, নিচে চয়েজ লিস্ট সম্পর্কিত কিছু বাস্তবতা তুলে ধরা হল।
বাস্তবতা ১ঃ মেধা তালিকায় আপনার অবস্থান নীচের দিকে হলে আপনি যত নিখুঁত ভাবে চয়েজ দেন না কেন, তা কোন কাজে আসবে না।
http://i.imgur.com/3kobok3.jpg

বাস্তবতা ২ঃ যে ব্যাংকে পদ বেশী তা চয়েজের প্রথমে রাখলে আপনার চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে না।

উদাহরণের সাহায্যে বিষয়টি ব্যাখ্যা করা হ’লঃ
সোনালী, জনতা, বিডিবিএল ও বিকেবিতে অফিসার ক্যাশ নিচ্ছে যথাক্রমে ১২০০, ৬০০, ২০, ৩০০ জন(হিসাবের সুবিধার জন্য পূর্ণ সংখ্যায়)। ধরে নিচ্ছি চারটি ব্যাংকের সুযোগসুবিধা বিবেচনায় আপনার প্রথম পছন্দ বিকেবি। কিন্তু শুধু পদের সংখ্যা বেশি থাকায় আপনি প্রথম চয়েজ দিলেন সোনালী।
মেধাতালিকা প্রকাশের পর কি হতে পারে চলেন দেখিঃ [আলোচনার সুবিধার জন্য কোটা বিবেচনা নেয়া হয়নি]
ঘটনা১ঃ আপনার মেধাক্রম ২০০তম, ৫০০তম বা ১১০০তম। আপনাকে সোনালীতে যোগদান করতে হবে, যদিও আপনার ইচ্ছা ছিল বিকেবিতে যাওয়ার।
ঘটনা২ঃ আপনার মেধাক্রম ১৩০০তম, ১৬০০তম বা ১৮০০তম। মেধাক্রমে আপনার চেয়ে যারা এগিয়ে আছে তাদের মধ্যে কমপক্ষে ১২০০ জন যদি সোনালী প্রথম চয়েজ দিয়ে থাকে তবে আপনার চাকরি হবে জনতায়। আর যদি ১২০০জনের কম সোনালীকে প্রথম চয়েজ দেয় তবে আপনি পাবেন সোনালী। কোন অবস্থাতেই আপনি বিকেবি পাবেন না।
ঘটনা৩ঃ আপনার মেধাক্রম ২০০০তম বা ২১০০তম। আপনার চেয়ে যারা এগিয়ে আছে তাদের মধ্যে কমপক্ষে ৩০০ জন যদি বিকেবি প্রথম চয়েজ দিয়ে থাকে তবে আপনার চাকরি হবে সোনালী বা জনতায়।
দেখা যাচ্ছে, বিকেবিতে চাকরি করার ইচ্ছা থাকা সত্বেও চয়েজ লিস্টে ৩ নং অবস্থানে রাখার কারণে আপনার বিকেবি পাওয়ার সম্ভাবনা শূণ্য। তাই চয়েজ লিস্ট পূরণে পদ সংখ্যাকে বিবেচনা না করে আর্থিক সুবিধা, প্রমোশন, কাজের পরিবেশ, প্রতিষ্ঠানের সুনাম, শাখার অবস্থান ইত্যাদিকে বিবেচনা করাই যুক্তিসঙ্গত।
লিখেছেনঃ আনোয়ার পারভেজ, পিও, জেবিএল।