প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা, সৃজনশীল প্রশ্নপদ্ধতিতে উদ্দীপকের বিষয়বস্তু ছাড়াও সংশ্লিষ্ট অধ্যায়ের যেকোনো অংশ থেকে জ্ঞানমূলক এবং অনুধাবনমূলক প্রশ্ন আসতে পারে। তাই এ অধ্যায়ের সর্বাধিক কমনের উপযোগী কিছু গুরুত্বপূর্ণ জ্ঞানমূলক এবং অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর প্রদান করা হলো।
প্রশ্ন-১. মধ্যশিরা কী?
উত্তর : একটি সরলপত্রের প্রধান শিরাকে মধ্যশিরা বলা হয়।
প্রশ্ন-২. সরল পত্র কাকে বলে?
উত্তর : অখণ্ড পত্রফলক আছে এরূপ পত্রকে সরল পত্র বলে।
প্রশ্ন-৩. প্রধান মূল কাকে বলে?
উত্তর : স্থানিক মূল বড় হয়ে যে মূল সৃষ্টি করে তাকে প্রধান মূল বলে।
প্রশ্ন-৪. গুচ্ছমূল কাকে বলে?
উত্তর : ভ্রূণমূল নষ্ট হয়ে গুচ্ছাকারে যে মূল সৃষ্টি হয় তাকে গুচ্ছমূল বলে।
প্রশ্ন-৫. পত্রবৃন্ত কী? এর অবস্থান কোথায়?
উত্তর : পাতার দণ্ডাকার অংশটিকে পত্রবৃন্ত বা বোঁটা বলে। পত্রমূল ও পত্রফলকের মাঝামাঝি জায়গায় এর অবস্থান।
প্রশ্ন-৬. সপুষ্পক উদ্ভিদ কী? (What is a flowering plant?)
উত্তর : যেসব উদ্ভিদের ফুল, ফল ও বীজ হয় তারাই সপুষ্পক উদ্ভিদ।
প্রশ্ন-৭. পত্রকের বিন্যাস অনুযায়ী যৌগিক পত্র কয় ধরনের?
উত্তর : পত্রকের বিন্যাস অনুযায়ী যৌগিক পত্র দুই ধরনের।
প্রশ্ন-৮. পক্ষল যৌগিক পত্র কী?
উত্তর : যে যৌগিক পত্রে পত্রকগুলো র্যাকিসে বা অক্ষের দু’ধারে সাজানো থাকে তাই হলো পক্ষল যৌগিক পত্ৰ।
প্রশ্ন-৯. আদর্শ উদ্ভিদ বলা হয় কাকে?
উত্তর : আবৃতবীজী সপুষ্পক উদ্ভিকে আদর্শ উদ্ভিদ বলা হয়।
প্রশ্ন-১০. পাতা কী?
উত্তর : শাখা-প্রশাখার গায়ে যে চ্যাপ্টা সবুজ অঙ্গ সৃষ্টি হয় তা হলো পাতা বা পত্র।
প্রশ্ন-১১. মূলত্র কী?
উত্তর : মূলের শেষ প্রান্তে যে টুপির মতো অংশ থাকে তাই হচ্ছে মূলত্র।
প্রশ্ন-১২. স্থানিক মূলতন্ত্র কী?
উত্তর : দ্বিবীজপত্রী উদ্ভিদের প্রধান মূল ও এর শাখা-প্রশাখা নিয়ে যে মূলতন্ত্র গঠিত হয় তাকে স্থানিক মূলতন্ত্র বলে।
প্রশ্ন-১৩. অস্থানিক মূল কী?
উত্তর : যেসব মূল ভ্রূণমূল থেকে উৎপন্ন না হয়ে কান্ড ও পাতা থেকে উৎপন্ন হয় তা হলো অস্থানিক মূল।
প্রশ্ন-১৪. অগুচ্ছ মূল কী?
উত্তর : যেসব মূল একত্রে গাদাগাদি করে জন্মায় না, বরং পরস্পর থেকে আলাদা থাকে তাই হচ্ছে অগুচ্ছ মূল।
প্রশ্ন-১৫. পর্ব কী?
