ভূগোল

ভূমিকম্প, ভূমিকম্পের কারণ, ভূমিকম্পের প্রভাব

1 min read

ভূমিকম্প, ভূমিকম্পের কারণ, ভূমিকম্পের প্রভাব

ভূমিকম্পঃ বাংলাদেশ প্রাকৃতিক দুর্যোগসমূহের মধ্যে ভূমিকম্প সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশকে তিনটি ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলে বিভক্ত করা হয়। এগুলো হলো রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ৭ হলে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ, মাত্রা ৬ হলে মাঝারি ঝুঁকিপূর্ণ এবং মাত্রা ৫ হলে কম ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল হিসেবে গণ্য হবে। দেশের কোন অঞ্চল কোন মাত্রার ভূমিকম্প ঝুঁকির অন্তর্ভূক্ত তা নিম্নে দেখানো হলো –

১. মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল – দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চল এর অন্তর্ভূক্ত।

২. মাঝারি ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল – দেশের মধ্যাঞ্চল এর অন্তর্ভূক্ত।

৩. কম ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল – দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চল এর অন্তর্ভূক্ত।

 

ভূমিকম্পের কারণঃ ভূমিকম্পের উল্লেখযোগ্য কারণসমূহ নিম্নরূপ –

১. ভূ-ত্বক সাতটি বৃহৎ এবং কতকগুলো ছোট প্লেট দ্বারা গঠিত। এই প্লেটসমূহ একে অপরের দিকে, একে অপরের বিপরীতে অথবা পরস্পর সমান্তরালভাবে সঞ্চালিত হয়। এইরূপ সঞ্চালনের ফলে সৃষ্ট চাপ থেকে আকস্মিকভাবে প্রচন্ড কম্পন সৃষ্টি হয়। ভূ-পৃষ্ঠে এই কম্পন ভূমিকম্পের সৃষ্টি করে।

২. কোনো কারণে ভূ-অভ্যন্তরে বড় রকমের শিলাচ্যুতি ঘটলে ভূমিকম্প হয়।

৩. ভূ-আলোড়নের ফলে ভূ-অভ্যন্তরে প্রবল ফ্রিকশান হয়ে কোনো অংশ ধসে পড়ে ভূ-ত্বক কেঁপে ওঠে এবং ভূমিকম্প হয়।

৪. উত্তপ্ত ভূ-অভ্যন্তর তাপ বিকিরণ করে সংকুচিত হলে শিলাস্তরে ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য স্থান পরিবর্তন করলে ভূ-ত্বক কেঁপে উঠলে ভূমিকম্প হতে পারে।

৫. ভূ-গর্ভে সঞ্চিত বাষ্পচাপ অধিক হলে নিম্নভাগে প্রবলভাবে ধাক্কা দেয়, এতে ভূমিকম্প দেখা দিতে পারে।

৬. ভূ-িগর্ভে চাপ হ্রাস পেলে এর অভ্যন্তরস্থ উত্তপ্ত কঠিন পদার্থ গলে নিচের দিকে অপসারিত ও আলোড়িত হতে থাকে, এতে ভূ-ত্বক কেঁপে ওঠে।

৭. আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের সময় বহির্মুখী বাষ্পরাশির চাপে ভূমিকম্প হয়।

৮. পার্বত্য অঞ্চলে বড় ধরনের শিলাচ্যুতি বা হিমবাহ অঞ্চলে হিমানী সম্প্রপাত হলে ভূমিকম্প হয়।

৯. খনি অঞ্চলে ভূ-পৃষ্ঠের নিচের কোনো অংশ হঠাৎ ধ্বসে পড়লে ভূমিকম্প। এর ফলে ভূ-পৃষ্ঠে এবং ভূ-অভ্যন্তরে পরিবর্তন দেখা দেয়।

১০. ভূ-গর্ভস্থ আগ্নেয় পদার্থের উর্ধ্বমুখী চাপের ফলে ভূ-কম্পন হয়।

 

ভূমিকম্পের প্রভাবঃ ভূ-ত্বকের আকস্মিক পরিবর্তনকারী প্র্রক্রিয়াসমূহের মধ্যে অন্যতম একটি ভূমিকম্প। এর ফলে ভূ-পৃষ্ঠে এবং ভূ-অভ্যন্তরে পরিবর্তন দেখা দেয়।

নিম্নে ভূমিকম্পের মুখ্য প্রভাবসমূহ উল্লেখ করা হলো –

১. ভূমিকম্পের মাত্রা অধিক হলে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটে থাকে।

২. জীবজন্তু ও গাছপালা ধ্বংস হওয়া।

৩. ঘর-বাড়ি, রাস্তাঘাট, কল-কারখানা ধ্বংসসহ জনজীবনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়া।

৪. ভূমিকম্পের ফলে ভূ-ত্বকে ফাঁটল, ভাঁজ ও চ্যুতির সৃষ্টি হতে পারে।

৫. নদ-নদীর গতিপথ পরিবর্তিত হতে পারে।

৬. সমুদ্রতলের পরিবর্তন এবং ভূমির উত্থান ও পতন হতে পারে।

৭. হিমানী সম্প্রপাত হতে পারে।

৮. বহু মানুষ শারীরিক এবং মানসিকভাব প্রতিবন্ধী হতে পারে যা ব্যক্তি ও সমাজ জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে।

Rate this post
Mithu Khan

I am a blogger and educator with a passion for sharing knowledge and insights with others. I am currently studying for my honors degree in mathematics at Govt. Edward College, Pabna.

x