সরব পাঠ কাকে বলে?
সরব পাঠ কাকে বলে?
সাহিত্য পাঠের ক্ষেত্রে সরব পাঠের গুরুত্ব অপরিসীম। নিম্ন শ্রেণিতে সরব পাঠ কণ্ঠানুশীলনের জন্য কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
কোনো কিছু পাঠ বা পড়ার সময় শব্দ করে পড়ার নিয়মকে সরব পাঠ বলে।
সরব পাঠের সুবিধা অসুবিধা দুটোই আছে। সরব পাঠের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পঠন শক্তির বিকাশ, উচ্চারণ রীতি শিখন, বাকপটুতা অর্জন, পাঠের রসাস্বাদন ও ভাষা শিক্ষার ভিত মজবুত হয়।
সরব পাঠের উদ্দেশ্য
১) অক্ষর নীরিখের অনুশীলন।
২) প্রত্যেকটি অক্ষরের সুস্পষ্ট উচ্চারণ।
৩) কণ্ঠস্বরের যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা।
৪) আঞ্চলিক মুদ্রাদোষগুলিকে সংশোধন করে বিশুদ্ধ ও সুস্পষ্ট উচ্চারণ।
৫) পারিবারিক প্রভাবে তৈরি হওয়া উচ্চারণগত ত্রুটি সংশোধন করা।
সরব পাঠের অভ্যাস কিভাবে গঠন করা যায়?
১) শিক্ষক নির্দিষ্ট পাঠটি যতি চিহ্নের অনুসরণে জীবন্ত করে তুলবেন।
২) অনুচ্ছেদ অনুসারে ছাত্রদের সরব পাঠ করাবেন।
৩) পাঠের সময় যে সব ত্রুটি দেখা দেয় তা অন্য ছাত্রদের সাহায্যে বা শিক্ষক নিজে দূর করার চেষ্টা করবেন।
৪) সরব পাঠ অভ্যাস করানোর সময় উচ্চারণ, স্বর, লয়, গতি ও প্রবাহ অব্যাহত ও যথাযথ হলো কিনা তা শিক্ষক পর্যবেক্ষণ করবেন।
৫) প্রাথমিক স্তরে ব্যক্তিগত সরব পাঠ এবং একত্র বা কোরাস সরব পাঠ অভ্যাস করানো যেতে পারে যাতে পিছিয়ে পড়া শিশুরাও অংশ নিতে পারে।
সরব পাঠের সুবিধা
১) সরব পাঠে বিষয়বস্তুর প্রতি মনোযোগ দেওয়া সহজতর।
২) সরব পাঠ ধ্বনি প্রধান বলে পাঠক উচ্চারণের প্রতি যত্নশীল হোন।
৩) সরব পাঠ কণ্ঠ নিয়ন্ত্রণের সহায়ক।
৪) স্বরভঙ্গিতে কুশলতা অর্জনের জন্যও সরব পাঠ অপরিহার্য।
৫) সরব পাঠের মাধ্যমে পাঠ্যবস্তু স্মৃতিতে ধারণ করা যায়।
৬) সরব পাঠে বিষয়বস্তুর প্রতি মন সহজে আকৃষ্ট হয় এবং বিষয়বস্তুর মধ্যে মনকে নিবন্ধ রাখা যায়।
৭) সরব পাঠে ভাষার অন্তর্নিহিত ভাবব্যঞ্জনা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। পাঠক নিজেই তখন ভাষার ভাব ও রূপের প্রতি আকৃষ্ট হয়।
৮) সরব পাঠে শ্রবণেনিন্দ্রিয় অত্যন্ত সক্রিয় থাকে বলে গোলমেলে পরিবেশে পাঠ চলতে পারে।
৯) সরব পাঠে শিক্ষার্থীর জড়তা ও লাজুকতা দূর হয় এবং আত্মপ্রকাশের স্পৃহা বর্ধিত হয়। এতে তার আত্মবিশ্বাসও বাড়ে। এই আত্মবিশ্বাস শিক্ষার্থীর ব্যক্তিত্ব গঠনে বিপুল অবদান রাখে।
১০) সরব পাঠ শোনার ক্ষমতা ও দক্ষতা বাড়ায়।
১১) কবিতা পাঠের ক্ষেত্রে সরব পাঠ অপরিহার্য। কবিতার ভাব, ভাষা, রস, ছন্দ প্রভৃতি সরব পাঠের মাধ্যমেই আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে।
সরব পাঠের অসুবিধা
১) দীর্ঘ সময় সরব পাঠে ক্লান্তি আসতে পারে।
২) সব রকম পরিবেশে সরব পাঠ সম্ভব হয় না। বিশেষ করে, হোস্টেল বা হল জীবনে সরব পাঠ বিঘ্ন সৃষ্টি করে।
৩) সরব পাঠে অভ্যস্ত পাঠক অনেক ক্ষেত্রে নীরব পাঠের সময় অথবা লেখায় ঠোঁট নাড়ায়।
৪) সরব পাঠে অভ্যস্ত পাঠক সহজে কোনো পাঠ্যবিষয় নীরবে পাঠ করে বিষয়বস্তু আয়ত্ত করতে পারে না।
৫) উচ্চতর শ্রেণীতে সরব পাঠ অধিক পাঠের সহায়ক নয়।
৬) সরব পাঠে গভীর অভিনিবেশ সম্ভব নয়।
৭) পাঠ ও অর্থবোধ দ্রুততা বা গতি অর্জন করা কঠিন হয়ে পড়ে।
শেষ কথা:
আশা করি আপনাদের এই আর্টিকেলটি পছন্দ হয়েছে। আমি সর্বদা চেষ্টা করি যেন আপনারা সঠিক তথ্যটি খুজে পান। যদি আপনাদের এই “সরব পাঠ কাকে বলে?” আর্টিকেল পছন্দ হয়ে থাকে, তাহলে অবশ্যই ৫ স্টার রেটিং দিবেন।