প্লাজমা মেমব্রেন বা কোষ ঝিল্লী কাকে বলে? এর গঠন ও কাজ

কোষ প্রাচীরের নীচে সমস্ত প্রােটোপ্লাজমকে ঘিরে যে স্থিতিস্থাপক ও অর্ধভেদ্য সজীব পর্দা থাকে তাকে প্লাজমা মেমব্রেন, সেল মেমব্রেন, সাইটোমেমব্রেন বা কোষ ঝিল্লী বলে। মেমব্রেনটি জায়গায় জায়গায় ভাঁজ বিশিষ্ট হতে পারে। প্রতিটি ভাঁজকে মাইক্রোভিলাস (বহুবচনে মাইক্রোভিলাই) বলে।

প্লাজমা মেমব্রেন এর গঠন
প্লাজমামেমব্রেন প্রধানত লিপিড ও প্রােটিন দিয়ে গঠিত। এর গঠন বিন্যাস সম্পর্কে বিভিন্ন বিজ্ঞানী ভিন্ন ভিন্ন মডেল প্রস্তাব করেছেন তবে অধিকাংশ বিজ্ঞানীদের মতে লিপিড- এর অণুগুলাে দুটি স্তরে সজ্জিত হয়ে মেমব্রেন এর কাঠামাে গঠন করে এবং দুই স্তর লিপিড কাঠামাের মধ্যে প্রােটিন অণুগুলাে অবস্থান করে। বিভিন্ন বিজ্ঞানীদের দেয়া মডেল যেমন Danielli-Daveson Model, Fluid Mosaic Model, Unit-Membrane Model, Benson’s Model.

প্লাজমা মেমব্রেন এর কাজ

  • কোষকে নির্দিষ্ট আকার দান করে;
  • কোষ এর অভ্যন্তরীণ সকল বস্তুকে ঘিরে রাখে;
  • বাইরের সকল প্রতিকূল অবস্থা থেকে অভ্যন্তরীণ বস্তুকে রক্ষা করে;
  • কোষের বাইরে এবং ভিতরে পদার্থের স্থানান্তর নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয় করে;
  • বিভিন্ন বৃহদাণু সংশ্লেষ করতে পারে;
  • বিভিন্ন রকম তথ্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।
প্লাজমা মেমব্রেনের বিভিন্ন অবস্থা
মাইক্রোভিলাই (Microvilli) : কোন কোন প্রাণিকোষের মুক্ত প্রান্ত থেকে সূক্ষ্ণ আঙ্গুলের মতো যে অভিক্ষেপ (2nm দীর্ঘ) সৃষ্টি করে তার নাম মাইক্রোভিলাই। এগুলোর উপস্থিতিতে কোষের শোষণ ও ক্ষরণতল বৃদ্ধি পায়।
ফ্যাগোসাইটিক ভেসিকল (Phagocytic vesicle) : অনেক সময় প্লাজমা মেমব্রেন প্রসারিত হয়ে কঠিনবস্তু বা খাদ্যকণাকে আবৃত করে ভেসিকল বা গহ্বর সৃষ্টি করে।
ডেসমোজোম (Desmosome) : প্লাজমা মেমব্রেনের কোন কোন স্থানে টনোফাইব্রিল (tonofibril) নামক অসংখ্য ফিলামেন্টযুক্ত বৃত্তাকার পুরু অঞ্চল বা ডেসমোজোম সৃষ্টি করে।
পিনোসাইটিক ভেসিকল (Pinocytic vesicle) : প্লাজমা মেমব্রেনের কোথাও অতি ক্ষুদ্র খাঁজ সৃষ্টি হলে উক্ত খাঁজ দিয়ে পানি বা অন্য কোন তরল কোষের ভেতর প্রবেশ করে পিনোসাইটিক ভেসিকল সৃষ্টি করে। শেষ পর্যন্ত পর্দা বিলুপ্ত হলে তরল কোষের ভেতর মুক্ত হয়। এ প্রক্রিয়াকে পিনোসাইটোসিস (Pinocytosis) বলে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *