জীববিজ্ঞান

শ্রেণিবিন্যাস কাকে বলে? শ্রেণিবিন্যাসের উদ্দেশ্য, শ্রেণিবিন্যাসের প্রয়োজনীয়তা

1 min read

শ্রেণিবিন্যাস কাকে বলে?

পারস্পরিক সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্যের উপর ভিত্তি করে জীবনকে বিভিন্ন দলে বিভক্ত করাকে বলা হয় শ্রেণিবিন্যাস

আজ পর্যন্ত বিভিন্ন উদ্ভিদের চার লক্ষ ও প্রাণীর প্রায় তের লক্ষ প্রজাতির নামকরণ ও বর্ণনা করা হয়েছে। তবে এ সংখ্যা চূড়ান্ত নয়, কেননা প্রায় প্রতিদিনই আরও নতুন নতুন প্রজাতির বর্ণনা সংযুক্ত হচ্ছে। অনমুান করা হয় যে, ভবিষ্যতে সব জীবের বর্ণনা শেষ হলে এর সংখ্যা দাঁড়াবে প্রায় এক কোটিতে।

জানা বোঝা এবং শেখার সুবিধার্থে এই অসংখ্য জীবকে সুষ্ঠুভাবে বিন্যাস করা বা সাজানোর প্রয়োজন। জীবজগৎকে একটি স্বাভাবিক নিয়মে শ্রেণিবিন্যাস করার প্রয়োজনীয়তা অবশ্য অনেক আগেই প্রকৃতিবিদগণ অনুভব করেছিলেন। সেই প্রয়োজনের তাগিদেই জীববিজ্ঞানের একটি স্বতন্ত্র শাখা হিসেবে এখন গড়ে উঠেছে। ট্যাক্সোনমি বা শ্রেণিবিন্যাসবিদ্যা।

শ্রেণিবিন্যাসের লক্ষ্য মূলত একটাই তা হচ্ছে এই বিশাল ও বৈচিত্র্যময় জীবজগৎকে সহজভাবে অল্প পরিশ্রমে এবং অল্প সময়ে সঠিকভাবে জানা।

শ্রেণিবিন্যাসে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন সুইডিস প্রকৃতিবিদ ক্যারোলাস লিনিয়াস (১৭০৭ – ১৭৭৮)। ১৭৩৫ সালে আপসালা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চিকিৎসাশাস্ত্রে ডিগ্রি লাভের পর তিনি ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যানাটমির অধ্যাপক নিযুক্ত হয়েছিলেন। বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিদ, বিশেষ করে ফুল সংগ্রহ ও জীবের শ্রেণিবিন্যাসে তার অত্যন্ত আগ্রহ ছিল। তিনিই সর্বপ্রথম জীবের পূর্ণ শ্রেণিবিন্যাসের এবং নামকরণের ভিত্তি প্রবর্তন করেন। অসংখ্য জীব নমুনার বৈশিষ্ট্য পর্যবেক্ষণ করে তিনি জীবজগতকে দুটি ভাগে যথা উদ্ভিদজগৎ ও প্রাণিজগৎ হিসেবে বিন্যস্ত করেন।

শ্রেণিবিন্যাসের উদ্দেশ্য

শ্রেণিবিন্যাসের উদ্দেশ্য হলো প্রতিটি জীবের দল ও উপদল সম্বন্ধে জ্ঞান আহরণ করা। জীবজগতের ভিন্নতার প্রতি আলোকপাত করে আহরিত জ্ঞানকে সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা, পূর্ণাঙ্গ জ্ঞানকে সংক্ষিপ্তভাবে উপস্থাপন করা এবং প্রতিটি জীবকে শনাক্ত করে তার নামকরণের ব্যবস্থা করা, সর্বোপরি জীবজগৎ ও মানব কল্যাণে প্রয়োজনীয় জীবসমূহকে শনাক্ত করে তাদের সংরক্ষণে সচেতন হওয়া।

শ্রেণিবিন্যাসের প্রয়োজনীয়তা

শ্রেণিবিন্যাস এর সাহায্যে পৃথিবীর সকল উদ্ভিদ ও প্রাণী সম্বন্ধে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে সহজে অল্প পরিশ্রমে ও অল্প সময়ে জানা যায়। নতুন প্রজাতি শনাক্ত করতে শ্রেণিবিন্যাস অপরিহার্য। প্রাণীকুলের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক বিভিন্ন তথ্য ও উপাত্ত পাওয়া যায়। ধীরে ধীরে প্রাণীকুলের মাঝে যে পরিবর্তন ঘটেছে সে সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। অসংখ্য প্রাণীকুলকে একটি নির্দিষ্ট রীতিতে বিন্যস্ত করে গোষ্ঠীভুক্ত করা যায়। প্রাণীর মধ্যে মিল-অমিল এর ভিত্তিতে পরস্পরের মধ্যে সম্বন্ধ নির্ণয় করা যায়। প্রাণী সম্পর্কে সামগ্রিক ও পরিকল্পিত জ্ঞান নির্ণয় করা যায়। যেমন – সব এককোষী প্রাণীকে একটি পর্বে এবং বহুকোষী প্রাণীদের নয়টি পর্বে ভাগ করা হয়। তাই শ্রেণিবিন্যাসের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।

5/5 - (15 votes)
Mithu Khan

I am a blogger and educator with a passion for sharing knowledge and insights with others. I am currently studying for my honors degree in mathematics at Govt. Edward College, Pabna.

x