(১) স্কেল কাকে বলে?
উঃ- স্কেলের আভিধানিক অর্থ মানদন্ড, যার সাহায্যে পরিমাপ করা হয়। সাধারণভাবে স্কেল হল বিশেষ পরিমাপ ব্যবস্থা বা পদ্ধতি। স্কেল বলতে অনেক সময় পরিমাপের বিভিন্ন যন্ত্র যেমন রুলার, ফিতে প্রভৃতি বোঝানো হয়।
(২) মানচিত্র স্কেল কাকে বলে?
উঃ- মানচিত্রে দুটি স্থানের মধ্যে দূরত্ব এবং ভূমিভাগে ওই দুটি স্থানের মধ্যে প্রকৃত দূরত্বের অনুপাতকে মানচিত্র স্কেল বলা হয়।
(৩) মানচিত্র স্কেল কয় প্রকার ও কী কী?
উঃ- মানচিত্র স্কেল তিন প্রকার — (১) বিবৃতিমূলক স্কেল (Statement Scale) (২) ভগ্নাংশ সূচক স্কেল (Representative Scale) ও (৩) লৈখিক স্কেল (Graphical Scale)।
(৪) বিবৃতিমূলক স্কেল বলতে কী বোঝো?
উঃ- মানচিত্রে স্কেলকে যখন ভাষায় বা কথায় প্রকাশ করা হয়, তাকে বিবৃতিমূলক স্কেল বলে। যেমন — সিজিএস পদ্ধতিতে ১ সেমিতে ৫০০ মিটার, এপিএস পদ্ধতিতে ১ ইঞ্চিতে ১ মাইল। বিবৃতিমূলক স্কেলের বামদিকে মানচিত্রের দূরত্ব এবং ডানদিকে ভূমি তথ্য দূরত্ব প্রকাশিত হয়।
(৫) বিবৃতিমূলক স্কেলের সুবিধা ও অসুবিধা কী কী?
উঃ- সুবিধাঃ- (১) এটি সরল স্কেল। তাই অনভিজ্ঞ ব্যক্তি সহজেই বুঝতে পারে। (২) এই স্কেল কথায় প্রকাশিত হয় বলে অঙ্কনের জটিলতা থাকেনা।
অসুবিধাঃ- (১) স্কেলে একক পরিবর্তনের সময় সমস্যা হয়। (২) মানচিত্র বড় বা ছোট করার সময় স্কেলের পরিবর্তন করতে হয় বলে অনেক সমস্যা দেখা যায়।
(৬) ভগ্নাংশ সূচক স্কেল বলতে কি বোঝো?
উঃ- মানচিত্রের দূরত্ব ও ভূমির দূরত্বকে যে স্কেলে ভগ্নাংশের আকারে প্রকাশ করা হয় তাকে ভগ্নাংশ সূচক স্কেল বলে। এই স্কেল R.F. (Representative Fraction) Scale হিসেবেও পরিচিত। এই স্কেলের লব-এ মানচিত্রের দূরত্ব ও হর-এ ভূমি দূরত্ব নির্দেশিত থাকে। উদাহরণ — ১:৫০,০০০।
(৭) ভগ্নাংশ সূচক স্কেলের সুবিধা ও অসুবিধা কী কী?
উঃ- সুবিধাঃ- (১) একক বিহীন স্কেল হয় বলে ভগ্নাংশ সূচক স্কেলের ব্যবহার সর্বজনীন। (২) এই স্কেলকে সহজেই বিবৃতিমূলক বা রৈখিক স্কেলে রূপান্তর করা যায়।
অসুবিধাঃ- (১) অনভিজ্ঞ ব্যক্তি এই স্কেল ব্যবহার করতে পারেন না। (২) মানচিত্র ছোট বা বড় করা হলে এই স্কেলের পুনরায় হিসেব করতে হয়, যা একটি জটিল প্রক্রিয়া।
(৮) লৈখিক স্কেল কাকে বলে?
