গবেষণা, প্রবন্ধ বা বই লেখার ক্ষেত্রে ধারণা বা ডেটা তৈরির জন্য প্রায়ই উৎসের প্রয়োজন হয়। রেফারেন্স (Reference) এবং গ্রন্থপঞ্জির (Bibliography) মাধ্যমে সেই উৎসের কৃতিত্ব দেওয়া হয়ে থাকে।
এগুলো যে কোন গবেষণা প্রকল্প বা বই লেখায় একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, কারণ এটি অন্যদের কাজ স্বীকার করতে সাহায্য করে এবং পাঠকদের তথ্যের মূল উৎস খুঁজে পেতে সাহায্য করে। রেফারেন্স ও গ্রন্থপঞ্জি শুধুমাত্র চুরির ঘটনাকেই রোধ করে না বরং এটাও ইঙ্গিত করে যে, লেখক বা গবেষক তথ্য পেতে বিভিন্ন উৎসের সন্ধান করেছে।
গবেষক বা লেখক যেসব উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছেন সেগুলোর স্বীকার বা পরোক্ষভাবে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের মাধ্যমকে রেফারেন্স বলে। রেফারেন্সকে অন্যের কাজের কৃতিত্ব হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
রেফারেন্স বিভিন্ন বই, গবেষণাপত্র, ম্যাগাজিন, জার্নাল, সংবাদপত্র, ইন্টারভিউ ট্রান্সক্রিপ্ট, ওয়েবসাইট, ব্লগ, এবং ভিডিও থেকে সংগ্রহ করা হয়। এগুলো পাঠককে সরাসরি উদ্ধৃতি, টেবিল, পরিসংখ্যান, ফটো ইত্যাদির মূল উৎস সম্পর্কে অবহিত করতে ব্যবহৃত হয়।
গবেষণা প্রতিবেদনের শেষে গ্রন্থপঞ্জি দেওয়া হয়। গ্রন্থপঞ্জিতে বই, ম্যাগাজিন, জার্নাল, ওয়েবসাইট বা অন্যান্য প্রকাশনার একটি তালিকা থাকে, যা গবেষণা বিষয়ের সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত।
গ্রন্থপঞ্জি পাঠককে সাহিত্য এবং লেখককে কী প্রভাবিত করেছে সে সম্পর্কে তথ্য পেতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
১. রেফারেন্স উৎসের তালিকা সরবরাহ করে, যা গবেষণার কাজে ব্যবহৃত হয়েছে। বিপরীতভাবে, একটি গ্রন্থপঞ্জি সমস্ত উৎসের তালিকা সরবরাহ করে।
২. রেফারেন্সে প্রাথমিক উৎসের স্বীকৃতি দেওয়া হয়। বিপরীতে, একটি গ্রন্থপঞ্জিতে প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক উত্সের কৃতিত্ব দেয়।
৩. গবেষণাপত্রে ব্যবহৃত রেফারেন্সগুলো বর্ণানুক্রমিক বা সংখ্যাসূচকভাবে সাজানো হয়। বিপরীতে, গ্রন্থপঞ্জিতে ব্যবহৃত উৎসেরসমূহের তালিকা সংখ্যাসূচকভাবে সাজানো হয়।
৪. রেফারেন্সে কেবলমাত্র সেই উত্সগুলো বিবেচনায় নেয় যা গবেষণায় উদ্ধৃত করা হয়েছে। গ্রন্থপঞ্জিতে গবেষণা সম্পর্কিত প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ তথ্যের উৎসসমূহের তালিকা ব্যবহার করা হয়, আপনি আপনার গবেষণাপত্রে বিশেষভাবে উল্লেখ করুন বা না করুন তা বিবেচ্য নয়।
৫. গবেষণাপত্র বা বইয়ের শেষে রেফারেন্স দেওয়ার প্রধান উদ্দেশ্য হল বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন ও গবেষকের ধারণা বা যুক্তিকে সমর্থন। বিপরীতে, গ্রন্থপঞ্জি যুক্তি সমর্থন করার জন্য ব্যবহার করা হয় না।
৬. থিসিস এবং গবেষণায় রেফারেন্স ব্যবহৃত হয়। অন্যদিকে, জার্নাল পেপার এবং গবেষণা কাজের ক্ষেত্রে গ্রন্থপঞ্জি ব্যবহার করা হয়।