ব্রণ এবং ব্রণের দাগ কমানোর উপায়

আজকে আপনাদের জানাবো ব্রণ কমানোর উপায় গুলো কি কি।

ব্রণ কী

ত্বকের ঔজ্জ্বল্য ও সৌনদর্য্য নষ্ট করে ব্রণ এবং ব্রনের দাগ। এই সমস্যার সবচেয়ে বেশি সম্মুখীন হয় টিনেজার ছেলে মেয়েরা।

আমাদের ত্বকের তৈলগ্রন্থি ব্যাকটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত হলে তাতে পুঁজ জমে আস্তে আস্তে আকারে বাড়তে থাকে এবং তা পরে ব্রণে পরিনত হয়৷

তাছাড়া বাজারের কেমিক্যাল জাতীয় এবং নকল কসমেটিক্স ব্যবহার করলেও ব্র্ণ হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

আমরা অনেকেই মেকাআপ প্রোডাক্ট ব্যবহার করি।

কিন্তু তা যদি নিজের স্কিন থেকে ভালো করে ক্লিন না করি এবং ডাবল ক্লিনজিং না করি তাহলেও ব্রণ হতে পারে৷

তাই ব্রণ এর হাত থেকে বাঁচতে চাইলে ঘরোয়া উপকরন ব্যবহার করে নিজের স্কিন কে সুন্দর রাখা উত্তম।

ব্রণ কমানোর উপায়

১. ব্রণ কমানোর উপায় হিসেবে শশার রসঃ

শশার রস অত্যন্ত কার্যকরী একটা উপায়। আর শশা মূলত আমাদের সবার ঘরেই কম বেশি থাকে।

বাইরে থেকে এসে শশার রস দিয়ে মুখ ধুয়ে নিতে পারি।

অথবা রেগুলার ঝামেলা কমাতে একদিন বেশি করে রস বানিয়ে তা ফ্রিজারে রেখে কিউব আকারে বানিয়েও নিজের স্কিনে ইউস করতে পারি যা আমাদের ওপেন পোরস এর সমস্যা দূর করতেও সাহায্য করবে।

২. ব্রণ কমানোর উপায় হিসেবে চালের গুড়া, মধু,শশার রসঃ

চালের গুড়া মূলত স্ক্রাব এর কাজ করে।

তবে  মুখে ব্রণ থাকাকালীন স্ক্রাব করা যাবে না।

চালের গুড়ার সাথে যাদের মধু তে এলার্জি নেই তারা মধু মিশিয়ে নিতে পারে এবং সামান্য শশার রস।

এই প্যাক যদি সপ্তাহে ২ দিন ব্যবহার করা যায় তবে আমাদের ব্ল্যাকহেডস, হোয়াইটহেডস এর সমস্যা ও দূর হবে এবং স্কিন থাকবে একদম ফ্রেশ এবং ক্লিন।

৩. ব্রণ কমানোর উপায় হিসেবে মূলতানি মাটিঃ

মুখে অতিরিক্ত তৈলাক্ত ভাব থাকলে মুখে ব্রনের সমস্যা হতে পারে। তাই যাদের তৈলাক্ত স্কিন তারা মুলতানি মাটির সাথে পানি বা গোলাপজল মিশিয়ে প্যাক বানিয়ে মুখে লাগাতে পারেন। মূলতানি মাটি মুখের তৈলাক্ততা কমাতে সাহায্য করবে৷

৪. কাঁচা হলুদ ও চন্দন গুড়াঃ

কাঁচা হলুদ ও চন্দনের গুড়া এই দুইটি উপাদান ই ব্রন দূর করার জন্য কার্যকরী উপাদান৷ সমান পরিমান কাঁচা হলুদ বাটা এবং চন্দন পানি দিয়ে পেষ্ট করে তা ব্রন আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

শুকানোর পর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে৷ এই মিশ্রনটি ব্রনের দাগ দূর করতেও সাহায্য করে।

