কোনাে ভাষার বাক প্রবাহকে সূক্ষভাবে বিশ্লেষণ করলে আমরা কতগুলাে মৌলিক ধ্বনি (Sound) পাই। বাংলা ভাষাতেও কতগুলাে মৌলিক ধ্বনি আছে।
বাংলা ভাষার মৌলিক ধ্বনিগুলােকে প্রধান দুই ভাগে ভাগ করা হয় :
- স্বরধ্বনি ও
- ব্যঞ্জনধ্বনি।
১. স্বরধ্বনি : যে সকল ধ্বনি উচ্চারণের সময় ফুসফুস-তাড়িত বাতাস বেরিয়ে যেতে মুখবিবরের কোথাও কোনাে প্রকার বাধা পায় না, তাদেরকে বলা হয় স্বরধ্বনি (Vowel sound) । যেমন : অ, আ, ই, ইত্যাদি
২. ব্যঞ্জনধ্বনি : যে সকল ধ্বনি উচ্চারণের সময় ফুসফুস-তাড়িত বাতাস বেরিয়ে যেতে মুখবিবরের কোথাও না কোথাও কোনাে প্রকার বাধা পায় কিংবা ঘর্ষণ লাগে, তাদেরকে বলা হয় ব্যঞ্জনধ্বনি (Consonant sound) যেমন- ক, চ, ট, ত, প ইত্যাদি।
বর্ণ : ধ্বনি নির্দেশক চিহ্নকে বলা হয় বর্ণ (Letter) ।
স্বরবর্ণ : স্বরধ্বনি দ্যোতক লিখিত সাংকেতিক চিহ্নকে বলা হয় স্বরবর্ণ। যেমন – অ, আ, ই, ঈ, উ ইত্যাদি
ব্যঞ্জনবর্ণ : ব্যঞ্জনধ্বনি দ্যোতক লিখিত সাংকেতিক চিহ্নকে বলা হয় ব্যঞ্জনবর্ণ। যেমন-ক ইত্যাদি।
বর্ণমালা : যে কোনাে ভাষায় ব্যবহৃত লিখিত বর্ণসমষ্টিকে সেই ভাষার বর্ণমালা (Alphabet) কলা হয়।
বাংলা বর্ণমালা বাংলা বর্ণমালায় মােট পঞ্চাশ (৫০)টি বর্ণ রয়েছে। তার মধ্যে স্বরবর্ণ এগার (১১)টি এবং ব্যঞ্জনবর্ণ উনচল্লিশটি (৩৯)টি।
![](https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEii5XBF9AJCmIu00aCO_xzl-q4y-gU7IPUr4NAlWiRkTF4s2ux_yTAbzdJ1hVk7vYGqaNJX5OhhCvTvDr_0gMBu3g5eUH0OUsnp88_-JPtY_j55Ff1Tl8G7ijIV2hXfMV7_g-JMZLLnL02aANoawsRkajREaGG-uCPaoPIzTKkqxIw2dDQ2y7OfEc3T/s16000/2-1.png)
![](https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEj9LarlF_NpDT6Tg4EXxC2DoEq5yUXwjme34q5xekPtTyPCllXRH53IGkXdDD20o9MDZzw5efgyJ5lrEtip_uRv3GcUV8JFVdrmBKhRebz8ihOjBuscNwyzH2ysidF2KK1DteGNPtj1K97yi4luuHZbtWwZoJSNY9E9wFbrlA2eIfSVsPgbd_m852vE/s16000/3.png)
স্বর ও ব্যঞ্জনবর্ণের সংক্ষিপ্ত রূপ
কার ও ফলা
কার :
স্বরবর্ণের এবং কতগুলাে ব্যঞ্জনবর্ণের দুটি বূপ রয়েছে। স্বরবর্ণ যখন নিরপেক্ষ বা স্বাধীনতাবে ব্যবহ্ৃত হয়, অর্থাৎ কোনাে বর্ণের সঙ্গে যুক্ত হয় না, তখন এর পূর্ণবূপ লেখা হয়। একে বলা হয় প্রাথমিক বা পূর্ণরূপ।
যেমন – অ, আ, ই, ঈ, উ, উ, ঋ, এ, ঐ, ও, ঔ।
এই বূপ বা form শব্দের আদি, মধ্য, অন্ত ব্যঞ্জনধ্বনির সাথে যুক্ত হয়ে উচ্চারিত হয়, তখন সে স্বরধ্বনিটির বর্ণ সংক্ষিপ্ত আকারে ব্যঞ্জনবর্ণের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ব্যবহ্ৃত হয়। স্বরবর্ণের এ সংক্ষিপ্ত রূপকে বলা হয় সংক্ষিপ্ত স্বর বা কার।
ফলা :
স্বরবর্ণ যেমন ব্যঞ্জনবর্ণের সঙ্গে যুক্ত হলে আকৃতির পরিবর্তন হয়, তেমনি কোনাে কোনাে ব্যঞ্জনবর্ণও কোনাে কোনাে স্বর কিংবা অন্য ব্যঞ্জনবর্ণের সঙ্গে যুক্ত হলে আকৃতির পরিবর্তন হয় এবং কখনাে কখনাে সংক্ষিপ্তও হয়।
যেমন-ম্য, ম্ৰ ইত্যাদি। বরবর্ণের সংক্ষিপ্ত রূপকে যেমন কার বলা হয়, তেমনি ব্যঞ্জনবর্ণের সংক্ষিপণ্ত রূপকে বলা হয় ফলা। এভাবে যে ব্যঞ্জনটি যুক্ত হয়, তার নাম অনুসারে ফলার নামকরণ করা হয়। যেমন- ম-এ য-ফলা = ম্য, ম- এ র-ফলা = ম্ৰ, ম-এ ল- ফলা = স্ন, ম-এ ব-ফলা = ম্ব। র-ফলা ব্যঞ্জনবর্ণের পরে হলে লিখতে হয় নিচে। ম্র আবার র যদি ম-এর আগে উচ্চারিত হয়, যেমন-