কিম জং উন কে?

কিম জং উন কে
কিম জং-উন (kim jong un) হলেন একজন উত্তর কোরিয়ার রাজনৈতিক কর্মকর্তা যিনি উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা (২০১১–বর্তমান) এবং কোরিয়ান ওয়ার্কার্স পার্টির প্রথম সেক্রেটারি হিসেবে তার পিতা কিম জং ইলের উত্তরসূরি হন। তার ক্ষমতার প্রথম বছরগুলো ছিলো নির্মম একীকরণ। তিনি উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচির প্রথম সূচনা করেন।
কিম জং-উনকে তার পিতার মৃত্যুর পর ২০১১ সালের ডিসেম্বরে, উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এপ্রিল ২০১২-এ তার বেশ কয়েকটি অফিসিয়াল খেতাব অর্জনের মাধ্যমে তারঁ ক্ষমতা বৈধ করা হয়েছিল যেমন; কোরিয়ান ওয়ার্কার্স পার্টির প্রথম সেক্রেটারি, কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশনের চেয়ারম্যান, এবং জাতীয় প্রতিরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান, যা ছিল দেশের সর্বোচ্চ আমলাতান্ত্রিক কর্তৃপক্ষ।
বর্তমান পৃথিবীর জেদি, একরোখা রাষ্ট্র নায়ক বলা হয় তাকে। বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী দেশ আমেরিকাও কিমকে ভয় করে চলে। স্বৈরতান্ত্রিক উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম সম্পর্কে চমকপদ তথ্য নিয়ে থাকছে আজকের পর্ব।

কিম জং উন এর জীবনী

কিম জং উন ৮ জানুয়ারি ১৯৮৪ সালে, গণপ্রজাতন্ত্রি উত্তর কোরিয়ার পিয়ং ইয়াং, অঞ্চলে জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর পিতা কিম জং ইল এবং মা সংগীতশিল্পী কো ইয়ং-হি। কিমের বোন হচ্ছে কিম ইয়ো জং। কিমের ভাই কিম জং চোল। কিমের এ বড়ভাইয়ের রাজনীতির চেয়ে সংগীতই প্রিয় তাই তার অফিশিয়াল কোনো পদবি নেই। কিম জং ইলের তিন ছেলের মধ্যে কনিষ্ঠ ছেলে হচ্ছে কিম জং-উন। কিমের দাম্পত্য সঙ্গী রি সোল জু এবং সন্তান কিম জু এ
আগস্ট ১৯৯৬,  তিনি সুইজারল্যান্ডের বার্নের আন্তর্জাতিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। কিম তার বড় ভাই কিম জং চুলের সাথে যোগ দিতে সুইজারল্যান্ডের উদ্দেশ্যে যান। এরপর তারা বার্নের বেসরকারী, ইংরেজী ভাষার আন্তর্জাতিক বিদ্যালয়ে  ভর্তি হন ।
শৈশব এবং উত্থান
 
কিম জং ইলের তিন ছেলের মধ্যে কনিষ্ঠ ছেলে কিম জং-উন। জীবনের বেশিরভাগ সময়ে জনগণের নজরে বাহিরে রেখেছিলেন তাঁর পিতা। ফলে তাঁর সম্পর্কে খুব কমই জানা ছিল মানুষের। সুইজারল্যান্ডের ইন্টারন্যাশনাল বার্নে পড়াশোনা শেষ করে তিনি ২০০২ থেকে ২০০৭  সাল পর্যন্ত পিয়াংইয়াংয়ের কিম ইল-সাং জাতীয় ওয়ার কলেজে পড়াশোনা করেছিলেন। কৈশোর বয়সে প্রথম কিম জং-উন তার বাবার সাথে সামরিক তদারক শুরু করেছিলেন।
২০০৯ সালে, তাঁকে তার পিতার উত্তরাধিকার হিসাবে তৈরি করা হয়েছিল। তাই ২০০৯ সালে তাঁকে সুপ্রিম পিপলস অ্যাসেমব্লির প্রার্থী হিসাবে তালিকাভুক্ত করা হয় এবং এপ্রিলে জাতীয় প্রতিরক্ষা কমিশনে পদ দেওয়া হয়। ২০০৯ সালের মাঝামাঝি সময়ে কিম জং-উনকে ‘‘ব্রিলিয়ান্ট কমরেড’’ উপাধি প্রদান করা হয়। ২০১০ সালের সেপ্টেম্বরে, কিম জং-উনকে জেনারেল পদে ভূষিত করা হয়। যদিও তার কোনো সামরিক অভিজ্ঞতা ছিল বলে জানা যায়নি।
রাজনৈতিক দল
 
ওয়ার্কাস পার্টি অব কোরিয়া। কোরিয়ার ওয়ার্কার্স পার্টি ক্ষমতার উপরে একচেটিয়া অধিকার করে রেখেছে এবং অন্যান্য দলগুলির তাদের সাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা গ্রহণের অনুমতি নেই। যার ফলে উত্তর কোরিয়া একটি একদলীয় রাষ্ট্র হিসাবে পরিণত হয়েছে।
কিমের রাজনৈতিক আদর্শ
 
কিম জং-উন ডব্লিউপিকে-র বর্তমান চেয়ারম্যান। তুলনামূলকভাবে উত্তর কোরিয়ার অন্যান্য সংস্থার সাথে তুলনা করে ডব্লিউপিকে সর্বাধিক আদর্শিক দল হিসাবে বিবেচিত করা হয় এবং কিম জং উন নিজেকে সার্বভৌমত্ব এবং জাতীয়তাবাদের বিপ্লবী পথের রক্ষাকারী হিসাবে দেখায়। পাশাপাশি তিনি সমাজতান্ত্রিক আদর্শের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
উত্তর কোরিয়ার কিছু অজানা বিষয়
 
প্রায় ২৫ মিলিয়ন জনগণের বাস উত্তর কোরিয়ায়। দেশটি কমিউনিস্ট শাসনের অধীনে এবং তাদেরকে নির্দিষ্ট নিয়মের মধ্যে চলতে হয়। কোরিয়ার মানুষের জীবনের সমস্ত ক্ষেত্রকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
কোরিয়ার লোকজনকে বাহিরের দেশে যেতে হলে সরকারের অনুমতি চাইতে হবে এবং ভ্রমন পিপাসু মানুষেরা এদেশে প্রবেশ করাও বেশ কঠিন।
টিভি এবং রেডিওগুলোতে শুধুমাত্র রাষ্ট্রীয় খবর প্রচার করা হয়। যদি কেউ বিদেশী চ্যানেল কিংবা খবর দেখে তবে তাকে কঠিন শাস্তির মুখোমুখি হতে হয়।
ভয়াবহ দরিদ্র উত্তর কোরিয়ানরা দৈনন্দিন এর প্রয়োজনীয় জিনিস কেনারও টাকা থাকে না।
উত্তর কোরিয়ার জনগন বেশিরভাগ সময় খাদ্যের জন্য জাতিসংঘের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়, কারণ তাদের দেশে পর্যাপ্ত পরিমাণ খাদ্য  তৈরি করতে পারেনা।

Similar Posts