পড়াশোনা

দর্পণ কি? দর্পণ কত প্রকার ও কি কি? দর্পণের ব্যবহার। What is Mirror?

1 min read

দর্পণ হলো এমন একটি মসৃণ তল যেখানে আলোর নিয়মিত প্রতিফলন ঘটে। সাধারণত কাচের একপাশে ধাতুর প্রলেপ লাগিয়ে দর্পণ তৈরি করা হয়ে থাকে কারণ কাচ একটি স্বচ্ছ এবং অনমনীয় বস্তু। কাচের যেদিকে সিলভারিং (কাচে ধাতুর প্রলেপ লাগানোর পদ্ধতি) করা থাকে তার বিপরীত পৃষ্ঠকে দর্পণের পৃষ্ঠ বা প্রতিফলক পৃষ্ঠও বলা হয়। দর্পণ প্রধানত দুই প্রকার। যথা-

  1. সমতল দর্পণ (Plane mirror) ও
  2. গোলীয় দর্পণ (Spherical mirror)
সমতল দর্পণ : কোনো সমতল পৃষ্ঠ যদি মসৃণ হয় এবং তাতে আলোর নিয়মিত প্রতিফলন ঘটে তবে তাকে সমতল দর্পণ বলে। আমরা প্রতিদিন চেহারা দেখার জন্য যে আয়না ব্যবহার করি সেটি সমতল দর্পণ।
গোলীয় দর্পণ : যে দর্পণের প্রতিফলক পৃষ্ঠ কোনো গোলকের অংশবিশেষ তাকে গোলীয় দর্পণ বলে।

দর্পণের ব্যবহার
বিভিন্ন ধরনের দর্পণ আমরা বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করে থাকি। এগুলো নিচে বর্ণনা করা হলো:
সমতল দর্পণ:

  • সমতল দর্পণের সাহায্যে আমরা আমাদের চেহারা দেখি।
  • চোখের ডাক্তারগণ রোগীর দৃষ্টি শক্তি পরীক্ষা করার জন্য বর্ণমালা পাঠের সুবিধার্থে সমতল দর্পণ ব্যবহার করে থাকে।
  • সমতল দর্পণ ব্যবহার করে পেরিস্কোপ তৈরি করা হয়।
  • পাহাড়ি রাস্তার বাঁকে দুর্ঘটনা এড়াতে এটি ব্যবহার করা হয়।
  • বিভিন্ন আলোকীয় যন্ত্রপাতি যেমন- টেলিস্কোপ, ওভারহেড প্রজেক্টর, লেজার তৈরি করতে সমতল দর্পণ ব্যবহার করা হয়।
  • নাটক, চলচ্চিত্র ইত্যাদির সুটিং এর সময় সমতল দর্পণ দিয়ে আলো প্রতিফলিত করে কোনো স্থানের ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধি করে।
অবতল দর্পণ:

  • সুবিধাজনক আকৃতির অবতল দর্পণ ব্যবহার করে মুখমণ্ডলের বিবর্ধিত এবং সোজা প্রতিবিম্ব তৈরি করা হয়, এতে রূপচর্চা ও দাঁড়ি কাটার সুবিধা হয়।
  • দন্ত চিকিৎসকগণ অবতল দর্পণ ব্যবহার করেন।
  • প্রতিফলক হিসেবে অবতল দর্পণ ব্যবহার করা হয়। যেমন– টর্চলাইট, স্টিমার বা লঞ্চের সার্চলাইটে অবতল দর্পণ ব্যবহার করে গতিপথ নির্ধারণ করা হয়।
  • অবতল দর্পণের সাহায্যে আলোকশক্তি, তাপশক্তি ইত্যাদি কেন্দ্রীভূত করে কোনো বস্তুকে উত্তপ্ত করতে ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও এটি রাডার এবং টিভি সংকেত সংগ্রহে ব্যবহৃত হয়। যেমন– ডিশ এন্টেনা, সৌরচুল্লী, টেলিস্কোপ এবং রাডার সংগ্রাহক ইত্যাদি।
  • অবতল দর্পণের সাহায্যে আলোক রশ্মিগুচ্ছকে একটি বিন্দুতে কেন্দ্রীভূত করা যায় বলে ডাক্তাররা চোখ, নাক, কান ও গলা পরীক্ষা করার সময় এ দর্পণ ব্যবহার করেন।
উত্তল দর্পণ:

  • উত্তল দর্পণ সর্বদা অবাস্তব, সোজা এবং খর্বিত প্রতিবিম্ব গঠন করে বিধায় পেছনের যানবাহন বা পথচারী দেখার জন্য গাড়িতে এবং বিয়ের সময় ভিউ মিরর হিসেবে এ দর্পণ ব্যবহার করা হয়।
  • উত্তল দর্পণের সাহায্যে বিস্তৃত এলাকা দেখতে পারা যায় বলে দোকান বা শপিংমলে নিরাপত্তার কাজে উত্তল দর্পণ ব্যবহার করা হয়।
  • প্রতিফলক টেলিস্কোপ তৈরিতে এ দর্পণ ব্যবহার করা হয়।
  • এ দর্পণ বিস্তৃত এলাকায় আলোকরশ্মি ছড়িয়ে দেয় বলে রাস্তার বাতিতে প্রতিফলক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
দর্পণ সম্পর্কিত কিছু প্রশ্ন ও উত্তর
সমতল দর্পণে সৃষ্ট বিম্বের বৈশিষ্ট্যগুলো কী কী?
উত্তরঃ সমতল দর্পণে সৃষ্ট বিম্বের নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যগুলো দেখা যায়–
১। দর্পণ থেকে বিম্বের দূরত্ব এবং বস্তুর দূরত্ব সমান।
২। বস্তু ও বিম্ব যে সরলরেখায় অবস্থিত, সেটি দর্পণকে লম্বভাবে ছেদ করে।
৩। বিম্ব অসদ ও সোজা হবে।
৪। বিম্বের পার্শ্ব পরিবর্তন ঘটে।
৫। বিম্বের আকার বস্তুর আকারের সমান হবে।
4.8/5 - (12 votes)
Mithu Khan

I am a blogger and educator with a passion for sharing knowledge and insights with others. I am currently studying for my honors degree in mathematics at Govt. Edward College, Pabna.

Leave a Comment

x