1. ‘‘পরের কারণে স্বার্থ দিয়া বলি
এ জীবন মন সকলি দাও,
তার মত সুখ কোথাও কি আছে?
আপনার কথা ভুলিয়া যাও।’’ —সুখ, কামিনী রায়
2. ‘‘করিতে পারি না কাজ
সদা ভয় সদা লাজ
সংশয়ে সংকল্প সদা টলে
পাছে লােকে কিছু বলে।’’ —পাছে লােকে কিছু বলে, কামিনী রায়
3. ‘‘সকালে উঠিয়া আমি মনে মনে বলি,
সারাদিন আমি যেন ভাল হয়ে চলি।’’ —মদনমােহন তর্কালঙ্কার
4. ‘‘পারিবনা একথাটি বলিও না আর,
কেন পারিবেনা তাহা ভাব একবার,
পাঁচজনে পারে যাহা,
তুমিও পারিবে তাহা,
পার কি না পার কর যতন আবার
একবার না পারিলে দেখ শতবার।’’ —পারিব না, কালী প্রসন্ন ঘােষ
5. ‘‘ফুল ফুলতুলতুল গা ভেজা শিশিরে,
বুলবুল মশগুল কার গান গাহিরে।’’ —পারিব না, কালী প্রসন্ন ঘােষ
6. ‘‘আমরা হিন্দু বা মুসলমান যেমন সত্য,
তার চেয়ে বেশি সত্য আমরা বাঙালি।’’ —ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ
7. ‘‘জীবে প্রেম করে যেইজন, সেইজন সেবিছে ঈশ্বর।’’ —স্বামী বিবেকানন্দ
8. ‘‘সবার উপর মানুষ সত্য, তাহার উপর নাই’’ —চন্ডীদাস
9. ‘‘সকল দেশের রানী সে যে – আমার জন্মভূমি’’ —দ্বিজেন্দ্রলাল রায়
10. ‘‘নানান দেশের নানান ভাষা
বিনে স্বদেশী ভাষা
পুরে কি আশা?’’ —রামনিধি গুপ্ত
11. ‘‘কতরূপ স্নেহ করি, দেশের কুকুর ধরি,
বিদেশের ঠাকুর ফেলিয়া’’ —ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত
12. ‘‘আপনাকে বড় বলে বড় সেই নয়,
লােকে যারে বড় বলে বড় সেই হয়’’ —ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত
13. ‘‘নগরের লােক সব এই কয় মাস।
তােমার কৃপায় করে মহাসুখে বাস’’ —ঈশ্বচন্দ্র গুপ্ত
14. ‘‘মহাজ্ঞানী মহাজন, যে পথে করে গমন
হয়েছেন প্রাতরণীয়’’ —হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়
15. ‘‘বাঁচতে হলে লাঙ্গল ধর রে
এবার এসে গায়’’ —শেখ ফজলুল করিম
16. ‘‘লাগলে মাথায় বৃষ্টি-বাতাস
উল্টে কি যায় সৃষ্টি আকাশ?’’ —শেখ ফ করিম
17. ‘‘সুন্দর হে, দাও দাও সুন্দর জীবন
হউক দূর অকল্যাণ সকল অশােভন’’ —শেখ ফজলুল করিম
18. ‘‘কোথায় স্বর্গ, কোথায় নরক / কে বলে তা বহু দূর।
মানুষেরই মাঝে স্বর্গ-নরক। মানুষের সুরাসুর’’ —শেখ ফজলুল করিম
19. ‘‘চিরসুখী জন ভ্রমে কি কখন
ব্যথিত বেদন বুঝিতে পারে?