উত্তর : কান্ডের যে স্থান থেকে পাতা বের হয় তাকে পর্ব বা সন্ধি বলা হয়।
প্রশ্ন-১৬. পর্বমধ্য কী?
উত্তর : পাশাপাশি দুটি পর্বের মধ্যবর্তী অংশকে পর্বমধ্য বলা হয়।
প্রশ্ন-১৭. পত্রকক্ষ কী?
উত্তর : কাণ্ডের সাথে পাতা যে কোণ সৃষ্টি করে তাকে পত্রকক্ষ বলে।
প্রশ্ন-১৮. মুকুল কোথায় জন্মে?
উত্তর : পত্রকক্ষে মুকুল জন্মে।
প্রশ্ন-১৯. ট্রেইলার বা শয়ান কান্ড কী?
উত্তর : যেসব কান্ড মাটির উপরে ছড়িয়ে পড়ে কিন্তু পর্ব থেকে মূল বের হয় না এদেরকে ট্রেইলার বা শয়ান কান্ড বলা হয়।
প্রশ্ন-২০. ক্লাইম্বার বা আরোহিণী কী?
উত্তর : যেসব কান্ড কোনো অবলম্বনকে আঁকড়ে ধরে উপরের দিকে বৃদ্ধি লাভ করে তারা হচ্ছে ক্লাইম্বার বা আরোহিণী।
প্রশ্ন-২১. পত্রমূল কী?
উত্তর : পাতার যে অংশ কান্ড বা শাখা-প্রশাখার গায়ে যুক্ত থাকে তা হলো পত্রমূল।
প্রশ্ন-২২. বৃন্ত কী?
উত্তর : পাতার দন্ডাকার অংশটি হলো বৃন্ত বা বোঁটা।
প্রশ্ন-২৩. ফলকের গঠনভেদে পাতা কয় প্রকার?
উত্তর : ফলকের গঠনভেদে পাতা দুই প্রকার।
প্রশ্ন-২৪. র্যাকিস কী?
উত্তর : অণুফলকগুলো যে দন্ডে সাজানো থাকে তাকে র্যাকিস বলা হয়।
উৎপত্তি ও অবস্থান অনুযায়ী মূলকে কয়ভাগে ভাগ করা হয়েছে?
উত্তর : উৎপত্তি ও অবস্থান অনুযায়ী মূলকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
বিষমপৃষ্ঠ পাতা কাকে বলে?
উত্তর : যে সব গাছের পাতা চ্যাপ্টা, সবুজ এবং মাটির সাথে সমান্তরালভাবে অবস্থান করে, তাকে বিষমপৃষ্ঠ পাতা বলে।
কোন কোন উদ্ভিদের কাণ্ড খাদ্য হিসেবে গ্রহণযোগ্য?
উত্তর : বিরুৎ উদ্ভিদের কাণ্ড খাদ্য হিসেবে গ্রহণযোগ্য।
উপপত্র বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : কোনো কোনো উদ্ভিদের প্ত্রমূলের পাতা থেকে ছোট যে পত্রসদৃশ অংশ বের হয় তাদেরকে উপপত্র বলে। মটর গাছের প্ত্রমূলে এরূপ উপপত্র দেখা যায়।
আদর্শ পাতা কাকে বলে?
উত্তর : যে পাতায় পত্রমূল, বৃন্ত ও ফলক এ তিনটি অংশই থাকে তাকে আদর্শ পাতা বলে। যেমন- আম, জামগাছের পাতায় এই তিনটি অংশই থাকে। এজন্য আম ও জামগাছের পাতাকে আদর্শ পাতা বলা হয়।
ফুলের রঙ রঙিন হয় কেন?
উত্তরঃ উদ্ভিদকোষে তিন প্রকার প্লাস্টিড থাকে। এর মধ্যে ক্রোমোপ্লাস্ট সবুজ বর্ণ ব্যতীত অন্যান্য লাল, কমলা ও হলুদ বর্ণ ধারণ করে। উদ্ভিদের ফুলে ক্রোমোপ্লাস্টের উপস্থিতির কারণে ফুলের রং রঙিন হয়ে থাকে।
সপুষ্পক উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্য কী কী?
উত্তর : সপুষ্পক উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্য হলো—
- এদের দেহে মূল, কাণ্ড ও পাতা থাকে।
- এদের ফুল, ফল ও বীজ হয়।
মূল উদ্ভিদকে কীভাবে সাহায্য করে?
উত্তর : মূল উদ্ভিদকে মাটির সাথে শক্তভাবে আটকে রাখে ফলে ঝড় বাতাসে সহজে হেলে পড়ে না। মূল মাটি থেকে পানি ও খনিজ পদার্থ বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় টেনে নেয়। শোষণ ও অভিস্রবণ প্রক্রিয়ায় মূল এ কাজটি করে। এছাড়া মূলের মূলরোম অঞ্চলে অসংখ্য সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম রোম উৎপন্ন হয়, যার মাধ্যমে উদ্ভিদ পানি ও খনিজ পদার্থ সংগ্রহ করে।
শয়ান উদ্ভিদের ব্যবহারিক দিকসমূহ উল্লেখ কর।
উত্তর : যে সব উদ্ভিদের কাণ্ড মাটির উপরে ছড়িয়ে পড়ে কিন্তু পর্ব থেকে মূল বের হয় না তা শয়ান উদ্ভিদ। যথা- পুঁই, মটরশুঁটি। এদের ব্যবহারিক দিক সমূহ নিম্নরূপ-
পুঁই : পুঁই সবজি হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
মটরশুঁটি : সবজি ও ডাল জাতীয় খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
মরু উদ্ভিদের পাতা ছোট হয় কেন?
উত্তর : মরু অঞ্চলে মাটিতে পানির পরিমাণ কম থাকে। পাতার আকার বড় হলে পত্ররন্ধ্রের প্রস্বেদন প্রক্রিয়ায় বেশি পানি বের হয়ে যেত। ফলে উদ্ভিদ নেতিয়ে পড়ত। প্রস্বেদন প্রক্রিয়ায় পানির অপচয় কমানোর জন্যই মরু উদ্ভিদগুলোর পাতা ছোট হয়ে থাকে।
উদ্ভিদের জন্য পাতা ও কাণ্ডের গুরুত্ব কি?
উত্তর : উদ্ভিদের জন্য পাতা ও কাণ্ডের গুরুত্ব নিচে বিশ্লেষণ করা হলো–
পাতার গুরুত্ব :
- খাদ্য তৈরি করা পাতার প্রধান কাজ। সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় এরা খাদ্য প্রস্তুত করে।
- গ্যাসের আদান-প্রদান করা একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। শ্বাসকার্য পরিচালনার জন্য অক্সিজেন গ্রহণ করে এবং কার্বন ডাইঅক্সাইড বের করে দেয়। আবার খাদ্য তৈরির জন্য কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্রহণ করে ও অক্সিজেন বের করে দেয়।
- উদ্ভিদ প্রয়োজনের তুলনায় অধিক পানি গ্রহণ করে থাকে। এই অতিরিক্ত পানি পাতার সাহায্যে বাষ্পাকারে বের করে দেয়।
কাণ্ডের গুরুত্ব:
- কাণ্ড পাতা, ফুল ও ফল এবং শাখা-প্রশাখার ভার বহন করে।
- কাণ্ড শাখা-প্রশাখা ও পাতাকে আলোর দিকে মেলে ধরে যাতে সূর্যের আলো যথাযথভাবে পায়।
- কাণ্ডে শোষিত পানি, খনিজ লবণ শাখা-প্রশাখা পাতা, ফুল ও ফলে পরিবাহিত করে।
- পাতায় তৈরি খাদ্য কাণ্ডের মাধ্যমে দেহের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে।
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
সৃজনশীল প্রশ্ন ১ : প্রাপ্তি ও প্রমি ছুটিতে গ্রামের বাড়ি বেড়াতে যায়। একদিন তারা গ্রামে ঘুরতে বেড়িয়ে উদ্ভিদ কাণ্ডের বিভিন্ন ধরনের বিন্যাস বিশেষভাবে লক্ষ করল। এদের মধ্যে কোনোটির শাখা-প্রশাখার বিন্যাস মঠ আকৃতির, আবার কোনোটির গম্বুজ আকৃতির। এই কাণ্ডগুলোর আকৃতি ও কাজ সম্পর্কে জানতে তারা কৌতূহলী হয়ে উঠল।
ক. মূল কাকে বলে?
