অজু আরবি শব্দ। এর শাব্দিক অর্থ হলো নির্দিষ্ট চারটি অঙ্গ ধৌত করা। ইসলামি পরিভাষায় শরীর পবিত্র করার নিয়তে পবিত্র পানি দিয়ে শরিয়তের নিয়ম অনুযায়ী নির্দিষ্ট অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ধৌত করাকেই অজু বলে।
অজু সম্পর্কে রাসূল (সাঃ) বলেন, “কেয়ামতের দিন আমার উম্মতগণকে এমন অবস্থায় পেশ করা হবে যে, তখন তাদের চেহারা দুনিয়ায় থাকিতে যে অজু করেছিল, তার বরকতে এমন ঝকমক করতে থাকবে – যেমন ঘোড়ার কপালে চাঁদ উজ্জ্বল দেখায়।”
অজু সম্পর্কে কুরআনে বলা হয়েছে, “যারা ইমান এনেছ জেনে রেখো, যখন তোমরা নামাজের জন্য দাঁড়াবে তার আগে নিজেদের মুখমণ্ডল ধুয়ে নেবে, তোমাদের দু হাত কনুই পর্যন্ত ধুয়ে নেবে, মাথা মাসেহ্ করবে এবং উভয় পা গিরাসহ ধুয়ে নেবে।” (সূরা আল মায়িদা – ০৬)
অজুর ফরজ
অজুর ফরজ ৪ টি। এর কোনটি বাদ পড়লে অজু হবে না। আর অজু যদি না হয়, তাহলে নামাজও শুদ্ধ হবে না। এগুলো হলো –
- কপালের উপরিভাগে চুল গজাইবার স্থান হতে থুতনীর নিচ পর্যন্ত এবং পাশের দিকে দুই কানের লতি পর্যন্ত পুরো মুখমণ্ডল একবার ধৌত করা।
- উভয় হাত কনুইসহ একবার ধোয়া
- মাথার চার ভাগের একভাগ একবার মাসেহ্ করা
- উভয় পা গিরাসহ একবার ধৌত করা
অজুর সুন্নত
অজুর সুন্নতগুলো হলো–
- অজুর নিয়ত করা
- ওযু শুরু করার আগে বিসমিল্লাহ পড়া
- দু হাত কবজি পর্যন্ত তিনবার ধোয়া
- মেসওয়াক বা দাঁতন দিয়ে দাঁত পরিষ্কার করা
- গড়গড়া সহ তিনবার কুলি করা (রোজাদার হলে গড়গড়া না করা)
- নাকে পানি দিয়ে বাম হাত দিয়ে নাক পরিষ্কার করা
- সম্পূর্ণ মুখমন্ডল তিনবার ধৌত করা
- দাড়ি খেলাল করা
- দুন হাতের কনুইসহ তিনবার ধৌত করা
- সমস্ত মাথা একবার মাসেহ্ করা
- টাখনু সহ উভয় পা তিনবার ধৌত করা
- পায়ের আঙ্গুল খেলাল করা
- অজুর ফরজ আদায়কালে ধারাবাহিকতা বজায় রাখা।
অজু ভঙ্গের কারণ
নিম্নলিখিত যেকোনটি ঘটলে অজু ভঙ্গ হয়ে যাবে।
- প্রস্রাব -পায়খানার রাস্তা দিয়ে কোন কিছু (মল,মূত্র, বায়ু,বীর্য ইত্যাদি) বের হলে।
- শরীরের যেকোন স্থান থেকে কোন অপবিত্র বস্তু (রক্ত, পুঁজ ইত্যাদি) বের হলে।
- থুথুর সাথে বেশি রক্ত বের হলে
- মুখ ভরা বমি করলে
- বেহুশ হলে
- ঘুমালে
- পাগল হলে
- নেশাগ্রস্থ হলে
- নামাজে বসে উচ্চৈঃস্বরে হাসলে ইত্যাদি।