প্রশ্ন-১. যক্ষ্মা কি?
উত্তর : যক্ষ্মা হচ্ছে ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে সংঘটিত একটি সংক্রামক রোগ।
প্রশ্ন-২. বি.সি.জি কোন রোগের প্রতিষেধক টিকা?
উত্তর : বি.সি.জি যক্ষ্মা রোগের প্রতিষেধক টিকা।
প্রশ্ন-৩. কী কী কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য হয়?
উত্তর : বিভিন্ন কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। যেমন–
- পোষ্টিক নালির মধ্য দিয়ে খাদ্যবস্তুর চলন ধীর হওয়া।
- তাজা ফলমূল ও শাকসবজি না খাওয়া।
- পায়খানার বেগ পেলে সাথে সাথে পায়খানায় না বসা।
উত্তর : Human Immune Deficiency Virus নামটির সংক্ষিপ্ত রূপ হচ্ছে HIV। যা দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট করে দেয়।
- অতিরিক্ত মানসিক চাপ,
- শারীরিক পরিশ্রম এর অভাব,
- বয়সের অনুপাতে অতিরিক্ত ওজন,
- অত্যধিক মদপান এবং
- ধূমপান করা।
প্রশ্ন-১০. এপেন্ডিসাইটিস এর লক্ষণ কী কী?
উত্তর : এপেন্ডিসাইটিস এর প্রধান লক্ষণ হল পেটে একটানা ব্যথা, যেটা ক্রমশ বাড়তে থাকে। ব্যাথাটা সাধারণত নাভির চারদিকে থেকে শুরু হয়, কিছুক্ষণের মধ্যেই নাভির নিচে ও ডানদিকে সরে যায়। খিদে কমে যেতে পারে, কাশি, কোষ্ঠকাঠিন্য বা অল্প জ্বর হতে পারে।
প্রশ্ন-১১. কিডনি সংযোজন কি?
উত্তর : যখন কোনো ব্যক্তির কিডনি বিকল বা অকেজো হয়ে পড়ে তখন কোনো সুস্থ ব্যক্তির তার দেহে প্রতিস্থাপন করাই হল কিডনি সংযোজন।
প্রশ্ন-১২. রক্তশূন্যতা কেন হয়?
উত্তর : বয়স ও লিঙ্গভেদে রক্তে হিমোগ্লোবিনের ঘনত্ব স্বাভাবিকের তুলনায় কমে গেলে, খাদ্যের প্রধান উপাদান ভিটামিন বি-১২ এর অভাব দেখা দিলে রক্তশূন্যতা হয়। বাংলাদেশে সাধারণত লৌহ ঘটিত আমিষের অভাবে এ রোগ হয়।
প্রশ্ন-১৩. থায়ামিনের অভাবজনিত রােগ কোনটি?
উত্তর : ভিটামিন বি১ বা থায়ামিনের অভাবে বেরিবেরি নামক রােগ দেখা দেয়। বেরিবেরি শব্দটি সিংহলী ভাষা থেকে নেওয়া হয়েছে। যার অর্থ “আমি পারি না”, এই কথার তাৎপর্য এই যে, রােগী এতই দুর্বল হয়ে পড়ে যে, তারপক্ষে কোন কাজ করাই সম্ভব হয় না।
প্রশ্ন-১৪. ডায়ালাইসিস কেন করা হয়?
উত্তর : বৃক্ক সম্পূর্ণরূপে বিকল হলে রক্ত পরিশোধনের জন্য ডায়ালাইসিস করা হয়। বৃক্ক বিকল হওয়ার পর বৈজ্ঞানিক উপায়ে রক্ত পরিশোধিত করার নাম ডায়ালাইসিস। ডায়ালাইসিস মেশিনের সাহায্যে নাইট্রোজেনঘটিত বর্জ্য পদার্থ রক্ত থেকে বাইরে বের করে নেওয়া হয়। এটি একটি ব্যয়বহুল ও সময় সাপেক্ষ প্রক্রিয়া।
প্রশ্ন-১৫. আমাশয় রোগের লক্ষণ।
উত্তর : অ্যামিবা ব্যসিলাস নামক এক প্রকার জীবাণুর আক্রমণে এই রোগ হয়। পেটে কামড়ানি সহ পিছল পায়খানা, কখনো বা সাদা হয়, কখনো বা পেটব্যাথা ছাড়াই বারবার তৈলাক্ত পায়খানা হয়।
প্রশ্ন-১৬. পাইয়োরিয়া কি?
