সরল দোলক কাকে বলে?
একটি ভারী আয়তনহীন বস্তুকণাকে ওজনহীন, নমণীয় ও অপ্রসারণশীল সুতা দিয়ে ঝুলিয়ে দিলে এটি যদি ঘর্ষণ এড়িয়ে স্বাধীনভাবে একটি উলম্বতলে দুলতে পারে তবে তাকে সরল দোলক বলে।
বাস্তবে সরল দোলক পাওয়া সম্ভব নয়। কেননা, ভারী আয়তনহীন কোন বস্তু কিংবা সম্পূর্ণরূপে অপ্রসারণশীল, ওজনহীন ও নমনীয় সুতার অস্তিত্ব নেই।
আদর্শ সরল দোলক বলতে ভরহীন অপ্রসার্য সূতার দ্বারা আলম্বিত একটি বিন্দুভর পিণ্ড (bob) বোঝায়। দোলনের সময় সূতাটি একটি উলম্বতলে আবদ্ধ থাকে। পিণ্ডটি একটি বৃত্তচাপ বরাবর চলাচল করলেও দোলনের কৌণিক বিস্তার θm যদি অল্প হয়, তবে পিণ্ডটি মোটামুটিভাবে অনুভূমিক সরলরেখায় x অক্ষ বলে ধরে নেওয়া যায়।
জটিল দোলক কাকে বলে?
যেকোনো দৃঢ় বস্তু সেটির সঙ্গে আবদ্ধ একটি অনুভূমিক অক্ষের উপর দোলনে সক্ষম হলে তাকে জটিল দোলক বলা যায়।
ব্যাবর্ত দোলক কাকে বলে?
যদি একটি সরু লম্বা তারের একপ্রান্ত দৃঢ়ভাবে আবদ্ধ করে উলম্বভাবে সেটিকে ঝোলানো যায় এবং তার নিম্নপ্রান্তে একটি ভারী চাকতি, গোলক বা বেলন এমনভাবে আবদ্ধ করা যায় যেন ঐ বস্তুটির ভারকেন্দ্র তারটির সরলরেখায় থাকে, তবে ঐ ব্যবস্থাটিকে একটি ব্যাবর্ত দোলক বলা যায়।
সরল দোলকের সূত্রসমূহ
কৌণিক বিস্তার 4° এর বেশি না হলে সরল দোলকের ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত সূত্র চারটি প্রযোজ্য।
প্রথম সূত্র—সমকাল সূত্র : কৌণিক বিস্তার ক্ষুদ্র হলে এবং দোলকের কার্যকরী দৈর্ঘ্য অপরিবর্তিত থাকলে কোনো নির্দিষ্ট স্থানে একটি সরল দোলকের প্রতিটি দোলনের জন্য সমান সময় লাগে। দোলনকাল কৌণিক বিস্তারের ওপর নির্ভর করে না।
দ্বিতীয় সূত্র—দৈর্ঘ্যের সূত্র : কৌণিক বিস্তার ক্ষুদ্র হলে কোনো নির্দিষ্ট স্থানে সরল দোলকের দোলনকাল (T)-এর কার্যকরী দৈর্ঘ্য (L)-এর বর্গমূলের সমানুপাতে পরিবর্তিত হয়।
অর্থাৎ T∝ √L, যখন g ধ্রুব।
তৃতীয় সূত্র—ত্বরণের সূত্র : কৌণিক বিস্তার ক্ষুদ্র হলে এবং সরল দোলকের কার্যকরী দৈর্ঘ্য (L) অপরিবর্তিত থাকলে এর দোলনকাল (T) অভিকর্ষজ ত্বরণ (g)-এর বর্গমূলের ব্যস্তানুপাতে পরিবর্তিত হয়।
অর্থাৎ T∝1∕√g যখন L ধ্রুব।
চতুর্থ সূত্র—ভরের সূত্র : কৌণিক বিস্তার ক্ষুদ্র হলে এবং কার্যকরী দৈর্ঘ্য অপরিবর্তিত থাকলে কোনো নির্দিষ্ট স্থানে সরল দোলকের দোলনকাল ববের ভর, আয়তন, উপাদান ইত্যাদির ওপর নির্ভর করে না। বিভিন্ন ভর, আয়তন বা উপাদানের ববের জন্য দোলকের দোলনকাল একই হয়।