ঈমানী দুর্বলতার কারণ

প্রশ্ন

প্রশ্ন: কোন কোন সময় আমি নিজের ঈমানের মধ্যে কিছু সমস্যা অনুভব করি। আমি জানি এগুলো শয়তানের পক্ষ থেকে। আপনি কি আমাকে এমন কিছু ঘটনা উল্লেখ করতে পারেন যেগুলো ঈমানকে মজবুত করবে?

উত্তর

আলহামদু লিল্লাহ।.

আলহামদুলিল্লাহ।মানুষকে কখনো কখনো গাফলতি পেয়ে বসে তখন তার ঈমান দুর্বল হয়ে যায়। এর প্রতিকার হচ্ছে- অধিক পরিমাণে ইসতিগফার করা, সর্বদা আল্লাহর যিকির করা, বুঝে বুঝে ও স্থিরমনে কুরআন তেলাওয়াত করা, কুরআন অনুযায়ী আমল করা। এর মাধ্যমে অন্তরের গাফলতি দূর করা যাবে, অন্তরকে সজাগ রাখা যাবে। সুতরাং আল্লাহর দোহাই অধিক হারে নেকির কাজ করুন।

ঈমানী দুর্বলতার অনেকগুলো কারণ আছে; যেমন-

এক: আল্লাহর নাম ও গুণাবলী সম্পর্কে অজ্ঞতা ঈমানের কমতি অবধারিত করে দেয়। কারণ যে মানুষ আল্লাহর নাম ও গুণাবলি জানে না তার ঈমানে ঘাটতি থাকে।

দুই: আল্লাহর কাউনি (চিরায়ত) ও শরয়ি নিদর্শন নিয়ে চিন্তা-ভাবনা না করা। এর ফলে ঈমানের কমতি ঘটে। নিদেনপক্ষে এর ফলে ঈমানে জড়তা আসে, ঈমান বৃদ্ধি পায় না।

তিন: গুনাতে লিপ্ত হওয়া। কারণ মানুষের অন্তর ও ঈমানের উপর গুনাহর অনেক নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয় সাল্লাম বলেছেন: “কোন যিনাকারী যখন যিনা করে তখন তার ঈমান থাকে না”[সহিহ বুখারি (২৪৭৫) ও সহিহ মুসলিম (৫৭)]

চার: আল্লাহর আনুগত্য ত্যাগ করা। কারণ আল্লাহর আনুগত্য ত্যাগ ঈমানে কমতির কারণ। যদি অনাদায়কৃত আনুগত্যটি ফরজ শ্রেণীর হয় এবং বিনা ওজরে সেটা ত্যাগ করা হয় তাহলে এর জন্য বান্দাকে তিরস্কার করা হবে ও শাস্তি দেয়া হবে। আর যদি ফরজ শ্রেণীর না হয় অথবা ওজরের কারণে ত্যাগ করে থাকে তাহলে সেটাও ঈমানের কমতি; কিন্তু এর জন্য তিরস্কার করা হবে না।[শাইখ উছাইমীনের ফতোয়া ও পুস্তিকাসমগ্র (১/৫২)]

প্রশ্নকারী বোন, আমরা আপনাকে বুঝে বুঝে বেশি পরিমাণে কুরআন তেলাওয়াত করার পরামর্শ দিচ্ছি। কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে আপনার অন্তরে যা কিছুর উদ্ভব ঘটে সেগুলো দূর হয়ে যাবে। আল্লাহ তাআলা বলেন: “আমি কোরআনে এমন বিষয় নাযিল করি যা নিরাময়কারী এবং মুমিনের জন্য রহমত।”[সূরা ইসরা, আয়াত: ৮২]

অনুরূপভাবে আমরা আপনাকে বুঝে বুঝে নবীদের কাহিনী পড়ার পরামর্শ দিচ্ছি। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তাঁর সাহাবায়ে কেরামের অন্তরকে প্রশান্ত করার জন্য আল্লাহ তাআলা কুরআনে নবীদের কাহিনীগুলো উল্লেখ করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন: “আর আমি রসূলগণের সব বৃত্তান্তই আপনাকে বলছি, যদ্দ্বারা আপনার অন্তরকে মজবুত করছি। আর এভাবে আপনার নিকট মহাসত্য এবং ঈমানদারদের জন্য ওয়াজ ও স্মরণিকা এসেছে।”[সূরা হুদ, আয়াত: ১২০]

 

হে আল্লাহ! আপনি ঈমানকে আমাদের নিকট প্রিয় করে দিন এবং ঈমানকে আমাদের অন্তরে সুশোভিত করে দিন। কুফর, পাপাচার ও আপনার অবাধ্যতাকে আমাদের নিকট অপছন্দনীয় করে দিন এবং আমাদেরকে সুপথপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত করে নিন।

সূত্র: ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব

Similar Posts