কয়লা প্রধানত কত প্রকার ও কি কি? কয়লার ব্যবহার।

কয়লা প্রধানত কত প্রকার ও কি কি?
কয়লা প্রধানত চার প্রকার। যথা– ১. পিট কয়লা; ২. লিগনাইট কয়লা; ৩. বিটুমিনাস কয়লা; ৪. এনথ্রাসাইট কয়লা।

লিগানাইট কয়লা
31.4% আবদ্ধিত কার্বনবিশিষ্ট বাদামি বর্ণের কয়লাকে লিগানাইট কয়লা বলে। এতে 20 – 60% জলীয় বাষ্প থাকে। শুষ্ক অবস্থায় এর উপাদানগুলির ওজন অনুপাতঃ

কার্বন (C) = 67%

হাইড্রোজেন (H) = 5%

নাইট্রোজেন (N) = 1.5%

অক্সিজেন (O) = 26.5% এর তাপন মূল্য 6500 – 7100 কিলো ক্যালরি/কি.গ্রা.।

ব্যবহারঃ এটি গৃহস্থালীর জ্বালানী এবং শিল্প বয়লারে স্টীম উৎপাদনে ও প্রোডিউসার গ্যাসের শিল্পোৎপাদনে জ্বালানী হিসাবে ব্যবহৃত হয়।

বিটুমিনাস কয়লা

যে কয়লায় ৮৮.৪% কার্বন থাকে তাকে বিটুমিনাস কয়লা বলে। একে পোড়ালে প্রচুর পরিমাণে তাপ উৎপন্ন হয় বলে একে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। একে উত্তপ্ত করলে প্রচুর পরিমাণে গ্যাসও উৎপন্ন হয়।

বিটুমিনাস কয়লা আবার তিন ধরনের হয়। যথাঃ
১) সাব-বিটুমিনাস কয়লা
২) বিটুমিনাস কয়লা
৩) সেমি-বিটুমিনাস কয়লা।
১) সাব-বিটুমিনাস কয়লাঃ এত জলীয় বাষ্প ও উদ্বায়ী পদার্থের পরিমাণ খুব বেশি। শুষ্ক অবস্থায় উপাদানগুলির ওজন অনুপাত হলো
কার্বন (C) = 77%
হাইড্রোজেন (H) = 5%
নাইট্রোজেন (N) = 1.8%
অক্সিজেন (O) = 16.2% এর তাপন মূল্য = 7000 কিলো ক্যালরি / কি.গ্রা.।
এটি জ্বালানী হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
২) বিটুমিনাস কয়লাঃ এতে উদ্বায়ী পদার্থের পরিমাণ = 20 -45 %। শুষ্ক অবস্থায় উপাদানগুলির ওজন অনুপাত হলো –
কার্বন (C) = 83%
হাইড্রাজেন (H) =5%
নাইট্রোজেন (N) = 2%
অক্সিজেন (O) = 10%  এর তাপন মূল্য 8000 – 8500 কিলো ক্যালরি/কি.গ্রা.।
এটি ধাতু নিষ্কাশনে ব্যবহৃত কোক তৈরিতে, কোল গ্যাসের শিল্পোৎপাদনে এবং গৃহস্থালীতে জ্বালানী হিসাবে ব্যবহৃত হয়।
৩) সেমি-বিটুমিনাস কয়লাঃ এতে পদার্থের পরিমাণ কম।শুষ্ক অবস্থায় এর উপাদানগুলির ওজন অনুপাত হলো –
কার্বন (C) = 90%
হাইড্রাজেন (H) =4.5%
নাইট্রোজেন (N) = 1.5%
অক্সিজেন (O) = 4%  এর তাপন মূল্য 8500 – 8600 কিলো ক্যালরি/কি.গ্রা.।
অ্যানথ্রাসাইট কয়লা
80-85 ভাগ আবদ্ধিত কার্বনবিশিষ্ট উজ্জ্বল কালো বর্ণের কয়লাকে অ্যানথ্রাসাইট কয়লা বলে।

কয়লার ব্যবহার

বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি কয়লা ব্যবহৃত হয় ইটের ভাটায়, জ্বালানি হিসেবে শিল্প কারখানায় ও বাসাবাড়িতে সামান্য পরিমাণে কয়লা ব্যবহৃত হয়। তবে আমাদের দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়লা ব্যবহৃত না হলেও বিশ্বের প্রায় সব দেশেই বিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়লার ব্যবহার খুবই বেশি। এছাড়া হোটেল-রেস্তোরায় কাবাব জাতীয় খাবার তৈরিতে এবং কর্মকার ও স্বর্ণকারগণ বিভিন্ন সামগ্রী ও অলংকার তৈরির সময় কয়লা ব্যবহার করে থাকে।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *