গ্যালাক্সি কাকে বলে? স্বাভাবিক গ্যালাক্সি | রেডিও গ্যালাক্সি | কোয়াসার

গ্যালাক্সি কাকে বলে?

অনেকগুলো নক্ষত্রের সমাবেশকে বলা হয় গ্যালাক্সি। আমরা যে গ্যালাক্সিতে বাস করি তার নাম আকাশগঙ্গা ( Milky Way)। সূর্য ও খালি চোখে দৃশ্যমান সকল নক্ষত্র এই আকাশ গঙ্গা বা ছায়াপথে রয়েছে। এই গ্যালাক্সিতে নক্ষেত্রের সংখ্যা প্রায়  1011 । এ ছায়াপথ ছাড়াও মহাবিশ্বে রয়েছে কোটি কোটি গ্যালাক্সি। এদের খালি চোখে দেখা যায় না। এসব গ্যালাক্সির আকার ও আয়তন বিভিন্ন। কোনোটা উপবৃত্তাকার আবার কোনোটা সর্পিল। সবচেয়ে উজ্জ্বল কিছু কিছু গ্যালাক্সি উপবৃত্তাকার। অ্যানড্রোমিটা একটি সর্পিল গ্যালাক্সি খালি চোখে যা দেখা যায় না। আমাদের গ্যালাক্সি (ছায়াপথ) থেকে এর দূরত্ব 2×106 আলোকবর্ষ। সবচেয়ে শক্তিশালী টেলিস্কোপ দিয়েও অনেক গ্যালাক্সি দৃষ্টিগোচর হয় না।

 

গ্যালাক্সি প্রধানত দু প্রকার। যথা-

  • স্বাভাবিক গ্যালাক্সি (Normal Galaxies)
  • রেডিও গ্যালাক্সি (Radio Galaxies)।

স্বাভাবিক গ্যালাক্সি (Normal Galaxies)

আমরা জানি যে, গ্যালাক্সি হলো মহাবিশ্বের মৌলিক উপাদান। আমাদের ছায়াপথ ছাড়াও মহাবিশ্বে লক্ষ লক্ষ গ্যালাক্সি রয়েছে। এদের বলা হয় স্বাভাবিক গ্যালাক্সি। স্বাভাবিক গ্যালাক্সি তিন প্রকার হয়। যথা-

১) উপবৃত্তাকার গ্যালাক্সি

২) সর্পিল বা পেঁচানো গ্যালাক্সি

৩) বিষম গ্যালাক্সি

 

১) উপবৃত্তাকার গ্যালাক্সিঃ যে সব গ্যালাক্সি দেখতে উপবৃত্তাকার চাকতির মতো তাদের বলা হয় উপবৃত্তাকার গ্যালাক্সি। এগুলো সাধারণত লোহিত দানব ও শ্বেত বামন নক্ষত্র নিয়ে গঠিত। গ্যালাক্সির প্রায় শতকরা ১৮ ভাগ উপবৃত্তাকার গ্যালাক্সি।

২) সর্পিল বা পেঁচানো গ্যালাক্সিঃ অধিকাংশ স্বাভাবিক গ্যালাক্সি (প্রায় ৮০%) হলো পেঁচানো গ্যালাক্সি। আমাদের ছায়াপথ (Milky way) ও অ্যানড্রোমিডা এ ধরনের গ্যালাক্সি।

৩) বিষম গ্যালাক্সিঃ এ ধরনের গ্যালাক্সির কোনো নির্দিষ্ট আকার নেই। কনিষ্ঠ স্বাভাবিক গ্যালাক্সি হলো বিষম গ্যালাক্সি। এরা মধ্যবয়সী। স্বাভাবিক গ্যালাক্সি হলো বিষম গ্যালাক্সি। এরা মধ্যবয়সী। স্বাভাবিক গ্যালাক্সির প্রায় শতকরা  ২ ভাগ বিষম গ্যালাক্সি।

 

রেডিও গ্যালাক্সি (Radio Galaxies)

যেসব গ্যালাক্সি রেডিও কম্পাঙ্কের তাড়িতচৌম্বক বিকিরণ নিঃসরণ করে তাদের রেডিও গ্যালাক্সি বলে। রেডিও গ্যালাক্সিকে দু’ভাগে ভাগ করা যায়।

ক) সাধারণ রেডিও গ্যালাক্সি ও

খ) কোয়াসার।

 

ক) সাধারণ রেডিও গ্যালাক্সিঃ যে স্বাভাবিক আলোকীয় গ্যালাক্সির দুই পাশে দুটি প্রবল রেডিও উৎস রয়েছে, এদের সাধারণ রেডিও গ্যালাক্সি বলে। এটা দেখতে অনেকটা কোনো ব্যক্তির মুখমন্ডলের দুই পাশে দুটি কানের মতো। সাধারণ রেডিও গ্যালাক্সি 10 MHz থেকে 100 MHz কম্পাঙ্কের তাড়িতচৌম্বক তরঙ্গ বিকিরণ করে।

খ) কোয়াসারঃ কোয়াসার হলো আধা নাক্ষত্রিক রেডিও উৎস। এদের গঠন নক্ষত্রের ন্যায় এবং এরা ক্ষমতাশীল বেতার তরঙ্গ নিঃসরণ করে। এদের রেডিও ক্ষমতা আউটপুট 1037 থেকে 1038 ওয়াট পাল্লার মধ্যে। কোয়াসার হলো দূরবর্তী জ্ঞাত বস্তু। এরা পৃথিবীর থেকে লক্ষ লক্ষ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। এরা যেন মহাবিশ্বের সীমানায় রয়েছে। এরা পৃথিবী থেকে 0.9 c বেগে সরে যাচ্ছে। এদের আকার খুব ছোট। এরা অতি ঘন গ্যালাক্সি গঠন করে। এদের ঘনত্ব অত্যন্ত বেশি এবং এদের মহাকর্ষ বলও অনেক বেশি। এ পর্যন্ত প্রায় ১৫০ টি কোয়াসার শনাক্ত করা গেছে।