আজকে আমরা জানবো শ্রেনীবিন্যাসবিদ্যা কি এবং দ্বিপদ নামকরন কি।
শ্রেনীবিন্যাসবিদ্যা কি
জীবের শ্রেনীবিন্যাসবিদ্যা বিজ্ঞানের একটি শাখা যেখানে জীবজগতের বিভিন্ন সদস্যদের যথাক্রমে শনাক্তকরন এবং নামকরন করে তাদের বিভিন্ন দল ও উপদলে সাজিয়ে শ্রেনীবিন্যাস করাকেই শ্রেনীবিন্যাসবিদ্যা বলে।
শ্রেনীবিন্যাসবিদ্যা এর একক কি
বিচিত্র এই জীবজগত কে সহজ ও সুন্দর ভাবে জানার জন্য এদের কে ধাপে ধাপে বিভিন্ন দল ও উপদলে বিন্যস্ত করা হয়। এই ধাপগুলোকে বলা হয় শ্রেনীবিন্যাসের একক।
শ্রেনীবিন্যাস কে মূলত ৭ টি ধাপ বা এককে ভাগ করা যায়। যেমন-
রাজ্য(kingdom)
পর্ব(phylum)
শ্রেনী(Class)
বর্গ(order)
গোত্র(Family)
গণ( Genus)
প্রজাতি( species)
ক্যারোলাস লিনিয়াস প্রবর্তিত এই সাত স্তরবিশিস্ট অনুক্রমিক স্তর কাঠামোকে লিনিয়ান হায়ারার্কি বলে।
নেস্টেড হায়ারার্কি কি
কোন জীবের শ্রেণীবিন্যাসের সাতটি ধাপের সবচেয়ে উপরের ধাপ হয় সবচেয়ে বড় এবং ক্রমান্বয়ে নিচের ধাপগুলো ছোট ।
সবচেয়ে উপরের ধাপ যদি হয় একটি সেট তবে তার নিচের ধাপ গুলো হবে তার উপসেট ।
যেমন- রাজ্যের উপসেট পর্ব, পর্বের উপসেট শ্রেণি,শ্রেণীর উপসেট বর্গ ইত্যাদি।শ্রেণিবিন্যাসের এই পদ্ধতিকে নেস্টেড হায়ারার্কি বলে।
দ্বিপদ নামকরন কি
ICBNএর নীতিমালা অনুসারে একটি নির্দিষ্ট প্রজাতির জীবের জন্য দুটি পদ নিয়ে গঠিত একটি নির্দিষ্ট বৈজ্ঞানিক নাম প্রদান করাকে বলা হয় দ্বিপদ নামকরণ এবং নামকরণের এই প্রক্রিয়াকে বলা হয় দ্বিপদ নামকরণ প্রক্রিয়া।
এই বৈচিত্র্যময় জীব জগতের প্রতিটি জীবকে আলাদা নামে সঠিকভাবে জানাই হলো দ্বিপদ নামকরণ এর লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য।
দ্বিপদ নামকরনের জনক সুইডিশ বিজ্ঞানী ক্যারোলাস লিনিয়াস। তিনি ১৭৫৩ সালে species plantaraum নামক বই রচনার মাধ্যমে দ্বিপদ নামকরনের পদ্ধতি প্রবর্তন করেন।
দ্বিপদ নামকরণ পদ্ধতি কি
১. প্রতিটি জীবের নামকরণ হবে ল্যাটিন ভাষায় কিংবা ল্যাটিন ভাষায় উপস্থাপন করতে হবে।
২. প্রতিটি জীবের বৈজ্ঞানিক নামের দুটি অংশ থাকবে। প্রথম অংশটি গণ নাম এবং দ্বিতীয় অংশটি প্রজাতি নাম । যেমন-গণ (Genus)- Homo প্রজাতি (Species) –sapiens
৩. জীব জগতের প্রতিটি বৈজ্ঞানিক নাম কে অনন্য হতে হয়, কারণ একই নাম দুটি পৃথক জীবের জন্য ব্যবহার করা যাবে না।
৪. বৈজ্ঞানিক নামের প্রথম অংশের প্রথম অক্ষর বড় অক্ষরে হতে হবে বাকি অক্ষর গুলো ছোট অক্ষর হবে এবং দ্বিতীয় অংশটির নাম ছোট অক্ষর দিয়ে লিখতে হবে । যেমনঃ ধান- Oryza sativa sativa
৫. বৈজ্ঞানিক নাম ছাপার সময় সর্বদা ইতালি অক্ষরে লিখতে হবে । যেমনঃ মানুষ- Homo sapiens
৬. বৈজ্ঞানিক নাম হাতে লেখার সময় গণ প্রজাতি নামের নিচে আলাদা আলাদা দাগ দিতে হবে । যেমন- মানুষ- Homo sapiens
৭. যদি একই জীবের কয়েকজন বিজ্ঞানী বিভিন্ন নামকরণ করেন, তবে প্রথম বিজ্ঞানী কর্তৃক প্রদত্ত নামটি গৃহীত হবে ।
৮. কোন জীবের বিজ্ঞানসম্মত নাম যিনি প্রথম দিবেন তার নাম উক্ত জীবের বৈজ্ঞানিক নামের শেষে প্রকাশের সাল সহ সংক্ষেপে সংযোজন করতে হবে । যেমনঃ মানুষ- Homo sapiens L. 1758
কয়েকটি জীবের দ্বিপদ নাম-
১. আম – Mangifera indica
২. কাঁঠাল- Artocarpus heterophyllus
৩. শাপলা – Nymphaea nuchali
৪. কুনোব্যাঙ- Bufo melanostictus
৫. মৌমাছি- Apis indica
৬. জবা- Hibiscus rosa-sinensis