উত্তর : পাইয়োরিয়া হলো দাঁতের এক ধরনের রোগ। এ রোগে দাঁতের মাড়ি থেকে পুঁজ বা রক্ত নির্গত হয় ও মুখে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়। নিয়মিত দাঁত পরিষ্কার রাখা, ভিটামিন ‘সি’ যুক্ত খাবার খাওয়া এবং অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ করার মাধ্যমে এ রোগ প্রতিরোধ ও প্রতিকার করা যায়।
প্রশ্ন-১৭. অ্যানজিন্স (Angins) কি?
উত্তর : হৃৎপিণ্ডের মাংসপেশিতে প্রয়োজনের তুলনায় রক্ত ও অক্সিজেন সরবরাহ কমে গেলে যে রোগের সৃষ্টি হয় তাকে Angins বলে। এ রোগে আক্রান্ত রোগীর করোনারী ধমনীগুলো ৫০ থেকে ৭০ শতাংশেরও বেশি পরিমাণে সংকীর্ণ হয়ে যায়। ফলে বুক ভারী ও ব্যথা অনুভূত হয়।
প্রশ্ন-১৯. হাঁপানি কি?
উত্তর : হাঁপানি একটি শ্বাসকষ্ট জনিত রোগ। একে অ্যাজমাও বলা হয়ে থাকে। এ রোগের লক্ষণ হলো- হঠাৎ শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। কাশির সাথে কখনও কখনও সাদা কফ বের হয়। রোগী দুর্বল হয়ে পড়ে।
প্রশ্ন-২০. ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ কি?
উত্তর : ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ হলো প্রচন্ড জ্বরসহ মাথাব্যথা; মাংসপেশি, কোমর ও জয়েন্টে তীব্র ব্যথা; বমি বমি ভাব এবং চামড়ায় লাল ফুসকুড়ি ইত্যাদি।
প্রশ্ন-২১. হার্ট অ্যাটাক কী?
উত্তর : হার্ট অ্যাটাক হলো হঠাৎ করে হৃদস্পন্দন বন্ধ হয়ে যাওয়া। কোন কারণে করোনারী ধমনীর দ্বারা কোন অংশে রক্ত সরবরাহ না হলে ঐ অংশের পেশির কাজ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে হার্ট অ্যাটাক হয়। এর ফলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
বিসিজি টিকা কি? বিসিজি টিকা কেন দেওয়া হয়?
উত্তরঃ বিসিজি টিকা সংক্রমণমুক্তকরণ টিকা। যক্ষ্মারোগে এটি দেওয়া হয়। এ টিকা দেওয়ার ২ সপ্তাহ পর টিকার স্থান লাল হয়ে ফুলে যায়। আরও ২/৩ সপ্তাহ পর শক্ত দানা, ক্ষত বা ঘা হতে পারে। ধীরে ধীরে এই ক্ষত বা ঘা শুকিয়ে যায়, কিন্তু দাগ থাকে। সাধারণত শিশুদের জন্মের পরই এই টিকা দেওয়া হয়।
ফাইলেরিয়া কি?
উত্তরঃ ফাইলেরিয়া হচ্ছে এক প্রকার মশা দ্বারা সংক্রামিত রোগ। কিউলেক্স মশা এ রোগ ছড়ায়। এই রোগ হলে প্রচণ্ড জ্বর হয়, শরীরের গিঁট ফুলে যায় এবং প্রচণ্ড ব্যথা অনুভূত হয়।
পায়োরিয়া কি?
উত্তরঃ পায়োরিয়া হচ্ছে এক ধরনের দাঁতের রোগ। এ রোগের ফলে দাঁতের মাড়ি ফুলে যায় এবং পুঁজ পড়ে। মুখে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়। দাঁত ব্রাশ করলে রক্ত ঝরে এবং পরিণামে দাঁত আলগা হয়ে যায় এবং সর্বশেষ দাঁত মাড়ি থেকে আলাদা হতে পারে।
পানিবাহিত রোগ কাকে বলে? পানিবাহিত রোগের নাম কি?
উত্তর : যেসব রোগ পানির মাধ্যমে বিস্তার লাভ করে তাকে পানিবাহিত রোগ বলে। দুটি অতি পরিচিত পানিবাহিত রোগ হলো– ১. ডায়রিয়া ও ২. কলেরা।
পানিবাহিত রোগ প্রতিরোধে একটি করণীয় হলো জীবাণুমুক্ত বিশুদ্ধ পানি ব্যবহার করা বা পান করা।
এসিডিটির লক্ষণ কি কি?
উত্তর : এসিডিটির লক্ষণগুলো হলো :
১. মুখ দিয়ে জল উঠা।
২. বুক জ্বালাপোড়া করা।
৩. পেট ফুলে ওঠা।
৪. অম্ল ঢেকুর হওয়া।
৫. খাবার আগে অথবা পরে গলা জ্বালা।
৬. কোষ্ঠকাঠিন্য প্রভৃতি।
দীর্ঘদিন যাবৎ এই রোগে ভুগলে আলসার হতে পারে।
আর্সেনিকোসিস কি?
উত্তর : দীর্ঘদিন ধরে আর্সেনিকযুক্ত পানি পান করার ফলে নানা ধরনের রোগের উপসর্গ দেখা দেয়, একে আর্সেনিকোসিস রোগ বলে। এতে হাতে ও পায়ে ঘা হয় এবং চামড়া, মুত্রাশয়, কিডনি ও ফুসফুসে ক্যান্সার ঘটায়, ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ হয়।
মাম্পস কি?
উত্তর : মাম্পস এক প্রকার ভাইরাসজনিত সংক্রামক রোগ। এ রোগ সব বয়সের মানুষের হয়। তবে ৫-১৫ বছরের শিশুদের মধ্যে এ রোগ বেশি হয়। সাধারণত শীতকালে এ রোগ বেশি দেখা যায়। রোগটি সংক্রমিত হওয়ার ২-৩ সপ্তাহের মধ্যে লক্ষণ প্রকাশ পায়।
ইনফ্লুয়েঞ্জা হলে করণীয় কি?
উত্তর : ইনফ্লুয়েঞ্জা হলে হাঁচি, কাশির সময় রুমাল ব্যবহার করতে হবে। যেখানে সেখানে থুথু, কফ ফেলা যাবে না। আক্রান্ত শিশুকে অন্যান্য শিশু থেকে আলাদা করে রাখতে হবে। তরল ও নরম খাবার খেতে দিতে হবে। তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে মাথা ধুয়ে শরীর মুছে ফেলতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ খেতে হবে।
অজ্ঞান হওয়া বলতে কি বুঝায়?
উত্তর : অজ্ঞান হওয়া একটি বড় ধরনের দুর্ঘটনা। অত্যাধিক গরম, ক্ষুধা, ভয়, দুর্বলতা, দুঃসংবাদ ইত্যাদি কারণে মস্তিষ্কে রক্তের সরবরাহ কমে যায়। এর ফলে অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
কুশিং সিনড্রোম কি?
উত্তর : কুশিং সিনড্রোম এক ধরনের রোগ যা অ্যাড্রেনাল গ্রন্থির গ্লুকোকর্টিকয়েড হরমোন অধিক ক্ষরণের ফলে সৃষ্টি হয়। এই রোগ হলে রোগীর দেহে কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায়। যেমন : শরীর স্থুল হয়ে যাওয়া, পেশির দুর্বলতা, মেয়েদের ক্ষেত্রে মাসিক রজঃচক্র বন্ধ হয়ে যাওয়া, চেহারায় লোম গজানো, উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদি।
শিশুদের রিকেট রোগ হয় কেন?
উত্তর : ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়ামের অভাবে শিশুদের রিকেট রোগ হয়। দীর্ঘদিন খাদ্য তালিকায় দুধ, দুধের তৈরি খাদ্য, ডিম, মাখন, কলিজা, ইত্যাদি ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাদ্য অনুপস্থিত থাকলে, সূর্যের আলো গায়ে না লাগলে অথবা বিপাকজনিত ত্রুটির কারণে রিকেট রোগ হয়।
কোন ব্যক্তির ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা বেশি?
উত্তর : যে কেউ যে কোনো সময়ে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হতে পারে। চার শ্রেণির লোকের ডায়াবেটিস বেশি হয়ে থাকে–
- যাদের বংশে, যেমন– মা-বাবা রক্ত সম্পর্কিত নিকট আত্মীয়ের ডায়াবেটিস আছে।
- যাদের ওজন বেশি এবং শরীর মেদ বেশি।
- যারা ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রমের কোনো কাজ করে না।
- দীর্ঘদিন যারা স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ সেবন করে তাদের ডায়াবেটিস বেশি হয়।
বৃক্ক বিকল হওয়ার আকস্মিক ও ধীর কারণগুলো কী কী?
উত্তর : বৃক্ক বিকল হওয়ার আকস্মিক ও ধীর কারণগুলো হলো- (i) জটিল নেফ্রাইটিস, ডায়রিয়া, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ ইত্যাদি আকস্মিক কারণ। (ii) নেফ্রাইটিস, ডায়বেটিস, রক্তচাপ, কিডনিতে পাথর ইত্যাদি ধীর কারণ।
জেনেটিক রোগ কাকে বলে?
উত্তর : ক্রোমোসোমের অস্বাভাবিক, জিন মিউটেশন, DNA সিকুয়েন্সের বিভিন্ন অস্বাভাবিকতাকে জেনেটিক রোগ বলে। বিভিন্ন ধরনের জেনেটিক রোগ আছে। ডাউন সিন্ড্রোম, ঠোট বা তালু কাটা, B থ্যালাসেমিয়া ইত্যাদি জেনেটিক রোগ।
পোলিও রোগের লক্ষণ কী?
উত্তর : পোলিও রোগে ১০ বছরের কম বয়সের শিশুরা বেশি আক্রান্ত হয়। এই রোগে শিশুদের সর্দি, কাশি, মাথাব্যথা, সামান্য জ্বর হয়। ৩-৫ দিন পর পর ঘাড় শক্ত হয়ে হাত বা পা অবশ হয়ে যায় এবং পরে স্থায়ীভাবে শিশু পঙ্গু হয়ে যায়।
রেডটাইড কি?
উত্তর : রেডটাইড মাছের এক ধরনের রোগ। সম্প্রতি হংকংয়ে সমুদ্র এলাকায় এ রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রচুর মাছ মারা গেছে।
ডাউন সিন্ড্রোম কি?
উত্তর : ডাউন সিন্ড্রোম এক ধরনের ক্রোমোসোমাল ডিস অর্ডার। মানুষের ২১ তম ক্রোমোসোমের নন-ডিসজাংশনের ফলে এ রোগ হয়।
এ রোগে আক্রান্ত হলে আক্রান্ত ব্যক্তির–
১. মুখ বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত হবে।
২. চোখের পাতা ফোলা, নাক চ্যাপ্টা, জিহ্বা লম্বা হবে।
৩. হাতগুলো ছোট হবে।
৪. উচ্চতা কম হবে।
৫. মানসিক ভারসাম্যহীন হবে।
পেঁপের রিং স্পট রোগ কি?
উত্তর : রিং স্পট রোগ পেঁপের একটি অন্যতম ধ্বংসাত্মক রোগ এবং শুধুমাত্র আফ্রিকা ছাড়া পৃথিবীর যে সমস্ত অঞ্চলে পেঁপে জন্মে সে সব অঞ্চলে এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। তবে বাংলাদেশ, ভারত, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন ও চায়নার বিভিন্ন অংশে এ রোগের তীব্রতা সবচেয়ে বেশি। উদ্ভিদ রোগতত্ত্ববিদ জেনসন (Jensen, 1949) প্রথম এ রোগটির নাম দেন Ring Spot।
অ্যাপেনডিসাইটিস বলতে কী বুঝায়?
উত্তর : পেটের ডানদিকের নিচে বৃহদন্ত্রের সিকামের সাথে অ্যাপেনডিক্স যুক্ত থাকে যা আঙ্গুলের মতো থলে আকারের একটি অঙ্গ। এই অ্যাপেনডিক্সের সংক্রমণের কারণে অ্যাপেনডিসাইটিস হয়। এ রোগের কারণে নাভির চারিদিকে ব্যাথা অনুভব হয়, ব্যাথা শুরু হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই ব্যাথা নিচে ডান দিকে সরে যায়, ক্ষুধা মন্দা, বমি, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দেয়।