বিশুদ্ধ বা ইনট্রিনসিক সেমিকন্ডাক্টর
যেসব সেমিকন্ডাক্টরে কোন ভেজাল উপাদান বা অপদ্রব্য মেশানো থাকেনা তাদেরকে ইনট্রিনসিক সেমিকন্ডাক্টর বলে। যেমন, বিশুদ্ধ সিলিকন,জার্মেনিয়াম।
ইনট্রিনসিক সেমিকন্ডাক্টরের ক্ষেত্রে, স্বাভাবিক তাপমাত্রায় ইলেকট্রন সংখ্যা = হোল সংখ্যা ( উপরের চিত্রে )
ভেজাল মিশ্রিত বা এক্সট্রিনসিক সেমিকন্ডাক্টর
বিশুদ্ধ সেমিকন্ডাক্টরের সাথে প্রয়োজনমত ত্রিযোজী বা পঞ্চযোজী পরমাণু অপদ্রব্য বা ভেজাল উপাদান মিশিয়ে যে সেমিকন্ডাক্টর তৈরি করা হয় তাকে ভেজাল মিশ্রিত বা এক্সট্রিনসিক Semi-conductor বলে।
p-type সেমিকন্ডাক্টর
বিশুদ্ধ সেমিকন্ডাক্টরের সাথে প্রয়োজনমত ত্রিযোজী ভেজাল উপাদান মিশিয়ে যে সেমিকন্ডাক্টর তৈরি করা হয় তাকে p-type সেমিকন্ডাক্টর বলে।
বিশুদ্ধ সিলিকন বা জার্মেনিয়াম পরমাণুর সাথে একটি ত্রি-যোজী পরমাণু ভেজাল হিসেবে যুক্ত করলে ত্রি-যোজী পরমাণু্র তিনটি ভ্যালেন্স ইলেকট্রন নিকটবর্তী তিনটি সিলিকনের ভ্যালেন্স ইলেকট্রনের সাথে শেয়ারিং এর মাধ্যমে সমযোজী বা কো-ভ্যালেন্ট বন্ড সৃষ্টি করে।
কিন্তু ত্রিযোজী পরমাণুর যোজ্যতা স্তরে একটি ইলেকট্রনের ঘাটতি থাকায় সিলিকনের চতুর্থ ইলেকট্রনের সাথে বন্ধন তৈরি করতে পারে না। ফলে একটি ফাঁকা স্থান বা হোল সৃষ্টি হয়।
এরকমভাবে প্রত্যেকবার ত্রি-যোজী পরমাণু মেশানোর ফলে একটি করে হোল সৃষ্টি হয়। আর এই হোল পজেটিভ চার্জ বহন করে বলে এই নতুন সেমিকন্ডাক্টরকে বলা হয় p-type সেমিকন্ডাক্টর।
এভাবে যত বেশি অপদ্রব্য বা ভেজাল ডোপিং করা হয় তত বেশি হোল উৎপন্ন হয়। এজন্য পি-টাইপ সেমিকন্ডাক্টরে মেজোরিটি চার্জ ক্যারিয়ার হল হোল বা ফাকা স্থান এবং ইলেকট্রন হচ্ছে মাইনোরিটি চার্জ ক্যারিয়ার।
ত্রি-যোজী পরমাণুকে একসেপ্টর বা গ্রহীতা পরমাণুও বলা হয়, কারণ রিকম্বিনেশনের সময় প্রতিটি হোল একটি করে ইলেকট্রন গ্রহণ করে। এরকম আরো গ্রহীতা পরমাণু হল অ্যালুমিনিয়াম, বোরন এবং গ্যালিয়াম।
n-type সেমিকন্ডাক্টর
বিশুদ্ধ সেমিকন্ডাক্টরের সাথে প্রয়োজনমত পঞ্চযোজী অপদ্রব্য বা ভেজাল উপাদান মিশিয়ে যে সেমিকন্ডাক্টর তৈরি করা হয় তাকে n-type সেমিকন্ডাক্টর বলে।
বিশুদ্ধ সিলিকন পরমাণুর সাথে একটি পঞ্চ-যোজী পরমাণু ভেজাল বা অপদ্রব্য হিসেবে মিশানো হলে পঞ্চ-যোজী পরমাণুর চারটি ইলেকট্রন নিকটবর্তী চারটি সিলিকন পরমাণুর ভ্যালেন্স ইলেকট্রনের সাথে শেয়ারিং এর মাধ্যমে সমযোজী বা কো-ভ্যালেন্ট বন্ড সৃষ্টি করার মাধ্যমে তার ভ্যালেন্স ব্যান্ডকে আটটি ইলেকট্রন দ্বারা পূর্ণ করে।
ফলে পঞ্চযোজী পরমাণুর একটি অতিরিক্ত ইলেকট্রন মুক্ত হয়ে যায়, তখন এই মুক্ত ইলেকট্রনটি কন্ডাকশন ব্যান্ডে চলে যায়। এভাবে যত বেশি অপদ্রব্য বা ভেজাল ডোপিং করা হয় কন্ডাকশন ব্যান্ডের ইলেকট্রন তত বেশি বৃদ্ধি পায়।
এজন্য এন-টাইপ সেমিকন্ডাক্টরে মেজোরিটি চার্জ ক্যারিয়ার হল ইলেকট্রন এবং মাইনোরিটি চার্জ ক্যারিয়ার হল হোল বা ফাকা স্থান। আমরা জানি ইলেকট্রন নেগেটিভ চার্জ বহন করে, এজন্য এভাবে গঠিত ভেজাল সেমিকন্ডাক্টরকে এন-টাইপ সেমিকন্ডাক্টর বলা হয়।
পঞ্চযোজী পরমাণুকে ডোনর বা দাতা পরমাণুও বলা হয়, কারণ এরা কন্ডাকশন ব্যান্ডে ইলেকট্রন উৎপন্ন করে। দাতা পরমাণু গুলো হল আর্সেনিক, অ্যান্টিমনি এবং ফসফরাস।