রসায়নের পরিধি বা ক্ষেত্রসমূহ (The Scopes of Chemistry)

রসায়নের পরিধি বা ক্ষেত্রসমূহ (The Scopes of Chemistry)


রসায়নের পরিধি

রসায়নের বিস্তৃতি ব্যাপক। যা মানুষের সেবায় নিয়োজিত। রসায়নের চর্চা সময়ের সাথে ক্রমবর্ধমান। দৈনন্দিন জীবনে রসায়নের ব্যবহার অনেক। আমাদের প্রশ্বাসের সময় গৃহীত বায়ু প্রধানত অক্সিজেন যা প্রকৃতিতে বায়ুতে বিদ্যমান। ব্রাশ, চিরুনি, কৃত্রিম রং, কাগজ, খাতা, কালি, পেন্সিল, কলম সবই বিভিন্ন রাসায়নিক যৌগের সমন্বয়ে গঠিত। যা শিল্প কারখানায় বিভিন্ন পদার্থের রাসায়নিক পরিবর্তনের মাধ্যমে প্রস্তুত করা হয়। আমাদের প্রতিদিনের গৃহীত খাবার শ্বেতসার, আমিষ, চর্বি সবই জৈব যৌগ এবং বিভিন্ন খনিজ পদার্থের সমন্বয়ে গঠিত। উদ্ভিদ ও প্রাণি বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে খাদ্য উৎপাদন ও সঞ্চয় করে।

 

খাবার খেলে আমাদের শরীরে বিপাক প্রক্রিয়া ঘটে এবং আমরা শক্তি পাই। নিত্য ব্যবহার্য শার্ট, প্যান্ট যা জৈব যৌগ ও তন্তুর সমন্বয়ে গঠিত। রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে বিভিন্ন যৌগ থেকে তৈরি কৃত্রিম তন্তু বা প্রাকৃতিক তন্তুর সাথে রঞ্জকের সমন্বয়ে টেক্সটাইলফেব্রিক্স শিল্পে পোশাক তৈরি করা হয়। কৃষি জমিতে ব্যবহার্য সার অক্সিজেন, নাইট্রোজেন, কার্বন, ফসফরাস ইত্যাদি এবং বিভিন্ন রাসায়নিক যৌগের সমন্বয়ে তৈরি। শিল্প কারখানায় রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে তৈরি করা হয়। রাসায়নিক সার মাটিতে উদ্ভিদের পুষ্টি প্রদান করে। বিভিন্ন যানবাহনের লোহা বা অন্যধাতব পদার্থ জ্বালানি পেট্রোল অথবা ডিজেল যা রাসায়নিক পদ্ধতি ব্যবহার করে আকরিক থেকে ধাতব পদার্থ আহরিত হয়। প্লাস্টিক শিল্প কারখানায় রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে তৈরি করা হয়। পেট্রোলিয়ামের দহন হলো রাসায়নিক বিক্রিয়া।

 

কাঠ, কয়লা পোড়ানো একটি রাসায়নিক পরিবর্তন

কাঠ, কয়লা পোড়ানো একটি রাসায়নিক পরিবর্তন। কারণ কাঠ, কয়লা মূলত কার্বনের যৌগ দিয়ে গঠিত।  যেমন-  কাঠ হলো প্রধানত সেলুলোজ। কাঠ, কয়লা জ্বালানোর অর্থ প্রকৃতপক্ষেই কার্বন যৌগের দহন যা এক ধরনের রাসায়নিক বিক্রিয়া এবং এর ফলে কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস, জলীয় বাষ্প ও তাপের উৎপাদন ঘটে। তাই কাঠ, কয়লা পোড়ানো এক ধরনের রাসায়নিক পরিবর্তন।

 

রসায়ন এর কয়েকটি ক্ষেত্র

রসায়নের ব্যবহার দৈনন্দিন জীবনে ব্যাপক। রসায়ন ব্যবহার হচ্ছে এমন কয়েকটি ক্ষেত্র নিম্নে বুঝিয়ে দেয়া হলো –

১. আমাদের প্রতিদিন নিশ্বাসের সাথে গৃহীত বায়ু, আমরা প্রকৃতি থেকে গ্রহণ করছি। যা প্রধানত অক্সিজেন।

২. দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত প্লাস্টিক সামগ্রি যেমন- ব্রাশ, চিরুনি, কলম ইত্যাদি রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে গঠিত। যা শিল্পকারখানায় তৈরি করা হয়।

 

৩. খাবারের পানি যা মূলত হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন পরামাণুর সমন্বয়ে গঠিত।

৪. আমাদের ব্যবহার্য কাপড়-চোপড় যা মূলত জৈব যৌগ ও তন্তু- এর সমন্বয়ে গঠিত। যা রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে টেক্সটাইল ও ফেব্রিকস শিল্পে তৈরি করা হয়।

৫. কৃষি জমিতে ব্যবহার্য বিভিন্ন রাসায়নিক সার, যা মাটিতে উদ্ভিদের পুষ্টি যোগায়। সার মূলত অক্সিজেন, নাইট্রোজেন, কার্বন, ফসফরাস ইত্যাদি রাসায়নিক যৌগের সমন্বয়ে তৈরি।

৬. আমাদের ব্যবহৃত বিভিন্ন ইঞ্জিন বিশিষ্ট গাড়ি মূলত পেট্রোল, ডিজেল ইত্যাদি জ্বালানি সমন্বয়ে চলে। জ্বালানিগুলোর দহন হলো এক ধরনের রাসায়নিক পরিবর্তন।

Similar Posts