পড়াশোনা

বিটা রশ্মি কি? বিটা রশ্মির ধর্ম

1 min read
বিটা রশ্মি বা বিটা কণা আসলে ইলেকট্রন। এটি নিশ্চয়ই একটি বিস্ময়ের ব্যাপার যে নিউক্লিয়াসের ভেতরে থাকে শুধু প্রােটন এবং নিউট্রন কিন্তু সেখান থেকে ইলেকট্রন কেমন করে বের হয়ে আসে? সেটি ঘটার জন্য নিউক্লিয়াসের ভেতরের একটি নিউট্রনকে প্রােটনে পরিবর্তিত হতে হয়।

অর্থাৎ একটি চার্জহীন নিউট্রন পজিটিভ চার্জযুক্ত প্রােটন এবং নেগেটিভ চার্জযুক্ত ইলেকট্রনে পরিবর্তিত হয়, কাজেই মােট চার্জের পরিমাণ অপরিবর্তিত থাকে। সমীকরণের ডান পাশে

ν দিয়ে পদার্থবিজ্ঞানের জগতের রহস্যময় কণা নিউট্রিনাের প্রতিপদার্থকে (এন্টি-নিউট্রিনাে) বােঝানাে হয়েছে, এটি চার্জহীন এবং এর ভর খুবই কম।
নিউক্লিয়াসের ভেতরে থেকে যখন আলফা কণা বের হয় সেটা একটি নির্দিষ্ট শক্তি নিয়ে বের হয় কিন্তু বিটা কণার জন্য সেটি সত্যি নয়। বিকিরণের মােট শক্তির কতটুকু নিউট্রিনাে নিয়ে নেবে তার ওপর বিটা কণার শক্তি নির্ভর করে।
বিটা কণা যেহেতু ইলেকট্রন তাই তার চার্জ নেগেটিভ (ঋণাত্মক আধান) এবং সে কারণে সেটি ইলেকট্রিক এবং চৌম্বকীয় ক্ষেত্র দিয়ে প্রভাবিত করা যায়। এটি যখন কোনাে পদার্থের ভেতর দিয়ে যায় তখন সেই পদার্থের অণু-পরমাণুর সাথে সংঘর্ষের কারণে সেগুলােকে আয়নিত করতে পারে। আলফা কণার হিলিয়াম নিউক্লিয়াসের তুলনায় ইলেকট্রন খুবই ক্ষুদ্র তাই ইলেকট্রনের ভেদনক্ষমতা অনেক বেশি এবং সেটি পদার্থের অনেক ভেতর ঢুকে যেতে পারে। কয়েক মিলিমিটার পুরু অ্যালুমিনিয়ামের পাত দিয়ে একটি সাধারণ বিটা কণাকে থামানাে সম্ভব।

বিটা কণার বিকিরণ হলে নিউক্লিয়াসে একটি নিউট্রন কমে গিয়ে একটি প্রােটন বেড়ে যায়, তাই তার নিউক্লিওন সংখ্যা সমান থাকে। কিন্তু যেহেতু পারমাণবিক সংখ্যা প্রােটনের সংখ্যার ওপর নির্ভর করে তাই নিউক্লিয়াসের পারমাণবিক সংখ্যা বেড়ে ভিন্ন মৌলের নিউক্লিয়াসে পরিণত হয়। যেমন তেজস্ক্রিয় C14 বিটা বিকিরণে N14 এ পরিবর্তিত হয়: 

মজার ব্যাপার হচ্ছে, বিটা বিকিরণ বলতে আমরা যে শুধু নিউক্লিয়াসের ভেতর থেকে ইলেকট্রনের বিকিরণ বােঝাই তা নয়, ইলেকট্রনের প্রতিপদার্থ পজিট্রনের বিকিরণকেও বিটা বিকিরণ বলে। তার জন্য নিউক্লিয়াসের ভেতরে কোনাে একটি প্রােটনকে নিউট্রনে পরিবর্তিত হতে হয়:

এই প্রক্রিয়াতে নিউক্লিয়াসে প্রােটনের সংখ্যা এক কমে যায় বলে তার পারমাণবিক সংখ্যাও এক কমে ভিন্ন মৌলের নিউক্লিয়াসে পরিণত হয়। (এ বিক্রিয়াটি নিউক্লিয়াসের বাইরে হতে পারে না। কারণ নিউট্রনের ভর প্রােটনের চেয়ে বেশি।)
বিটা বিকিরণের সময় নিউট্রিনাে কিংবা অ্যান্টি নিউট্রিনাে বের হলেও আমরা সেগুলােকে তেজস্ক্রিয় রশ্মি হিসেবে বিবেচনা করিনি, কারণ এগুলাে চার্জবিহীন এবং পদার্থের সাথে এদের বিক্রিয়া এত কম যে কয়েক আলােকবর্ষ দীর্ঘ সিসার পাত দিয়েও একটা নিউট্রিনােকে থামানাে যায় না।

বিটা রশ্মির ধর্ম
 

  • এই রশ্মি ঋণাত্মক আধানযুক্ত।
  • এই রশ্মি চৌম্বক ও তড়িৎ ক্ষেত্র দ্বারা বিচ্যুত হয়।
  • এটি প্রতিপ্রভা সৃষ্টি করে।
  • বিটা কণিকার ভর একটি ইলেকট্রনের ভরের সমান।
  • ফটোগ্রাফিক প্লেটে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।
  • বিটা কণা প্রকৃতপক্ষে দ্রুত গতি সম্পন্ন ইলেকট্রন।
  • এর ভেদন ক্ষমতা আলফা রশ্মির চেয়ে বেশি এবং এটি 0.01m পুরু।
4/5 - (1 vote)
Mithu Khan

I am a blogger and educator with a passion for sharing knowledge and insights with others. I am currently studying for my honors degree in mathematics at Govt. Edward College, Pabna.

Leave a Comment

x