সাইক্লোন হলো এক প্রকার সর্বাধিক ক্ষমতাশালী, ধ্বংসাত্মক ও মরণকারক বায়বীয় ঝড়। গভীর সমুদ্রে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে যখন প্রচণ্ড গতিসম্পন্ন চারদিক থেকে ধেয়ে আসা বাতাস এককেন্দ্রিক ঊর্ধ্বমুখী ঘূর্ণনের আকারে স্থলভাগের দিকে অগ্রসর হয়, তাকেই বলা হয় সামুদ্রিক ঝড় বা সাইক্লোন। এর গতিবেগ কমপক্ষে প্রতি ঘণ্টায় 63 কিমি বা 40 মাইল হতে হয়।
সাইক্লোন শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ “Kyklos” থেকে যার অর্থ হলো Coil of Snakes বা সাপের কুন্ডলী। একে আমেরিকাতে হারিকেন (Hurricane), দূরপ্রাচ্যের দেশগুলোতে টাইফুন (Typhoon) এবং দক্ষিণ এশিয়াতে সাইক্লোন বলে।
বাংলাদেশের উত্তরে হিমালয় পর্বত এবং দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর আর ফানেল আকৃতির উপকূলীয় এলাকা বিদ্যমান। ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশ সাইক্লোনের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ দেশ। ১৯৬০ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত প্রায় ৫০ বার বাংলাদেশে সাইক্লোন আঘাত এনেছে।
এর মধ্যে ১৯৬০, ১৯৬১, ১৯৬৩, ১৯৬৫, ১৯৭০, ১৯৮৫, ১৯৯১, ২০০৭ ও ২০০৯ সালের সাইক্লোন ছিল প্রলয়ংকরী। তবে ১৯৭০ সালের সাইক্লোনটি স্মরণকালের সবচেয়ে প্রলয়ংকরী হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এ ঝড়ে প্রায় ৫ লক্ষ প্রাণহানি ঘটেছে। ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ে প্রায় ১ লক্ষ ৪০ হাজার প্রাণহানি ঘটেছে।
২০০৭ ও ২০০৯ সালের সাইক্লোন যথাক্রমে সিডর ও আইলাতে যথাক্রমে ১০ হাজার ও ৭ হাজার লোকের প্রাণহানি ঘটেছে। এছাড়া লক্ষ লক্ষ মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে। এ দুটি সাইক্লোনে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ যথাক্রমে প্রায় ১.৭ বিলিয়ন ও ৬০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।