ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ও মার্কিন রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার মধ্যে বৈসাদৃশ্য আলোচনা
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ও মার্কিন রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার মধ্যে তুলনামূলক আলোচনা কর।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উভয়েই বিশ্বের দুইটি সমৃদ্ধশালী ও প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের রাষ্ট্রনায়ক। ক্ষমতা, কার্যাবলি ও পদমর্যাদার দিক থেকে উভয়েই নিজেদের শাসনতান্ত্রিক পরিমণ্ডলে চূড়ান্ত সম্মান ও মর্যাদার অধিকারী। তবে একটু চিন্তা করলে দেখা যায় যে, উভয়ের মধ্যে ব্যাপক পার্থক্য বিদ্যমান ।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার পার্থক্য : নিম্নে এদের ক্ষমতা ও কার্যাবলির মধ্যে পার্থক্যগুলো আলোচনা করা হলো :
১. নির্বাচনে ভিন্ন পদ্ধতি : ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী প্রথমে জনগণের ভোটে কসন্সসভার সদস্য নির্বাচিত হন। পরে কমন্সসভার আস্থা লাভ করে রাজা বা রানি কর্তৃক নির্বাচিত হন। পক্ষান্তরে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জনগণের ভোটে নির্বাচিত Electoral college-এর সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত হন।
২. দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে : ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী সরকার প্রধান। তিনি রাষ্ট্র প্রধান নন বলে রাজা বা রানিই রাষ্ট্রপ্রধানের ভূমিকা পালন করেন। কিন্তু মার্কিন রাষ্ট্রপতি একই সাথে সরকার প্রধান ও রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্ব পালন ও মর্যাদা ভোগ করেন।
৩. মেয়াদের ক্ষেত্রে : মার্কিন প্রেসিডেন্টকে তার নির্দিষ্ট ৪ বছর মেয়াদের মধ্যে ইমপিচমেন্টের মাধ্যম ছাড়া, অপসারণ করা অসম্ভব। পরবর্তী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত তিনি তার পদে বহাল থাকতে পারেন। কিন্তু ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর নির্দিষ্ট মেয়াদ না থাকায় যেকোনো সময় তাকে অনাস্থা পাস করে অপসারণ করা যায়।
৪. জবাবদিহিতার ক্ষেত্রে : মার্কিন প্রেসিডেন্ট তার নীতি ও কাজকর্মের কংগ্রেসের কাছে দায়ী নন। অপরপক্ষে, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী তার কাজকর্মের জন্য পার্লামেন্টের কাছে জবাবদিহিতা করতে বাধ্য থাকেন ।
৫. যুদ্ধ ঘোষণার ক্ষেত্রে : মর্কিন কংগ্রেসের অনুমোদন সাপেক্ষে মার্কিন রাষ্ট্রপতি যুদ্ধ ঘোষণা করতে পারেন। অপরদিকে, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কেবিনেটের সাথে আলোচনা করে রাজা বা রানিকে যুদ্ধ ঘোষণার পরামর্শ দিতে পারেন।
৬. ক্ষমা প্রদর্শনের ক্ষেত্রে : মার্কিন রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শন এবং সম্মানসূচক খেতাব বণ্টনের ক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী রাজা বা রানি এরূপ ক্ষমতা প্রয়োগ করেন ।
৭. নিয়োগ প্রদানের ক্ষেত্রে : মার্কিন রাষ্ট্রপতি নিয়োগ প্রদানের ক্ষেত্রে সরাসরি ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারে কিন্তু ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী রাজা বা রানি এরূপ ক্ষমতা প্রয়োগ করেন।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, মার্কিন রাষ্ট্রপতিকে কিছুটা শক্তিশালী মনে হলেও আসলে এটা একটা আপেক্ষিক মূল্যায়ন। আসলে সবাই নির্ভর করে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিত্ব, কর্মকুশলতা ও রাজনৈতিক বিচক্ষণতার উপর ।
এছাড়াও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা ও পদমর্যাদা সম্পর্কে জানুন ।
শেষ কথা:
আশা করি আপনাদের এই আর্টিকেলটি পছন্দ হয়েছে। আমি সর্বদা চেষ্টা করি যেন আপনারা সঠিক তথ্যটি খুজে পান। যদি আপনাদের এই “ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ও মার্কিন রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার মধ্যে বৈসাদৃশ্য আলোচনা” আর্টিকেলটি পছন্দ হয়ে থাকলে, অবশ্যই ৫ স্টার রেটিং দিবেন।