আমাদের চারপাশে বিভিন্ন ধরণের অণুবীক্ষণিক জীব রয়েছে যেগুলো সাধারণত খালি চোখে দেখা যায় না। এদের মধ্যে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া অন্যতম। ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস বেশির ভাগ রোগের কারণ। তবে, কিছু ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস মানুষের উপকারেও লাগে। এই আর্টিকেলে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার সংজ্ঞা, পার্থক্য ও উদাহরণ বর্ণনা করা হল।
ভাইরাস কি?
ভাইরাস (Viruses) হলো অতি অণুবীক্ষণিক অকোষীয় রাসায়নিক বস্তু যা প্রোটিন ও নিউক্লিড এসিড দ্বারা গঠিত। এটি পোষক দেহের বাহিরে জড় পদার্থের মত অবস্থান করে কিন্তু পোষক দেহের অভ্যন্তরে সক্রিয় হয় ও বংশবৃদ্ধি করতে পারে। ১৮৯২ সালে রুশ জীবাণুবিদ আইভানোভস্কি ভাইরাস আবিষ্কার করেন। ভাইরাসের উদাহরণের মধ্যে রয়েছে যেমন, ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস, চিকেনপক্স ভাইরাস, এইচআইভি, পোলিও ভাইরাস, ইবোলা ভাইরাস ইত্যাদি।
ব্যাকটেরিয়া কি?
ব্যাকটেরিয়া (Bacteria) হল অতি ক্ষুদ্র, আদি নিউক্লিয়াসযুক্ত, অসবুজ এবং এককোষী অণুজীব। এটি মাটিতে, সমুদ্রে, এবং মানুষের অন্ত্রের ভিতরে বসবাস করতে পারে। ব্যাকটেরিয়া সাধারণত দ্বিবিভাজন প্রক্রিয়ায় বংশ বিস্তার করে। ১৬৭৫ সালে লিউয়েন হুক সর্বপ্রথম ব্যাকটেরিয়া আবিষ্কার করেন। ব্যাকটেরিয়ার উদাহরণের মধ্যে রয়েছে যেমন, Streptococcus pneumoniae, Vibrio cholerae, Lactobacillus, Bacillus lacticacidi, Acetobacter xylinum ইত্যাদি।
ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার পার্থক্য
ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার প্রধান পার্থক্যগুলো টেবিল আকারে দেওয়া হল।
ভাইরাস | ব্যাকটেরিয়া | |
1. | ভাইরাস হলো অতি অণুবীক্ষণিক অকোষীয় রাসায়নিক বস্তু। | ব্যাকটেরিয়া হল অতি ক্ষুদ্র, আদি নিউক্লিয়াসযুক্ত, অসবুজ, এবং এককোষী অণুজীব। |
2. | জীবিত বস্তুর সংস্পর্শে না আসা পর্যন্ত বংশ বিস্তার করতে পারে না। | এরা পরজীবী, মৃতজীবী বা স্বনির্ভর হতে পারে। নিজের বংশ নিজেই বিস্তার করতে পারে |
3. | নিউক্লিয়াস ও সাইটোপ্লাজম নেই। | এতে সাইটোপ্লাজম, বিভিন্ন ক্ষুদ্রাঙ্গ ও আদি প্রকৃতির নিউক্লিয়াস আছে। |
4. | নিজস্ব কোনো বিপাকীয় এনজাইম নেই। | এনজাইম থাকে। |
5. | জেনেটিক উপাদান DNA ও RNA এর যেকোন একটি দ্বারা গঠিত। | DNA ও RNA উভয়ই থাকে। |
6. | ভাইরাসের আকার 20-400 ন্যানোমিটার। | ব্যাকটেরিয়ার আকার 200-1000 ন্যানোমিটার। |
7. | উদাহরণ-ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস, চিকেনপক্স ভাইরাস, এইচআইভি, পোলিও ভাইরাস, ইবোলা ভাইরাস। | উদাহরণ-Streptococcus pneumoniae, Vibrio cholerae, Bacillus lacticacidi, Acetobacter xylinum. |