ঈদুল আযহার সুন্নত ও আমল । ঈদের দিনের আমল

ঈদুল আযহার সুন্নত ও আমল

ঈদুল আযহার সুন্নত ও আমল

আসসালামু আলাইকুম আজকের আলোচনায় থাকবে  ঈদুল আযহার সুন্নত ও আমল সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য| সামনে কোরবানির ঈদ রেখে আজকের আলোচনা করব ঈদুল আযহার সুন্নত ও আমল সম্পর্কে|

চলুন জেনে নেই ঈদুল আযহার সুন্নত ও আমল|

ঈদুল আযহার সুন্নতঃ

ঈদ উপলক্ষে সর্বপ্রথম যে কাজটি করা সুন্নত তা হচ্ছে ঈদের সালাতে আগে গোসল করা সুন্নত।পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা পাক পবিত্রতা হয়ে পোশাক পরিধান করা সুন্নত এবং উত্তম একটি কাজ। ঈদের দিনে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বিশেষভাবে সুগন্ধি ব্যবহার করে থাকেন। রাসূল সাঃ এর ঈদের দিনের তিনটি পছন্দের কাজ হচ্ছে সুগন্ধি ব্যবহার করা। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম নিয়ম অনুযায়ী আমাদেরকেও ঈদের দিনে গোসল করে পাক-পবিত্র তা হয়ে পোশাক পরিধান করে তারপর সুগন্ধি ব্যবহার করা। উত্তম এবং  সুন্নত একটি কাজ তাই আমরা অবশ্যই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর নিয়ম অনুযায়ী চলবো।

ঈদুল আযহার সুন্নত সম্পর্কে  বলতে গেলে আরো বলা যায় যে,  নবীর করীম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম ঈদুল আযহার দিন কিছু খেতেন না যতক্ষণ পর্যন্ত ঈদের নামাজ আদায় করা হত না। কোরবানির দিনে ঈদের নামাজের আগে কিছু না খাওয়া মুস্তাহাব।

ঈদগাহে এক পথ দিয়ে যাওয়া ও অন্নপদ দিয়ে ফেরা সুন্নত বুখারি হাদিস ৯৮৬

ঈদগাহে হেঁটে যাওয়া সুন্নত বা তাই ঈদগাহে হেঁটে যাওয়া ভালো।

তাকবীর পার্টের মাধ্যমে আল্লাহ তালাকে বেশি বেশি স্মরণ করা সুন্নত তাই ঈদের দিনের তাকবীর পাঠ করতে হবে। ছেলেরা তাকবীর পাঠ করবে উঁচু আওয়াজে এবং মেয়েরা তাকবীর পাঠ করবে নীরবে। তাকবীর জিলহজ মাসের ৯ থেকে ১৩ তারিখ পর্যন্ত পাঠ করতে হবে।

ঈদের নামাজ সুন্নতে মুয়াক্কাদা ঈদের নামাজ সব নফল নামাজের মধ্যে ফজিলতপূর্ণ ঈদের নামাজের আগে ও ফজরের নামাজের পরে কোন নামাজ নাই।  ঈদের নামাজের কোন আযান ও একামত নাই।

ঈদের দিনে অবশ্যই ছোট বড় সবার সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করা সুন্নত তাই অবশ্যই ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করতে হবে। সুন্নত একটি কাজ ঈদের দিনে সাহাবায়ে কেরামদের সম্ভাষণ ছিল, ‘তাক্বাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকা’। (অর্থ : আল্লাহ আমাদের ও তোমার কাজ কবুল করুন)।

ঈদুল আযহার দিনে যাদের বা যে ব্যক্তিদের কোরবানি করার সামর্থ্য রয়েছে তাদেরকে কোরবানি দিতে হবে কুরবানী করা ওয়াজিব। কোরবানির গোশত নিজে খাবেন নিজের পরিবার বর্গকে খাওয়াবেন এবং আত্মীয়-স্বজনকে খাওয়াতে হবে হাদিয়া ও তোফা দেবে গরিব মিসকিনকে দান করবেন।

প্রত্যেকটি মুসলমানের উচিত ঈদুল আযহার কোরবানির পশুর রক্ত, আবর্জনা ও হাড়ের কারণে যে পরিবেশ দূষিত না হয় সেদিকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রক্ত আবর্জনা হার নিরাপদ স্থানে নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলতে হবে।

ঈদুল আযহা যা বর্জনীয়ঃ

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদের দিনে রোজা রাখা একদম নিষেধ করে রেখেছেন। তাই ঈদের দিন রোজা রাখা হারাম । ঈদের কবর জিয়ার ত বিশেষ দিন মনে করে জিয়ারত করা বিদআততবে পূর্বনির্ধারিত রুটিন ছাড়া হঠাৎ সুযোগ হয়ে গেলে একাকী কেউ জিয়ারত করলে দূষণীয় নয়।

আমাদের মধ্যে এমন কিছু লোক রয়েছেন যারা ঈদের আনন্দ এতটা অনুভব করে যে তারা নতুন জামা পরিধান, সেমাই, পায়েস ইত্যাদি নিয়ে এতটা ব্যস্ত হয়ে পড়ে তারা ঈদের সালাত আদায় করার কথা ভুলে যায়। অথচ এই দিনে ঈদের সালাত ও কোরবানি করায় হচ্ছে মুসলমানদের মূলত একটি কাজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ তাই আমরা ঈদুল আযহা এবং কোরবানির দিন হিসেবে এই দিনটিকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ দিতে হবে। ঈদগাহে বা ঈদের দিন সাক্ষাৎ হলে মুসাফাহা ও মমুআনাকা করতেই হবে এমন বিশ্বাস ও আমল করা বিদআত।

তবে এমন বিশ্বাস না করে সালাম ও মুসাফাহার পর মুআনাকা (গলায় গলা মেলানো) করায় কোনো অসুবিধা নেই। কারণ মুসাফাহা ও মুআনাকা করার মাধ্যমে পারস্পরিক সম্পর্ক বৃদ্ধি হয়। কোরবানির গোশত, চামড়া ও এর কোনো অংশ বিক্রি করা যাবে না। অর্থাৎ বিক্রি করে নিজে উপকৃত হওয়া যাবে না। এমনকি কসাইকে পারিশ্রমিকস্বরূপ গোশত দেওয়া নিষিদ্ধ (বুখারি, হাদিস : ১৭১৭, মুসলিম, হাদিস : ১৩১৭)। তবে সাধারণভাবে কাউকে খেতে দেওয়ায় অসুবিধা নেই।

আমাদের মধ্যে এমন কিছু ব্যক্তি রয়েছেন যারা ঈদ উপলক্ষে গান বাজনা ঢাক ঢোল ইত্যাদি এসব করে থাকেন এসব করা একদমই উচিত নয় তাই ঈদের দিনে মহান আল্লাহ তাআলার নিয়ম অনুসারে চলার চেষ্টা করুন হারাম কাজ থেকে বিরত থাকুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *