আহ্নিক গতি কি
পৃথিবী তার নিজ অক্ষের চারদিকে দিনে একবার নির্দিষ্ট গতিতে পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে আবর্তন করে, পৃথিবীর এই আবর্তনকে আহ্নিক গতি (diurnal motion) বলে।
আহ্নিক গতি হল মহাকাশের প্রতিটি গ্রহ, উপগ্রহ, নক্ষত্র, এবং নভস্থিত বস্তুর একটি নির্দিষ্ট সাধারণ গতি। পৃথিবী একবার তার নিজ অক্ষে আবর্তনে সময় নেয় প্রায় ২৩ ঘন্টা ৫৬ মিনিট ৪ সেকেন্ড। তবে, পৃথিবীর এই আহ্নিক গতি স্থানভেদে ভিন্ন হয় যেমন নিরক্ষরেখায় পৃথিবীর পরিধি বেশি হওয়ায় সেখানে আহ্নিক গতিও বেশি।
পৃথিবী পুরোপুরি গোল না। ফলে, এর পৃষ্ঠ সব জায়গায় সমান নয়। তাই, পৃথিবীপৃষ্ঠের সব স্থানের আবর্তন বেগও সমান নয়। লক্ষ্য করলে দেখা যায়, পৃথিবীর এক প্রান্তে দিন এবং অন্য প্রান্তে রাত হয়। এটি হয় কেবলমাত্র আহ্নিক গতির কারণে। পৃথিবীর যে অংশ সূর্যের সামনে আসে সে অংশে দিন হলে বিপরীত অংশে হয় রাত৷
আহ্নিক গতির ফলাফল
১. রাত-দিন হয়।
২. সময় নির্ধারণ হয়।
৩. জোয়ার-ভাটার সৃষ্টি হয়। নদী বা সমুদ্রে দিনে দুবার জোয়ার এবং দু’বার ভাটা হয়৷
৪. বায়ু প্রবাহ ও সমুদ্রস্রোত তৈরি হয়।
বার্ষিক গতি কি
সূর্যের মহাকর্ষ বলের প্রভাবে পৃথিবী নিজ অক্ষের ওপর ঘুরতে ঘুরতে একটি নির্দিষ্ট পথে, নির্দিষ্ট দিকে, এবং একটি নির্দিষ্ট সময়ে সূর্যের চারদিকে ঘুরছে, সূর্যের চারদিকে পৃথিবীর বার্ষিক পরিক্রমা বা আবর্তনকে বার্ষিক গতি (annual motions) বলে।
সূর্যের চারপাশে পৃথিবীকে একবার আবর্তন করতে সময় লাগে ৩৬৫ দিন ৫ ঘন্টা ৪৮ মিনিট ৪৭ সেকেন্ড।
বার্ষিক গতির ফলাফল
১. দিবারাত্রির হ্রাস বৃদ্ধি ঘটে: যেমন পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধে দীর্ঘতম দিন এবং ক্ষুদ্রতম রাত ২১ জুন। তখন দক্ষিণ গোলার্ধে দিন ছোট এবং রাত বড়। ২১শে মার্চ ও ২৩ সেপ্টেম্বর, পৃথিবীর উত্তর ও দক্ষিণ গোলার্ধে দিন রাত সমান হয়। ২২ ডিসেম্বর উত্তর গোলার্ধে দিন ছোট এবং রাত বড়। তখন দক্ষিণ গোলার্ধে দিন বড় এবং রাত ছোট হয়।
২. ঋতু পরিবর্তন: ২১শে মার্চ, পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধে বসন্তকাল এবং দক্ষিণ গোলার্ধে শরৎকাল। ২৩ সেপ্টেম্বর, উত্তর গোলার্ধে শরৎকাল এবং দক্ষিণ গোলার্ধে বসন্তকাল। ২১ জুন, উত্তর গোলার্ধে গ্রীষ্মকাল এবং দক্ষিণ গোলার্ধে শীতকাল। ২২ ডিসেম্বর, উত্তর গোলার্ধে শীতকাল এবং দক্ষিণ গোলার্ধে গ্রীস্মকাল।
৩. সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণ সংগঠিত হয়।
৪. কর্কটক্রান্তি ও মকরক্রান্তির মধ্যে পার্থক্য হয়।
৫. নক্ষত্রের স্থান পরিবর্তিত হয়।