পরিবেশ দূষণ কাকে বলে?
আমাদের চারপাশের পরিবেশকে আমরা নানাভাবে ব্যবহার করি। যার ফলে পরিবেশে বিভিন্ন পরিবর্তন ঘটে। এসব পরিবর্তন যখন আমাদের জন্য ক্ষতির কারণ হয়, তখন তাকে পরিবেশ দূষণ বলে।
প্রাকৃতিক বিভিন্ন উপাদানের সাথে জীবনের যে স্বাভাবিক ভারসাম্য বিদ্যমান, কোনো কারণে তা ব্যাহত হলে বা প্রকৃতিতে তার খারাপ প্রভাব প্রতিফলিত হলে তাকে পরিবেশ দূষণ বলে।
পরিবেশ দূষণ মানুষসহ অন্যান্য জীবজন্তু এবং তাদের পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। বিভিন্ন দূষণ ও বিষাক্ত পদার্থের মাধ্যমে পরিবেশ দূষিত হয়, যা মানুষের স্বাভাবিক চলাফেরা বা জীবনযাপনে বাধা তৈরি করে।
পরিবেশ দূষণের প্রকারভেদ
পরিবেশের উপাদানসমূহের ওপর ভিত্তি করে পরিবেশ দূষণ প্রধানত ছয় প্রকার। যথা – বায়ু দূষণ, পানি দূষণ, রাসায়নিক দূষণ, শব্দ দূষণ, তেজস্ক্রিয় দূষণ এবং ভূমি দূষণ।
বায়ু দূষণ কাকে বলে?
বায়ু জীবকূলের জীবনধারণের জন্য অপরিহার্য। প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট কারণে বায়ু স্বাভাবিক উপাদানসমূহের তারতম্য সৃষ্টি হচ্ছে। বায়ুর উপাদানসমূহের পরিবর্তন যখন উদ্ভিদ ও জীবকূলের ক্ষতির কারণ হয় তখন তাকে বায়ু দূষণ বলে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, “বায়ু দূষণ হলো বায়ুমন্ডলের উপাদানসমূহের ক্ষতিকর পদার্থের সমাবেশ, যা মানুষ ও মানুষের বসবাসকৃত পরিবেশের ক্ষতিকর অবস্থা।”
পানি দূষণ কাকে বলে?
পানির ভৌত রাসায়নিক এবং জৈব বৈশিষ্ট্যের পরিবর্তন হলে সেই পানি উদ্ভিদ প্রাণী তথা জীবকূলের জীবন ধারণের জন্য ক্ষতির কারণ হয়। পানির এইরূপ অবস্থাকে পানি দূষণ বলে। সাধারণত ভূ-গর্ভে এবং ভূ-পৃষ্ঠে পানির সাথে অবস্থিত কোন পদার্থ মিশে যাওয়ার দরুন পানি দূষণ হয়। বিভিন্ন কারণে জলাশয়, পুকুর, নদী, হ্রদ, সমুদ্র এবং ভূ-গর্ভস্থ পানির দূষণ ঘটে।
শব্দ দূষণ কাকে বলে?
মানুষের শ্রবণযন্ত্রের স্বাভাবিক ধারণ ক্ষমতা ১-৭৫ ডেসিবল। মানুষের স্বাভাবিক শ্রবণ ইন্দ্রিয়ের ধারণ ক্ষমতার ঊর্ধ্বে সৃষ্ট যে শব্দ মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রার ব্যাঘাত ঘটায় তাকে শব্দ দূষণ বলে।
ভূমি দূষণ কাকে বলে?
পরিবেশীয় সকল প্রকার কর্মকাণ্ড হয় মৃত্তিকার ওপরেই। যার দরুন তৈরি হয় ভূমি ব্যবহার। যেমন- প্রতিবেশভিত্তিক ভূমি ব্যবহার, নগর ভূমি ব্যবহার, গ্রামীণ ভূমি ব্যবহার, কৃষিজ ভূমি ব্যবহার, শিল্পজ ভূমি ব্যবহার প্রভৃতি। ভূমির এইরূপ বিভিন্ন ধরনের ব্যবহারের জন্য তৈরি হয় ভূমি দূষণ।