ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাসে দিল্লি সালতানাতে সুলতান ইলতুৎমিশ এক উজ্জ্বল আলোকবর্তিকার নাম। ক্রীতদাস হিসেবে তিনি বিক্রীত হন।
দাস বংশের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে ইলতুৎমিশের কৃতিত্ব ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লিপিবদ্ধ থাকবে।
কুতুবউদ্দিন আইবেকের মৃত্যুর পর তার পোষ্যপুত্র আরাম শাহের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে সমগ্র সাম্রাজ্যে যখন অরাজকতা চলছিল ঠিক তখনই ইলতুৎমিশ পরিস্থিতি সামাল দেন।
→ সুলতান ইলতুৎমিশের পরিচয় : সামান্য কৃতদাস থেকে জীবন শুরু করে পৃথিবীর ইতিহাসে যতগুলো সমরনেতা নামই রয়েছে তার মধ্যে উজ্জ্বল এক নক্ষত্র সুলতান ইলতুৎমিশ।
ইলতুৎমিশ ছিলেন তুর্কিস্থানের ইলবারি গোত্রের ইয়ালম খানের পুত্র। ক্রীতদাস হিসেবে তিনি দিল্লিতে কুতুবউদ্দিন আইবেকের কাছে বিক্রীত হন।
তার মেধা ও যোগ্যতা বলে আইবেকের প্রিয় পাত্র হয়ে উঠেন এবং তার কন্যাকে বিবাহ করেন। পরবর্তীকালে সুলতান তাকে বদাউনের শাসনকর্তা নিয়োগ করেন।
কুতুবউদ্দিন আইবেকের মৃত্যুর পর তার পোষ্যপুত্র আরাম শাহ দিল্লির সিংহাসনে আরোহণ করেন। কিন্তু তিনি অযোগ্য থাকায় তুর্কি আমিরগণ ইলতুৎমিশকে দিল্লির সিংহাসনে আরোহণ করতে আমন্ত্রণ জানায়। অতঃপর ১২১১ সালে তিনি দিল্লির সিংহাসনে আরোহণ করেন।
কৃতিত্ব/ অবদান : দিল্লি সালতানাতে ইলতুৎমিশ একজন অত্যন্ত কৃতিত্বপূর্ণ নরপতি হিসেবে অভিহিত। তিনিই ভারতীয় উপমহাদেশে খাঁটি আরবি মুদ্রা প্রবর্তন করেন।
তার প্রচেষ্টায় দিল্লির বিখ্যাত কুতুবমিনার, আড়াই-দিন-কা-ঝোপড়াসহ অসংখ্য মসজিদ, রাস্তা, সরাইখানা নির্মাণ হয়।
ইলতুৎমিশ দিল্লি সালতানাতের প্রশাসনিক ভিত্তি রচনা করেন । তিনি ১২২৯ সালে বাগদাদের আব্বাসীয় খলিফার নিকট হতে সুলতান-ই-আজম বা শ্রেষ্ঠ সুলতান খেতাব লাভ করেন।
মৃত্যু : সুলতান ইলতুৎমিশ ১২৩৬ সালে মৃত্যুরবণ করেন ।
উপসংহার : দাস বংশের শ্রেষ্ঠ ও প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে ইলতুৎমিশের কৃতিত্ব অপরিসীম। নানা প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে দিয়ে সিংহাসনে আরোহণ করে তিনি যেভাবে অতি কৌশলে সমগ্র সাম্রাজ্যে শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করেন তা সত্যিই প্রশংসনীয়। তাই ঐতিহাসিক ঈশ্বরী প্রসাদ যথার্থই বলেন, ইলতুৎমিশ নিঃসন্দেহে দাস বংশের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা।
শেষ কথা:
আশা করি আপনাদের এই আর্টিকেলটি পছন্দ হয়েছে। আমি সর্বদা চেষ্টা করি যেন আপনারা সঠিক তথ্যটি খুজে পান। যদি আপনাদের এই “সুলতান ইলতুৎমিশ কে ছিলেন?” আর্টিকেলটি পছন্দ হয়ে থাকলে, অবশ্যই ৫ স্টার রেটিং দিবেন।