Modal Ad Example
Islamic

জিহাদ কাকে বলে? | জিহাদ কত প্রকার

1 min read

জিহাদ কাকে বলে?

মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আল কুরআনে জিহাদকে মুসলমানদের জন্য একটি ‘কর্তব্য’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে; সেখানে ‘হারব’ বা ‘যুদ্ধ’ শব্দ ব্যবহার না করে ‘জিহাদ’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে।

“জিহাদ” আরবী শব্দ। এর অর্থ হলো কঠোর পরিশ্রম করা, চেষ্টা করা, সাধানা করা, সংগ্রাম করা। ইসলামী পরিভাষায় আল্লাহর দ্বীনকে (ইসলামকে) বিজয়ী করার লক্ষে এবং একমাত্র আল্লাহকে খুশি করার জন্য কুফরী তথা ইসলাম বিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে মুমিনের সকল প্রচেষ্টা (দৈহিক, মানসিক, আর্থিক, জ্ঞানবুদ্ধি) নিয়োজিত করাকে “জিহাদ” বলে। অন্য অর্থে স্বীয় নফসের বিরুদ্ধে, শয়তানের বিরুদ্ধে, ফাসেকদের বিরুদ্ধে এবং মুশরিক-মুনাফীক-কাফেরদের বিরুদ্ধে জান-মাল ও জবান দিয়ে লড়াই করাকে “জিহাদ” বলা হয়।

জিহাদের প্রকারভেদ

জিহাদ ফরজ হওয়ার শর্ত সম্পর্কে আলোচনা করার পূর্বে জিহাদের প্রকারভেদ সম্পর্কে অবগত হওয়া অত্যন্ত জরুরী। কারণ অনেক মানুষই জিহাদের প্রকারভেদ সম্পর্কে অজ্ঞ ও ভুল ধারনা পোষণ করে থাকেন।

বিভিন্ন রকম জিহাদের বর্ণনা দেওয়া হলো –

১। নফস বা কুপ্রবৃত্তির সাথে জিহাদ করা

নফসের সাথে জিহাদের অর্থ হল নিজের নফসকে আল্লাহর আনুগত্যের কাজে বাধ্য করা, ভাল কাজের প্রতি সর্বদা তাকে আদেশ করা এবং অসৎ কাজ হতে বারণ করা। নফসের সাথে জিহাদ ব্যতীত কেউ শত্রুর বিরুদ্ধে জিহাদ করতে সক্ষম হবে না।

২। শয়তানের বিরুদ্ধে জিহাদ করা

শয়তান মানুষের আদি শত্রু। সে মানুষকে নানা অপকর্মের আদেশ করে থাকে। তাই শয়তানের সাথে সদা সংগ্রামে লিপ্ত থাকাও জিহাদ। শয়তানের আদেশ সর্বদা অমান্য করা এবং সে যা নিষেধ করে তাই-ই করা আমাদের কর্তব্য।

৩। পাপী মুসলমানদের সাথে জিহাদ

অভ্যন্তরীণ শত্রু তথা শয়তান ও নফসের বিরুদ্ধে জিহাদ করে যে ব্যক্তি জয়লাভ করতে পারবে, তার উপর অন্যান্য শত্রুদের সাথে জিহাদ করাও ওয়াজিব। প্রথমেই আসে গুনাহগার ও পাপী মুসলমানদের কথা। তাদের সাথেও জিহাদ করতে হবে। তবে তাদের বিরুদ্ধে তলোয়ারের জেহাদ নেই। তাদেরকে সাধ্য অনুযায়ী সৎকাজের আদেশ এবং অসৎকাজের নিষেধ করতে হবে।

রাসূল (সাঃ) বলেন,

مَنْ رَأَى مِنْكُمْ مُنْكَرًا فَلْيُغَيِّرْهُ بِيَدِهِ فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبِلِسَانِهِ فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبِقَلْبِهِ وَذَلِكَ أَضْعَفُ الْإِيمَانِ

অর্থঃ “তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি অন্যায় কাজ হতে দেখে সে যেন হাত দিয়ে বাধা দেয়। হাত দিয়ে বাধা দিতে না পারলে জবান দিয়ে বাধা দিবে। তাও করতে না পারলে অন্তর দিয়ে হলেও বাধা দিবে। এটি সবচেয়ে দুর্বল ঈমানের পরিচয়”।
(সহীহ মুসলিম, প্রথম খন্ড, কিতাবুল ঈমান)
বর্তমান সময়ে বিভিন্ন অঞ্চলে এক শ্রেণীর মুসলমান জিহাদের নামে মুসলমানদেরকে হত্যা করার মত জঘণ্য কাজে লিপ্ত রয়েছে। যা কখনই ইসলাম সমর্থন করে না।

৪। মুনাফীকদের বিরুদ্ধে জিহাদ

মুনাফীকদের বিরুদ্ধে জিহাদের অর্থ এই যে, তাদের সন্দেহগুলো খন্ডন করা এবং তাদের মতবাদ থেকে সরলমনা মুসলমানদেরকে সাবধান ও সচেতন করা।

আল্লাহ তা’আলা বলেন,

هُمْ الْعَدُوُّ فَاحْذَرْهُمْ

অর্থঃ “তারাই শত্রু। অতএব তাদের সম্পর্কে সতর্ক হোন।
(সূরা মুনাফিকূন, আয়াত ৪)

মুনাফীকদের বিরুদ্ধে জিহাদ জবান এবং সামর্থ থাকলে হাতের মাধ্যমেই হবে। তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারন না করাটাই উচিত তবে তাদের উপর কঠোর হতে হবে।

আল্লাহ তা’আলা বলেন,

يَاأَيُّهَا النَّبِيُّ جَاهِدْ الْكُفَّارَ وَالْمُنَافِقِي نَ وَاغْلُظْ عَلَيْهِمْ

অর্থঃ “হে নবী! কাফের ও মুনাফেকদের বিরুদ্ধে জিহাদ করুন এবং তাদের প্রতি কঠোর হোন।
(সূরা আত-তাহরীম, আয়াত ৯)

সুতরাং মুনাফেকদের বিরুদ্ধে যুক্তি-তর্কের মাধ্যমে জিহাদ করতে হবে এবং কঠোর ভাষায় তাদের কর্ম-কান্ডের প্রতিবাদ ও প্রয়োজনে প্রতিরোধ করতে হবে। যেহেতু তারা মুসলিম সমাজেই বসবাস করে থাকে তাই তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করা যাবে না (বরং না করাটাই উচিত)। এতে মুসলমানদের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়বে। নবী (সাঃ) মুনাফীকদেরকে দল থেকে বের করে দেন নি। তবে তিনি মুনাফীকদের চক্রান্তের বিরুদ্ধে সদা সর্বদা সজাগ থাকতেন।

 

শেষ কথা:

আশা করি আপনাদের এই আর্টিকেলটি পছন্দ হয়েছে। আমি সর্বদা চেষ্টা করি যেন আপনারা সঠিক তথ্যটি খুজে পান। যদি আপনাদের এই “জিহাদ কাকে বলে? | জিহাদ কত প্রকার” আর্টিকেলটি পছন্দ হয়ে থাকলে, অবশ্যই ৫ স্টার রেটিং দিবেন।

5/5 - (32 votes)
Mithu Khan

I am a blogger and educator with a passion for sharing knowledge and insights with others. I am currently studying for my honors degree in mathematics at Govt. Edward College, Pabna.

x