উঃ- যে স্কেল সরল বা বক্ররেখার দ্বারা লৈখিক ভাবে উপস্থাপন করা হয়, তাকে লৈখিক স্কেল বলে।
(৯) লৈখিক স্কেল কয় প্রকার ও কী কী?
উঃ- চার প্রকার — (১) রৈখিক স্কেল (Linear Scale) (২) তুলনামূলক স্কেল (Comparative Scale) (৩) কর্নিক স্কেল (Diagonal Scale) (৪) ভার্নিয়ার স্কেল (Vernier Scale)।
(১০) রৈখিক স্কেল কী?
উঃ- কোনো স্কেলকে যখন সরল রেখার মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয় তখন তাকে রৈখিক স্কেল বলা হয়।রৈখিক স্কেলের একটি ভাগ তুলনামূলক রৈখিক পদ্ধতিতে অংকন করা যায়। যা তুলনামূলক স্কেল নামেচ পরিচিত। সাধারণত রৈখিক স্কেলে দুটি ভাগ থাকে ; একটি মুখ্য ভাগ ও অপরটি গৌণ ভাগ।
(১১) রৈখিক স্কেলের সুবিধা ও অসুবিধা কী কী?
উঃ- সুবিধাঃ- (১) অনভিজ্ঞ ব্যক্তি সহজেই এই স্কেল বুঝতে পারে। (২) মানচিত্র হ্রাস বৃদ্ধি করলে নতুন মানচিত্রের জন্য স্কেল অঙ্কন করতে হয়না কারণ মানচিত্র হ্রাসবৃদ্ধির সাথে সাথে স্কেলের আনুপাতিক হারে হ্রাসবৃদ্ধি ঘটে।
অসুবিধাঃ- (১) স্কেল অঙ্কনের জন্য হিসেবের জটিল পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। (২) স্কেল অঙ্কনের জন্য অনেক সময় লাগে।
(১২) তুলনামূলক স্কেল বলতে কী বোঝো?
উঃ- সিজিএস অর্থাৎ মেট্রিক পদ্ধতি এবং এফপিএস অর্থাৎ ব্রিটিশ পদ্ধতির দুটি এককের মধ্যে তুলনা করার উদ্দেশ্যে একটি সাধারন সরলরেখার উভয় দিকে যে রৈখিক স্কেল অংকন করা হয় তাকে তুলনামূলক স্কেল বলে।
(১৩) কর্নিক স্কেল বলতে কী বোঝো?
উঃ- যে স্কেলে সেকেন্ডারি ডিভিশনের সাথে টারশিয়ারি ডিভিশন কোনাকুনি যুক্ত করা হয় তাকে কর্নিক স্কেল বা ডায়াগোনাল স্কেল বলে। এই স্কেলকে প্রমাণ বা স্ট্যান্ডার্ড স্কেলও বলা হয়।
(১৪) ভার্নিয়ার স্কেল কাকে বলে?
উঃ- যে স্কেলের সাহায্যে সঠিক ও নিখুঁত ভাবে দৈর্ঘ্য কোণ পরিমাপ করা হয়, তাকে ভার্নিয়ার স্কেল বলে।
(১৫) ভূগোলে স্কেলের ব্যবহার কি?
উঃ- (১) মানচিত্রে স্কেল ব্যবহার করে ভূপৃষ্ঠে দুটি স্থানের মধ্যবর্তী দূরত্ব নির্ণয় করা হয়। (২) বাড়ি, জমি, রাস্তা, রেলপথ বিভিন্ন স্থানের নকশা তৈরি করতে হলে স্কেল ব্যবহার করা হয়। (৩) মানচিত্র ছোট বা বড় করতে হলে স্কেল ব্যবহৃত হয়। (৪) আবহাওয়া পরিমাপক যন্ত্রে স্কেলের ব্যবহার রয়েছে। (৫) মানচিত্র অভিক্ষেপে স্কেলের ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ।