পানির খরতা কি? খর পানির সুবিধা ও অসুবিধা লিখ।

যে পানিতে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, অ্যালুমিনিয়াম ও আয়রনের বাইকার্বনেট, ক্লোরাইড ও সালফেট লবণ মিশ্রিত থাকে তাকে খর পানি বলে। খর পানিতে সহজে সাবানের ফেনা তৈরি হয় না। ঝর্নার পানি, নদীর পানি, সমুদ্রের পানি ইত্যাদি খর পানি। খর পানিতে খাদ্য দ্রব্যও সহজে রান্না হয় না। যে পানিতে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, অ্যালুমিনিয়াম ও আয়রনের বাইসালফেট, কার্বনেট, ক্লোরাইড ও সালফেট লবণ দ্রবীভূত থাকে না তাকে মৃদু পানি বা সফট ওয়াটার বলে। মৃদু পানিতে সাবান সহজে ফেনা উৎপন্ন করে। যেমন, বৃষ্টির পানি, পতিত পানি ইত্যাদি।

পানির খরতা দুই প্রকার। যেমন– (১) অস্থায়ী খরতা ও (২) স্থায়ী খরতা

খর পানির সুবিধা

  • শক্ত হাড় ও দাঁত গঠনের জন্য ক্যালসিয়াম লবণ অত্যাবশ্যক বলে শিশুর দেহ গঠনে খর পানি বিশেষ উপযােগী।
  • খর পানিতে যে সকল ধাতব লবণ (Ca-লবণ) মিশ্রিত থাকে তা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী বলে খাবার পানি হিসাবে সামান্য খর পানির ব্যবহার বাঞ্ছনীয়।
  • খর পানি আপেক্ষা মৃদু পানিতে সীসা অধিক পরিমাণে দ্রবীভূত হয়। তাই খাবার পানি সামান্য খর হলে সীসক নির্মিত নলের মধ্যে দিয়ে সরবরাহ করা নিরাপদ। কারণ তাতে সীসক বিষ ক্রিয়ার ভয় কম থাকে।
  • এসিড শিল্পে পরিশোধিত এসিড বর্জ্যকরণে খর পানি অত্যাবশ্যকীয়।
খর পানি ব্যবহারের অসুবিধা

  • কাপড় ধােয়া বা লন্ড্রীর কাজে খর পানি ব্যবহার করলে সাবানের অপচয় ঘটে। কারণ খর পানিতে সহজে ফেনা তৈরি হয় না।
  • বয়লারে খর পানি ব্যবহার করলে এর ভিতরে অদ্রবণীয় কঠিন ধাতব লবণের আস্তরণ সৃষ্টি হয়। এরূপ আস্তরণ তাপ কুপরিবাহী বলে জ্বালানির খরচ বেড়ে যায়।
  • কাগজ, কৃত্রিম সিল্ক ও রঞ্জনশিল্পে খর পানি ব্যবহার করা যায় না। খর পানিতে দ্রবণীয় ফেরাস লবণ থাকলে কাগজ ও কৃত্রিম সিল্কের ওপর বাদামি বর্ণের দাগ পড়ে, কাপড় বা সুতার রঙের কাজে ব্যবহৃত রঙের সাথে খর পানির বিক্রিয়ার ফলে অদ্রবণীয় পদার্থ সৃষ্টি হয়। ফলে রঙের অপচয় ঘটে।
  • খর পানিতে চাল, ডাল প্রভৃতি সহজে সিদ্ধ হয় না এবং তরকারীর স্বাদও কম হয়ে থাকে। তরকারির রং কালচে হয়ে যায়। গ্লাস ও বাসনপত্রে বাদামি রংয়ের দাগ পড়ে।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *