বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বহির্বিশ্বের ভূমিকা
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে চীনের ভূমিকাঃ
মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার পরই চীন সরকার কট্টর পাকিস্তান ঘেঁষা নীতি অনুসরণ করে । যা স্বাধীনতাপ্রিয় বাঙ্গালী বিশেষ করে বামপন্থীদের জন্য গভীর হতাশা সৃষ্টি করে। প্রফেসর সৈয়দ আনোয়ার হোসেন মুক্তিযুদ্ধে চীনের অনুসৃত নীতির দুটি বৈশিষ্ট্যের উল্লেখ করেন। প্রথমত, চীন সরকার দ্ব্যর্থহীনভাবে পাকিস্তান সামরিক চক্রের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানায় । মুক্তিযুদ্ধে চৈনিক নীতির দুটি পর্যায় ছিল।
চীন গোড়া থেকেই রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের ভিত্তিতে বাংলাদেশ বিষয়ে তার নীতি নির্ধারণ করে । ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তান হানাদার বাহিনী বাংলাদেশের গণহত্যার সূচনার পর প্রায় ১৫ দিন মৌন থাকলেও ১১ এপ্রিল প্রথম সরকারি প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে । ওইদিন জেনারেল ইয়াহিয়া খানকে দেয়া এক পত্রে চৈনিক প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাই পাকিস্তানে ‘ভারতীয় সম্প্রসারণবাদের’ বিরুদ্ধে এবং পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব, জাতীয় স্বাধীনতা রক্ষায় চীন সরকার ও জনগণের সকল সময় সমর্থনের আশ্বাস দেন। পাকিস্তানে সংঘটিত ঘটনাকে তাদের ‘ অভ্যন্তরীণ সমস্যা’ বলে চীন সরকার চিহ্নিত করে পাকিস্তানের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির একমাত্র শর্ত হিসেবে পাকিস্তানের দু’অংশের ঐক্যকে সুদৃঢ় করার উপর জোর দেয় । ন্যাপ সভাপতি মওলানা আব্দুল খান ভাসানী মুক্তিযুদ্ধে চৈনিক সমর্থন লাভের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন । হতাশ পিকিংপন্থীদের মধ্যে ভাসানীপন্থী ন্যাপসহ আরো কয়েকটি ছোট গ্রুপ বিচ্ছিন্নভাবে সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু করলেও চীনের এই ভূমিকার কারণে পিকিংপন্থী গ্রুপগুলো বড় অংশই প্রকাশ্যে, গোপনে এবং কর্মকান্ডের দ্বারা মুক্তিযুদ্ধে বিরোধী অবস্থান নেয় ।
যদিও চীন মুক্তিযুদ্ধে আগাগোড়া কৌশলী ভূমিকা নেয়। তবে অক্টোবর মাস পর্যন্ত প্রকাশ্যে পাকিস্তান সমস্যা সম্পর্কে মন্তব্য করেনি।
এ সময় পাকিস্তানকে গোপনে সামরিক ও নৈতিক সমর্থন অব্যাহত রেখেছে । জুলাই মাসে ড. কিসিঞ্জারের পিকিং সফরের ফলে চীন পাকিস্তানপন্থী নীতিতে আগের চেয়ে সক্রিয় হয় । আগস্ট মাসে রুশ-ভারত মৈত্রী চুক্তির পরিপ্রেক্ষিতে চীন শঙ্কিত হয়ে পড়ে এবং সেপ্টেম্বরে চীন পাকিস্তানকে নতুন করে আশ্বস্ত করে জাতীয় স্বাধীনতা রক্ষার ন্যায়সংগত সংগ্রামে পাকিস্তানকে সমর্থন করবে। যদিও বার বার পাকিস্তানের অনুরোধ সত্ত্বেও চীন পাকিস্তানের সাথে কোন সামরিক চুক্তিতে আবদ্ধ হয়নি । তবে বরাবরের মতো চৈনিক সামরিক, নৈতিক সহায়তা অব্যাহত থাকে । ২৯ নভেম্বর চীনের উপ-প্রধানমন্ত্রী লি সিয়েন নিয়েন পাক-ভারত সীমান্তে উত্তেজনা সৃষ্টির জন্য রাশিয়া ও ভারতেকে দায়ী করেন । ১৯৭১ সালের অক্টোবর মাসে জাতিসংঘের সদস্য হয়ে এর পরের মাসেই চীনা প্রতিনিধি দলের নেতা চিয়ান কুয়ান দুয়া দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা সৃষ্টির জন্য রুশ-ভারত মৈত্রী চুক্তিকে দায়ী করেন । ৩ ডিসেম্বর চূড়ান্ত যুদ্ধের আগে পর্যন্ত এ নীতি চীন অব্যাহত রাখে ।
চৈনিক নীতির দ্বিতীয় পর্যায় (৩- ১৬ ডিসেম্বর ) ঃ
৩ ডিসেম্বর চূড়ান্ত যুদ্ধ শুরু হলে চীন অত্যন্ত সক্রিয় হয়ে ওঠে । চীন জাতিসংঘে সরাসরি রাশিয়া ও ভারতের পাশাপাশি বাংলাদেশ বিরোধী অবস্থান নেয়। এ যুদ্ধের জন্য সোভিয়েত ইউনিয়ন কে দায়ী করে একে প্রতিহত করার ঘোষণা দেয় । এর ফলে বাংলাদেশ ইস্যু নয় রুশ-চীন দ্বন্দ্বই প্রকট হয়ে উঠতে থাকে । ৫ ও ৭ ডিসেম্বর সোভিয়েত ইউনিয়ন দুটি প্রস্তাব উত্থাপন করে । প্রস্তাবগুলোর লক্ষ্য ছিল যুদ্ধ বিরতির মাধ্যমে ‘পূর্ব-পাকিস্তানের’ জন্য একটি রাজনৈতিক সমাধান বের করা । এই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে জাতিসংঘে চীন প্রথম ভেটো প্রয়োগ করে । ৫ ডিসেম্বর চীন এক প্রস্তাবে ভারতকে আক্রমণকারী হিসেবে তীব্র ভাষায় সমালোচনা করে। ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীন হলে চীন এক বিবৃতিতে ‘তথাকথিত বাংলাদেশ’ সৃষ্টির জন্য সোভিয়েত ইউনিয়ন ও ভারতের তীব্র সমালোচনা করে ।
এভাবে দেখা যায় যে, চীন মুক্তিযুদ্ধের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্তই পাকিস্তানপন্থী নীতি গ্রহণ করে । নৈতিক সমর্থন ছাড়াও গোপনে প্রচুর অস্ত্র পাকিস্তানকে সরবরাহ করে । পাকিস্তানী বাহিনী আত্মসমর্পণের পর যে সকল অস্ত্র বাংলাদেশে উদ্ধার করা হয় এর ৬০% চৈনিক এবং ৪০% মার্কিন ছাপযুক্ত অস্ত্র । এর থেকে ‘নিপীড়িত জনগণের বন্ধু’ হিসেবে দাবিদার চীনের হীন ভূমিকা স্পষ্ট হয়ে ওঠে । পাক-ভারতের যুদ্ধের শেষ মুহূর্তে পাকিস্তানকে রক্ষা করার জন্য জাতিসংঘের নবীন সদস্য হয়েও বারবার পাকিস্তানের পক্ষে ভূমিকা রাখে । এমনকি ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের ভিতর দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হলেও ওইদিনই চীন সরকার এক বিবৃতিতে বাংলাদেশকে ‘রুশ-ভারতের সৃষ্টি ‘ বলে মন্তব্য করে ।
মুক্তিযুদ্ধে মুসলিম বিশ্বের ভূমিকাঃ
মুক্তিযুদ্ধে ভারতের ভূমিকা:
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে মিত্র বাহিনীর ভূমিকা রাখতে ভারতকে হারাতে হয়েছিল বহু অফিসার ও সৈনিককে। ১৯৭১ সালে র্পূব ও পশ্চিম রণাঙ্গন মিলে শহীদ ভারতীয় সৈন্যের সংখ্যা ৩৬৩০ জন, নিখোঁজ ২১৩ জন এবং আহত ৯৮৫৬ জন। যাঁদের রক্ত এই স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে মিশে রয়েছে।বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধে প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে ভারতের ভূমিকা অবিস্মরণীয়।
২৬ মার্চ ১৯৭১ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইপিআরের ওয়ারলেস যোগে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী কাছে একটি বার্তা বা বাণী প্রেরণ করেন তিনি সেখানে উল্লেখ করেছিলেন “This may be last message to you from today Bangladesh is independent” এটাই বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা এবং ঐ মুহূর্ত থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন। অতপর ৪ এপ্রিল ১৯৭১সিলেটের তেলিয়াপাড়া চা বাগানে (বর্তমান হবিগঞ্জ ) এমএজি ওসমানের নেতৃত্বে ৫০০০সামরিক ও ৮০০০বেসামরিক মোট ১৩ হাজার যোদ্ধা নিয়ে মুক্তিফৌজ নামে মুক্তিবাহিনী গঠন করা হয়েছিল। ১২ এপ্রিল ১৯৭১ সালে মুক্তিফৌজ নাম পরিবর্তন করে বাহিনীটির নামকরণ করা হয় মুক্তিবাহিনী।
পরবর্তীতে বিদেশে অর্থাৎ প্রবাসী সরকার গঠন করা হয় এবং এই সরকার মুজিবনগরে শপথ গ্রহণ করে এবং বাংলাদেশের প্রথম সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদের নির্দেশে প্রধান সেনাপতি এমএজি ওসমানী সমগ্র বাংলাদেশকে ১১টি সেক্টরে বিভক্ত করে যুদ্ধ পরিচালনা করেন। কিন্তু এরপরেও পাকিস্তানিদের সঙ্গে বেড়ে ওঠা বেশ দুরূহ ছিল।আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত যুদ্ধের সূচনা লগ্ন থেকেই আমাদেরকে সহযোগিতা করেছে এবং ওতপ্রোতভাবে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে জড়িত ছিল। কাজেই এই প্রেক্ষাপটে আমি মনে করি বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের ভূমিকা আলোচনা করা প্রয়োজন।
মুক্তিযুদ্ধে ভারত বাংলাদেশের শরণার্থীদেরকে আশ্রয় প্রদান
মুক্তিযুদ্ধে ভারত বাংলাদেশের শরণার্থীদেরকে আশ্রয় প্রদানঃ ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারত বাংলাদেশের প্রায় এক কোটি শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছিল। ভারত সরকারের মতে নভেম্বর ১৯৭১ সাল পর্যন্ত ভারতে বাংলাদেশের মোট শরণার্থী ছিল ৯৮,৯৯,৩০৫ জন। এর মধ্যে অধিকাংশ শরণার্থী সরকারনিয়ন্ত্রিত শরণার্থী ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছিলেন। তবে বেশ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শরণার্থী বিভিন্ন আত্মীয়স্বজনের বাসায় আশ্রয় নিয়েছিলেন। তবে সবচাইতে বেশি শরণার্থী ক্যাম্প ছিল পশ্চিমবাংলায় এখানে শরণার্থী ক্যাম্প ৪৯২ টি, এরপর ত্রিপুরা রাজ্যে ২৭৬ টি, এসব জাগয়া ছাড়া্ও আসাম, মেঘালয়, বিহার এবং ভারতের উত্তরপ্রদেশে শরণার্থী ক্যাম্পগুলো অবস্থিত ছিল। যেখানে প্রচুর পরিমাণে বাংলাদেশি শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছিলেন।
বহির্বিশ্বে জনমত গড়ে তুলতে ভূমিকাঃ মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ভারত সরকার শুরু থেকেই বাংলাদেশের পাশে ছিল। এবং ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী তিনি বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে জনমত গড়ে তুলতে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন।১৮ মে ১৯৭১ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী বিশ্বের বৃহৎ শক্তির কে উদ্দেশ্য করে বলেন “ শরণার্থীদের বোঝা বহন করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসা উচিত।” তার এই বক্তব্য থেকে প্রমাণিত হয় যে, বহির্বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করার ক্ষেত্রে এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে একটি বিশেষ জায়গায় পৌঁছানোর জন্য শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর ভূমিকা ছিল অবিস্মরনীয়।
সামরিক প্রশিক্ষণ প্রদানঃ মুক্তিযুদ্ধে আগ্রহী বাংলাদেশিদেরকে ভারতীয় বাহিনী সেদেশে সরাসরি অস্ত্র ও যুদ্ধের প্রশিক্ষণ দিয়ে যুদ্ধ উপযোগী করে আবার বাংলাদেশে পাঠিয়েছে। এবং এ সময় ভারতের দেরাদুন ভারতীয় সামরিক বাহিনীর সদস্যরা বাংলাদেশি জনগণকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। এবং পরবর্তীতে তারা আবার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে।
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র পরিচালনা সহযোগিতায়