কি যাতনা বিষে বুঝিবে সে কিসে
কভু আশীবিষে দংশেনি যারে।’’ —সমব্যথী, কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার
20. ‘‘কেন পান্থ ক্ষান্ত হও হেরি দীর্ঘ পথ
উদ্যম বিহনে কার পুরে মনোরথ।’’ —কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার
21. ‘‘কাঁটা হেরি ক্ষান্ত কেন কমল তুলিতে
দু:খ বিনা সুখ লাভ হয় কি মহিতে?’’ —কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার
22. ‘‘বাবুই পাখিরে ডাকি বলিছে চড়াই,
কুড়ে ঘরে থেকে কর শিল্পের বড়াই,
আমি থাকি মহাসুখে অট্টালিকা পরে
তুমি কত কষ্ট পাও রােদ বৃষ্টি ঝড়ে।’’ —স্বাধীনতার সুখ, রজনীকান্ত সেন
23. ‘‘কত রাজ্য, কত রাজা গড়িছ নীরবে
হে পূজা, হে প্রিয়।
একত্বে বরেণ্য তুমি, শরণ্যে এককে,
অত্মার আত্মীয়।’’ —অক্ষয় কুমার বড়াল
24. ‘‘ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না একলা জেগে রই।’’ —কাজলা দিদি, যতীন্দ্রমােহন বাগচী
25. ‘‘বহু দেশে দেখিয়াছি বহু নদ-দলে,
কিন্তু সে স্নেহের তৃষ্ণা মিটে কার চলে?’’ —কপােতাক্ষ নদ, মাইকেল মধুসূদন দত্ত
26. ‘‘জন্মিলে মরিতে হবে, অমর কে কোথা হবে?’’ —মাইলে মধুসূদন দত্ত
27. ‘‘উর্ধ্ব শির যদি তুমি কুল মনে ধনে;
করিওনা ঘৃণা তব নীচ শির জনে।’’ —মাইলে মধুসূদন দত্ত
28. ‘‘জোটে যদি মােটে একটি পয়সা,
খাদ্য কিনিও ক্ষুধার লাগি
দুটি যদি জোটে
ফুল কিনে নেও হে অনুরাগী।’’ —সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত
29. ‘‘ছিপখান তিন দাড় তিনজন মাল্লা
চৌপর দিন ভর দ্যায় দূর পাল্লা।’’ —দূরের পাল্লা, সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত
30. ‘‘কুকুরের কাজ কুকুর করেছে
কামড় দিয়েছে পায়,
তা বলে কুকুরে কামড়ান কি
মানুষের শােভা পায়।’’ —সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত
31. ‘‘বন্ধু তােমার ছাড় উদ্বেগ, সূতীক্ষ্ম কর চিত্ত,
বাংলার মাটি দুর্জয় ঘাঁটি বুঝে নিক দুর্বৃত্ত।’’ —সুকান্ত ভট্টাচার্য
32. ‘‘এসেছে নতুন শিশু, তাকে ছেড়ে দিতে হবে স্থান;
জীর্ণ পৃথিবীতে ব্যর্থ, মৃত ধ্বংসস্তু পিঠে
চলে যেতে হবে আমাদের।’’ —ছাড়পত্র, সুকান্ত ভট্টাচার্য
33. ‘‘এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযােগ্য করে যাব আমি।
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।’’ —ছাড়পত্র, সুকান্ত ভট্টাচার্য
34. ‘‘আহা কি মধুর ওই আযানের ধ্বনি
মর্মে মর্মে সেই সুর বাজিল কি সুমধুর
আকুল হইল প্রাণ, নাচিল ধমনী।’’ —আযান, কায়কোবাদ
35. ‘‘আমি তাে পাগল হয়ে যাই যে মধুর তানে
কি যে এক আকর্ষণে ছুটে যাই মুগ্ধ মনে।’’ —আযান, কায়কোবাদ
রবিন্দ্রনাথ ঠাকুরের উক্তিসমূহ
36. ‘‘মরিতে চাহি না আমি সুন্দর ভুবনে।’’ —রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
37. ‘‘মানুষের প্রতি বিশ্বাস হারানাে পাপ।’’ —রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
38. ‘‘খাঁচার পাখি ছিল সােনার খাঁচাটিতে
বনের পাখি ছিল বনে।
একদা কী করিয়া মিলন হল দোঁহে,
কী ছিল বিধাতার মনে।’’ —রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
39. ‘‘হে মাের চিত্ত, পূণ্য তীর্থে
এই ভারতের মহামানবের
সাগরতীরে।’’ —রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
40. ‘‘তােমার ন্যায়ের দন্ড প্রত্যেকের করে
অর্পণ করেছে নিজে প্রত্যেকের পরে
দিয়েছে শাসনভার হে রাজাধিরাজ।’’ —রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
41. ‘‘তােমার কীর্তির চেয়ে তুমি যে মহৎ
তাই তব জীবনের বথ
পশ্চাতে ফেলিয়া যায় কীর্তিরে তােমার বারংবার
চিহ্ন তব পড়ে আছে তুমি হেথা নাই।’’ —রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
42. ‘‘বিপদে মােরে রক্ষা কর
