বচন কাকে বলে? বচন কতো প্রকার ও কি কি?

আজকে আমরা জানবো বচন কাকে বলে, এর প্রকারভেদ সম্পর্কে। মূলত বচন কি এবং ব্যাকরনে বচনের অবদান এই সম্পর্কিত বিস্তারিত ধারনা দেওয়া হবে আজকের এই আর্টিকেলটিতে।

বচন কাকে বলে

বচন হলো ব্যাকরনের পারিভাষিক একটি শব্দ। বচন শব্দের অর্থ মূলত – সংখ্যা সম্পর্কিত ধারনা বা সংখ্যার ধারনা।

বাংলা ব্যাকরনে বিশেষ্য ও সর্বনাম পদের সংখ্যা সম্পর্কিত ধারনা প্রকাশের প্রক্রিয়াকে বচন বলা হয়ে থাকে।

বাংলা ব্যাকরনে বিশেষ্য ও সর্বনাম পদ ছাড়া অন্য কোনো ক্ষেত্রে বচনের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায় না। শুধুমাত্র এই দুই ক্ষেত্রেই বচন হয়ে থাকে। কেননা এইক্ষেত্রে ব্যক্তি, বস্তু, গুণ ইত্যাদি গননা করা যায়। যা গণনার যোগ্য কেবলমাত্র সেই ক্ষেত্রেই বচন হয় অন্যথায় বচন হয় না।

বচন এর প্রকারভেদ

বাংলা ভাষায় বচন ২ প্রকার। যথা-

১. এক বচন।

২. বহু বচন

বাংলা ভাষায় দ্বিবচন এর কোনো ব্যবহার নেই। সংস্কৃত, প্রাচীন গ্রিক, আরবি ও সাঁওতালি ভাষায় তিন ধরনের বচনের ব্যবহার দেখা যায়।

কিন্তু আধুনিক বাংলা ভাষায় কেবলমাত্র দুটি বচনের ব্যবহার রয়েছে।

১. এক বচন কাকে বলে

যে শব্দের মাধ্যমে কোনো ব্যাক্তি, বস্তু বা প্রানীর একটি মাত্র সংখ্যা প্রকাশ করা হয় তাকে এক বচন বলে। যেমন- আমি, তুমি, মেয়েটি, বইটি ইত্যাদি।

বাক্য গঠন- আমি স্কুলে যায়নি, মেয়েটি ভাত খায়নি ইত্যাদি।

এক বচন প্রকাশের নিয়ম-

অনেক সময় দেখা যায়-  টা , টি , খানা , খানি ইত্যাদি যােগ করে বিশেষ্যর এক বচন নির্দেশ করা হয়ে থাকে।  যেমন – বাছুরটা , ছাগলটা , পেন্সিলখানা, খাতাখানা , বইখানি ইত্যাদি ।

২. বহু বচন কাকে বলে

যে শব্দের মাধ্যমে একাধিক কোনো ব্যাক্তি, বস্তু বা প্রানীর সংখ্যা প্রকাশ করা হয় তাকে বহু বচন বলে। যেমন- ছেলেগুলো, মেয়েগুলো, পাখিগুলো, ফুলগুলো ইত্যাদি।

বাক্য গঠন- বইগুলো সব গুছিয়ে রাখো,  ফুলগুলো নষ্ট হয়ে গেছে ইত্যাদি।

বহুবচন প্রকাশের নিয়ম-

বাংলা ভাষায় বহু বচন প্রকাশের ক্ষেত্রে-  রা , এরা , গুলা , গুলি , গুলো , দিক , দের ইত্যাদি বিভিন্ন বিভক্তি যুক্ত করা হয়।

এছাড়াও- সব , সকল , সমুদয় , কুল , বর্গ , নিচয় , রাজি , রাশি , পাল , দাম , নিকর , মালা , আবলি প্রভৃতি সমষ্টিবােধক শব্দ ব্যবহার করা  হয়ে থাকে । সমষ্টিবােধক শব্দগুলাের বেশিরভাগই মূলত আসে তৎসম বা সংস্কৃত ভাষা হতে ।

এদের কিছু ব্যবহার নিম্নরূপ-

১.’ রা’ – শুধুমাত্র উন্নত প্রাণিবাচক শব্দের ক্ষেত্রে ‘রা’ বিভক্তিটির ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়।

যেমন-

– ছেলেরা খেলা দেখতে গেছে ।

– ছাত্ররা কেও আজ আসেনি ।

কখনোও কখনো দেখা যায়- যে ধরনের শব্দে ‘র’ বিভক্তি যুক্ত থাকে সে ধরনের শব্দের শেষে ‘এরা ‘ ব্যবহার করা হয় । যেমন- মেয়েরা ঝিয়েরা একত্রে কাজ করছে।

কবিতার ক্ষেত্রে বা অপ্রাণী ও ইতর প্রাণিবাচক শব্দেও রা , এরা যুক্ত করা হয়।যেমন-

– পাখিরা আকাশে উড়ে দেখিয়া হিংসায় পিপীলিকারা বিধাতার কাছে পাখা চায় ।

২.  গুলা , গুলি , গুলাে প্রাণিবাচক ও অপ্রাণিবাচক শব্দের বহুবচনে যুক্ত করা হয়ে থাকে।

যেমন –

ছেলেগুলো মাঠে খেলছে,  পাখিগুলো আকাশে উড়ছে, আমগুলো মিষ্টি ইত্যাদি।

আজকে এই পর্যন্তই। আশা করছি বচন কাকে বলে, এর প্রকারভেদ নিয়ে আলোচনা সকলের জন্য উপকারী হবে। ভালো লাগলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