২৬শে মার্চ ১৯৭১ সালে চৌধুরী বেলাল মোহাম্মদের নেতৃত্বে চট্টগ্রামের কালুরঘাটে স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র নামে একটি বেতার কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। পরদিন ২৭ মার্চ ১৯৭১ সালে বিপ্লবী শব্দটি বাদ দিয়ে বেতার কেন্দ্রের নাম করণ করা হয়েছিল স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র।এই বেতার কেন্দ্র থেকে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময় বিভিন্ন বুলেটিন,চরমপত্র সহ মুক্তিযোদ্ধাদের উৎসাহিত করার জন্য বিভিন্ন অনুষ্ঠান, গল্প, গান ইত্যাদি প্রচার করা হতো। কিন্তু ৩০ মার্চ ১৯৭১সালে পাকিস্তান বিমান বাহিনীর এই কালুরঘাট স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে বোমা নিক্ষেপ করলে বেতার কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং এর সম্প্রচার যন্ত্রটি অকেজো হয়। এরপর এই বেতার কেন্দ্রের কলাকুশলী যখন ভারতে প্রবেশ করে তখন ভারত সরকার এদেরকে ট্রান্সফর্মার দিয়ে সহযোগিতা করেন। শুধু তাই নয় কলকাতায় এই স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে অফিস প্রতিষ্ঠা করতে ভারত সরকার সহযোগিতা করে। এবং পুরো যুদ্ধকালীন সময়ে কলকাতা থেকে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র বিভিন্ন ধরনের সংবাদ, অনুষ্ঠান প্রচার করে মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদান রাখে এবং এর পেছনে সরাসরি ভারত সরকারের সহযোগিতা ছিল।
যৌথবাহিনী গঠনঃ ২১ নভেম্বর ১৯৭১ সালে এমএজি ওসমানী ভারত-বাংলাদেশ যৌথ বাহিনী’ গঠনের ঘোষণা দেন। এবং তিনি ২১ নভেম্বর থেকে যৌথবাহিনী একসাথে কাজ করবে বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন।
সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণঃ ৩ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে পাকিস্তান বাহিনী ভারত কে আক্রমণ করলে ৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ সাল থেকে ভারতীয় মিত্রবাহিনী বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে এবং সরাসরি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান
৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে ভারত অন্যতম বৃহৎ শক্তি হিসেবে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করেছিল। এবং স্বীকৃতি প্রদান করে বাংলাদেশের সব সময় সর্বদা সহযোগিতা করেছে।ভারতীয় মিত্রবাহিনী বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করার পর ১৬ ই ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে পাকিস্তান পূর্ব পাকিস্তানের সেনা প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল নিয়াজী আনুমানিক ৯৩ হাজার ঢাকার ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরা্ওয়ার্দী উদ্যান) যৌথ বাহিনীর অধিনায়ক জগজিৎ সিং অরোরার কাছে আত্মসমর্পণ করেন।
উপরিউক্ত আলোচনা থেকে আমরা একথা নিশ্চিত করে বলতে পারি যে, বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারত সরকার এবং ভারতীয় সেনাবাহিনী ওতপ্রোতভাবে বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল। এবং বাংলাদেশ ১৬ ই ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় রচনার ক্ষেত্রে ভারত সরকার এবং ভারতীয় বাহিনীর বিশেষ সহযোগিতা করেছিল সেটা অনিস্বীকার্য। এছাড়া ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের পর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত বিভিন্ন সময়ে বাণিজ্যসহ বিভিন্ন বিষয়ে সহযোগিতা হাত অব্যাহত রেখেছে। কাজেই একথা আমরা বলতে পারি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতের ভূমিকা ছিল ইতিবাচক। এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদান বাঙালি জাতি কখনোই ভুলতে পারবে না বলে আমি মনে করি।