অবস্থাভেদে পদার্থ কত প্রকার ও কি কি?
অবস্থাভেদে পদার্থ তিন প্রকার। যথা : ১. কঠিন, ২. তরল ও ৩, গ্যাসীয়। সাধারণ তাপমাত্রায় তামা, লোহা, কাঠ প্রভৃতি কঠিন পদার্থ; পারদ, পানি, দুধ প্রভৃতি তরল পদার্থ এবং অক্সিজেন, নাইট্রোজেন প্রভৃতি হলো গ্যাসীয় বা বায়বীয় পদার্থ। আবার অবস্থা বিশেষে নির্দিষ্ট কোনো পদার্থ কঠিন, তরল ও গ্যাসীয় অবস্থায় থাকতে পারে। যেমন : বরফ, পানি ও জলীয়বাষ্প হলো যথাক্রমে পানির কঠিন, তরল ও গ্যাসীয় অবস্থা।
কঠিন পদার্থ
সাধারণ অবস্থায় যেসব পদার্থের নির্দিষ্ট আকার এবং আয়তন থাকে, তাদের কঠিন পদার্থ বলে। যেমন: পাথর, লবণ, লোহা, বরফ ইত্যাদি।
কঠিন পদার্থের বৈশিষ্ট্যঃ
১. নির্দিষ্ট তাপ ও চাপে কঠিন পদার্থের আকার ও আয়তন সর্বদা নির্দিষ্ট থাকে।
২. তাপ প্রয়োগে সাধারণত কঠিন পদার্থ তরলে পরিণত হয়। যেমন : বরফকে উত্তপ্ত করলে তা গলে পানিতে পরিণত হয়।
- ব্যতিক্রম : ন্যাপথালিন, আয়োডিন, কর্পূর, নিশাদল প্রভৃতি কঠিন পদার্থ তাপের প্রভাবে সরাসরি বাষ্পে পরিণত হয় এবং শীতল করলে বাষ্প থেকে কঠিন অবস্থায় ফিরে আসে। একে ঊর্ধ্বপাতন বলে।
৩. প্রচন্ড চাপ প্রয়োগেও কঠিন পদার্থে আয়তনের বিশেষ কোনো পরিবর্তন হয় না।
৪. কঠিন পদার্থের দৃঢ়তা থাকে। বাইরে থেকে বল প্রয়োগ না করলে কঠিন পদার্থের আকার ও আয়তনের বিকৃতি ঘটানো যায় না।
তরল পদার্থ
সাধারণ অবস্থায় যেসব পদার্থের আয়তন নির্দিষ্ট কিন্তু আকার নির্দিষ্ট নয়, তাদের তরল পদার্থ বলে। যেমন: পানি, তেল, দুধ প্রভৃতি তরল পদার্থ।
তরল পদার্থের বৈশিষ্ট্যঃ
১. নির্দিষ্ট তাপমাত্রা ও চাপে তরল পদার্থের আয়তন নির্দিষ্ট থাকে কিন্তু নির্দিষ্ট আকার থাকে না। যখন যে পাত্রে রাখা হয়, তখন সেই পাত্রের আকার ধারণ করে।
২. তাপমাত্রা বাড়ালে তরলের আয়তন বাড়ে। তরলের তাপমাত্রা ক্রমশ বাড়াতে থাকলে একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় পৌঁছে তরল বাষ্পে পরিণত হতে শুরু করে।
৩. তরলের তাপমাত্রা ক্রমশ কমালে একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় এসে তরল কঠিনে পরিণত হয়।
৪. তরলের অণুসমূহ স্থান পরিবর্তন করতে পারে। এজন্য তরল পদার্থের কোনো নির্দিষ্ট আকার থাকে না।
গ্যাসীয় পদার্থ
সাধারণ অবস্থায় যে পদার্থের নির্দিষ্ট আকার বা আয়তন থাকে না, তাকে গ্যাসীয় পদার্থ বলে। যেমন : বায়ু, অক্সিজেন, হাইড্রোজেন, জলীয় বাষ্প প্রস্তুতি গ্যাসীয় পদার্থ।
গ্যাসীয় পদার্থের বৈশিষ্ট্যঃ
১. গ্যাসীয় পদার্থের কোনো নির্দিষ্ট আকার বা আয়তন নেই। গ্যাস বর্ণহীন বলে তা দেখা যায় না।
২. গ্যাসীয় পদার্থের পরিমাণ যত কমই হোক না কেন, তা যে পাত্রে রাখা হবে সে পাত্রের পুরো স্থান দখল করে থাকে।
৩. গ্যাসীয় পদার্থের অণুসমূহের মধ্যে দূরত্ব অনেক বেশি, তাই আকর্ষণ শক্তি অনেক কম, ফলে তারা প্রায় মুক্তভাবে চলাচল করে।
৪. একই তাপমাত্রা ও চাপে সমআয়তন সব গ্যাসে সমান সংখ্যক অণু থাকে।
শেষ কথা:
আশা করি আপনাদের এই আর্টিকেলটি পছন্দ হয়েছে। আমি সর্বদা চেষ্টা করি যেন আপনারা সঠিক তথ্যটি খুজে পান। যদি আপনাদের এই “অবস্থাভেদে পদার্থ কত প্রকার ও কি কি?” আর্টিকেল পছন্দ হয়ে থাকে, তাহলে অবশ্যই ৫ স্টার রেটিং দিবেন।