খ. আম গাছের পাতার ধরন ব্যাখ্যা করো।
গ. প্রাপ্তি ও প্রমির পর্যবেক্ষণকৃত উদ্ভিদ কাণ্ডের কাজ বর্ণনা করো।
ঘ. তুমি কীভাবে প্রাপ্তি ও প্রমির পর্যবেক্ষণকৃত কাণ্ডের শাখা প্রশাখার বিন্যাসকে আলাদা করবে? ব্যাখ্যা করো।
১ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. মূল হলো উদ্ভিদের পর্ব, পর্বমধ্য ও অগ্রমুকুলবিহীন অংশ, যা সাধারণত মাটির নিচে অবস্থান করে।
খ. আম গাছের পাতার ধরন সরল প্রকৃতির। এ কারণে আমের পাতাকে সরল পাতা বা সরলপত্র বলা হয়। সরল পত্রের বৃত্তের উপরে একটিমাত্র পত্র ফলক থাকে। একটি সরল পত্রের কিনারা অখণ্ডিত বা অসম্পূর্ণভাবে খণ্ডিত থাকে।
গ. প্রাপ্তি ও প্রমি মঠ আকৃতির (যেমন– দেবদারু) ও গম্বুজ আকৃতির (যেমন— বট) উদ্ভিদের কাণ্ড পর্যবেক্ষণ করেছিল। নিচে এদের কাজ বর্ণনা করা হলো—
মঠ আকৃতির কাণ্ডের কাজ:
i. উদ্ভিদকে মাটির উপর দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে সাহায্য করে।
ii. পাতা ও শাখা-প্রশাখাকে উপরের দিকে তুলে ধরে।
iii. শাখা-প্রশাখা, পাতা, ফুল ও ফলের ভার বহন করে।
গম্বুজ আকৃতির কাণ্ডের কাজ:
i. শাখা-প্রশাখাকে চারিদিকে প্রসারিত করতে সাহায্য করে।
ii. প্রকৃতিতে বেশি ছায়া ও অক্সিজেন প্রদান করে।
iii. শাখা-প্রশাখা, পাতা, ফুল ও ফলের ভার বহন করে।
ঘ. প্রাপ্তি ও প্রমি মঠ ও গম্বুজ আকৃতির কাণ্ড পর্যবেক্ষণ করেছিল।
এদের পর্যবেক্ষণকৃত কাণ্ডের শাখা প্রশাখার বিন্যাসকে নিম্নলিখিতভাবে আমি আলাদা করব—
i. মঠ আকৃতির কাণ্ডের উপরের শাখা-প্রশাখাগুলো ছোট, কিন্তু গম্বুজ আকৃতির কাণ্ডের উপরের শাখা-প্রশাখাগুলো বেশ বড়।
ii. মঠ আকৃতির কাণ্ডের নিচের শাখাগুলো বড়, কিন্তু গম্বুজ আকৃতির কাণ্ডের নিচের শাখাগুলো বেশ ছোট।
iii. মঠ আকৃতির কাণ্ডের শাখা-প্রশাখাগুলো উপরের দিকে বৃদ্ধি পায়, কিন্তু গম্বুজ আকৃতির কাণ্ডের শাখা-প্রশাখাগুলো চারদিকে প্রসারিত হয়।
iv. মঠ আকৃতির কাণ্ডের প্রধান কাণ্ডটি বেশ লম্বা, কিন্তু গম্বুজ আকৃতির কাণ্ডের প্রধান কাণ্ডটি তুলনামূলকভাবে খাটো৷
V. মঠ আকৃতির কাণ্ডের শীর্ষ পর্যন্ত প্রধান কাণ্ডটিকে শনাক্ত করা যায় কিন্তু, গম্বুজ আকৃতির কাণ্ডের প্রধান কাণ্ডটি শাখা-প্রশাখায় বিভক্ত হয়ে যায় এবং উপরের দিকে গিয়ে প্রধান কাণ্ডটিকে আর শনাস্ত করা যায় না।