৫. তুলসি পাতাঃ

তুলসি পাতায় রয়েছে আয়ুর্বেদিক গুন। তাই তুলসি পাতার রস ব্রন আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করে তারপর কুসুম গরম পানিতে ধুয়ে নিতে হবে।

৬. চন্দন কাঠের গুড়া, গোলাপ জল, লেবুর রসঃ

চন্দনের গুড়ার সাথে গোলাপ জল এবং লেবুর রস মিশিয়ে মুখে লাগাতে হবে।

তবে কারো যদি গোলাপ জল স্যুট না করে সেক্ষেত্রে মধু ব্যবহার করতে পারেন৷ এবং লেবুর রস অনেক সময় স্কিনে রেশ সৃষ্টি করে তাই চাইলে লেবুর রস ও স্কিপ করতে পারেন৷

মিশ্রন টি মুখে লাগিয়ে শুকিয়ে আসলে কুসুম গরম পানিতে মুখ ধুয়ে নিতে হবে৷

৭. দারুচিনি গুড়া, গোলাপজলঃ

প্রতিদিন গোলাপজল ব্যবহারে ব্রনের সমস্যা অনেকটাই কমে।

দারুচিনি গুড়ার সাথে গোলাপজল মিশিয়ে পেষ্ট তৈরী করে তা ব্রন আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষা করে ধুয়ে নিতে হবে।

এতে ব্রনের চুলকানি, ব্যথা অনেকটাই কমে যাবে।

৮. ডিমের সাদা অংশঃ

রাতে ঘুমানোর আগে ডিমের সাদা অংশ ব্রন আক্রান্ত স্থানে ম্যাসাজ করে সারারাত রাখতে পারেন। সকালে ধুয়ে নিলেই স্কিনের খসখসে ভাব দূর হয়ে মোলায়েম ভাব আসবে।

৯. মূলতানি মাটি, নিম পাতাঃ

৪-৫ টা নিম পাতা ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার করে পিষে পেষ্ট করে নিতে হবে।

তাতে মূলতানি মাটি মিশিয়ে প্যাক বানিয়ে মুখে লাগিয়ে ৩০ মিনিট রেখে হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।

ব্রণ ও ব্রণের দাগ কমানোর উপায় হিসেবে কিছু টিপসঃ

১. প্রতিদিন ৯-১০ গ্লাস পানি পান করতে হবে।

২. প্রতিদিন রাতের খাবারের পর যেকোনও ধরনের মৌসুমি ফল খান যা আপনার ত্বককে সতেজ রাখবে।

৩. যতটা সম্ভব তেলযুক্ত বা ফাষ্ট ফুড জাতীয় খাবার পরিহার করে চলতে হবে।

৩. বাইরে থেকে আসার পরই মুখ ফেইস ওয়াশ দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এছাড়া হালকা গরম পানির স্টীম নিতে পারেন যা ত্বকের জমে থাকা ধূলোবালি পরিষ্কার করবে।

৪.  নখ দিয়ে ব্রণ খোটার বাজে অভ্যাস থাকলে তা পরিহার করতে হবে৷ কেননা এটি সংক্রমন কে আরো বৃদ্ধি করে।

৫. স্কিনে ব্রন থাকাকালীন কোনো মেকাপ প্রোডাক্ট ব্যবহার না করাই উত্তম।

৬. আলাদা তোয়ালে ব্যবহার করা উত্তম।

তাছাড়া যারা অনেকদিন যাবত ব্রণ এর সমস্যায় ভুগছেন তারা আর অপেক্ষা না করে অভিজ্ঞ ডাক্তারের শরনাপন্ন হতে পারেন।

কেননা একটি মানুষের সবচেয়ে বড় মনোবল তার সৌন্দর্য্য। তাই নিজের মনোবল কে টিকিয়ে রাখতে সতর্ক হওয়া আবশ্যক।

Similar Posts