এ নহে মাের প্রার্থনা
বিপদে আমি না যেন করি ভয়।’’ —রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
43. ‘‘সংসারেতে ঘটিলে ক্ষতি
লভিলে শুধু বঞ্চনা
নিজের মনে না যেন মানি ক্ষয়।’’ —রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
44. ‘‘দেবতারে যাহা দিতে পারি, দিই তাই প্রিয়জনে
প্রিয়জনে যাহাদিতে পাই
তাই দেব দেবতারে।’’ —বৈষ্ণব কবিতা, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
45. ‘‘ওরে নবীন’ ওরে আমার কাঁচা,
ওরে সবুজ, ওরে অবুঝ,
আধ-মরাদের ঘা মেরে তুই বাঁচা।’’ —সবুজের অভিমান, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
46. ‘‘উদয়ের পথে শুনি কার বাণী
ভয় নাই, ওরে ভয় নাই,
নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান
ক্ষয় নাই-তার ক্ষয় নাই।’’ —রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
47. ‘‘মরিতে চাহিনা আমি সুন্দর ভুবনে
মানবের মাঝে আমি বাঁচিবারে চাই।’’ —কড়ি ও কোমল, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
48. ‘‘যে আমারে দেখিবারে পায় অসীম ক্ষমায় ভালাে মন্দ মিলায়ে সকলি,
এবার পূজায় তারি আপনারে দিতে চাই বলি।’’ —রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
কাজী নজরুল ইসলামের উক্তিসমূহ
49. ‘‘বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি / চির কল্যাণকর /
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী / অর্ধেক তার নর।’’ —কাজী নজরুল ইসলাম
50. ‘‘নাচে পাপ-সিন্ধু তুঙ্গ তরঙ্গ।
মৃত্যুর মহানিশা রুদ্র উলঙ্গ
নিঃশেষে নিশাচর গ্রাসে মহাবিশ্বে,
ত্রাসে কাঁপে তরণীর পাপী যত নিঃষে।’’ —কাজী নজরুল ইসলাম
51. ‘‘তবুও থামে না যৌবন বেগ, জীবনের উল্লাসে।’’ —কাজী নজরুল ইসলাম
52. ‘‘আমি বেদুঈন, আমি চেঙ্গিস
আমি আপনারে ছাড়া করি না কাহারে কুর্নিশ।’’ —কাজী নজরুল ইসলাম
53. ‘‘হে দারিদ্র, তুমি মােরে করেছ মহান ।
তুমি মােরে দানিয়াছ খ্রিস্টের সম্মান
কন্টক মুকুট শোভা।’’ —-কাজী নজরুল ইসলাম
54. ‘‘গাহি সাম্যের গান
মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই,
নহে কিছু মহীয়ান।’’ —কাজী নজরুল ইসলাম
55. ‘‘গাহি তাহাদের গান
বিশ্বের সাথে জীবনের পথে যারা আজি আগুয়ান।’’ —কাজী নজরুল ইসলাম
56. ‘‘থাকব নাকো বন্ধ ঘরে
দেখব এবার জগৎটাকে
কেমন করে ঘুরছে মানুষ
যুগান্তরের ঘূর্ণিপাকে।’’ —সংকল্প, কাজী নজরুল ইসলাম
57. ‘‘সাহেব কহেন, ‘চমৎকার! সে চমৎকার!
মােসাহেব বলে, চমংকার সে হতেই হবে যে।
হজুরের মতে অমত কার?’’ —তােষামােদ, কাজী নজরুল ইসলাম
58. ‘‘মেঘ বৃষ্টি আলাের দেশে
নদী চলে জমিন ঘেষে।’’ —জীবনানন্দ দাশ
59. ‘‘সমস্ত দিনের শেষে শিশিরের শব্দের মতাে সন্ধ্যা নামে।’’ —জীবনানন্দ দাশ
60. ‘‘আমারে ছাড়িয়া এত ব্যাথা যার কেমন করিয়া হয়,
কবর দেশেতে ঘুমিয়ে রয়েছে নিঝুম নিরালায়।’’ —কবর, জসীম উদ্দিন
61. ‘‘বাপের বাড়িতে যাইবার কালে কহিত ধরিয়া পা,
আমারে দেখিতে যাইও কিন্তু উজান-তলীর গা।’’ —-জসীমউদ্দীন
62. ‘‘এতটুকু তারে ঘরে এনছিনু সােনার মতন মুখ,
পুতুলের বিয়ে ভেঙে গেল বলে কেঁদে ভাসাইত বুক।’’ —- কবর, জসীমউদ্দীন
63. ‘‘পার্শ্বে জ্বলিয়া মাটির প্রদীপ বাতাসে জমায় খেল;
আঁধারের সাথে যুঝিয়া তাহার ফুরায়ে এসেছে তেল।’’ —পল্লীজননী, জসীম উদ্দীন
64. ‘‘মিষ্টি তাহার মুখটি হতে হাসির প্রদীপ রাশি,
থাপড়েতে নিভিয়ে গেছে দারুণ অভাব আসি।’’ —আসমানী, জসীম উদদীন
65. ‘‘এ আমার ছােট ছেলে, যে নেই এখন,
পাথরের টুকরাের মতন
ডুবে গেছে আমাদের গ্রামের পুকুরে
বছর তিনেক আগে কাক-ডাকা গ্রীত্বের দুপুরে।’’ —শামসুর রাহমান
66. ‘‘তােমার মুখের দিকে আজ আর যায় না তাকানাে
বর্ণমালা, আমার দুঃখিনী বর্ণমালা।’’ —শামসুর রাহমান