মেয়েদের ওজন কমানোর সহজ উপায়

মেয়েদের ওজন কমানোর উপায়-সুপ্রিয় পাঠক বন্ধুরা আপনাদের সবাইকে জানাই স্বাগত। আজ আমরা আপনাদের সাথে শেয়ার করবো মেয়েদের ওজন কমানোর উপায় সম্পর্কে। মেয়েদের ওজন কমানোর উপায় গুলোর মধ্যে নির্দিষ্ট পরিমাণে ঘুম, পরিমিত খাওয়া, সবসময় হাসি-খুশি থাকা, শরীরের যত্ন নেওয়া এবং কিছু ব্যায়াম করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। চেহারা অতিরিক্ত ভারী হয়ে গেলে মেয়েদের সমস্যার শেষ নেই। বন্ধুদের কাছে কিংবা রাস্তাঘাটে হাসির খোরাক হতে হয়।

মেয়েদের ওজন কমানোর উপায়

বন্ধুরা অতিরিক্ত ওজন মানেই শুধু শারীরিক ভার বহনে বাড়তি ঝামেলা নয়। অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনাও অনেক বেড়ে যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, শারীরিকভাবে ফিট মেয়েদের তুলনায় মোটা মেয়েদের অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা ৬৬ ভাগ বেশি। মেয়েদের অতিরিক্ত ওজনের কারণেই শারীরিক-মানসিক সমস্যা, হরমোনজনিত ইত্যাদি নানারকমের সমস্যা দেখা দেয়।

খুব সকালের করণীয়: খুব সকালে ঘুম থেকে উঠে দাঁত ব্রাশ করে নিয়ে ৪০ থেকে ৫০ মিনিট আপনারা হাঁটাহাঁটি করুন। সকালবেলা হাটাহাটি করলে আপনার শরীরের ওজন এবং পেটের মেদ দ্রুত কমে যাবে। আর হজম শক্তি বাড়াবে ও গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর হবে এবং আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে।

খুব সকালের নাস্তা:

আপনারা একটু হাটাহাটির পর এক গ্লাস লেবুর ও মধুর পানি খেতে পারেন। এক গ্লাস কুসুম কুসুম গরম পানিতে এক চা চামচ মধু ও একটি লেবুর অর্ধেক অংশ মিশিয়ে সঠিকভাবে পান করে নিবেন। লেবুতে যদি এসিডিটি থাকে তাহলে লেবুর রস কমিয়ে নিতে পারেন। অথবা আপনারা খালি পেটে না খেয়ে হালকা কিছু খেয়ে তারপর খেতে পারেন। এভাবে প্রতিদিন সকালে লেবু ও মধুর পানি পান করলে আপনার শরীরের অতিরিক্ত ওজন দ্রুত কমতে থাকবে। সেই সাথে এই পানিটি আপনার ত্বক পরিষ্কার করবে, ব্রণ উঠা থেকে রক্ষা করবে এবং আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করবে।

খাওয়া

সকলের খাবার: ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে গমের আটার মাঝারি সাইজের রুটি খাবেন। রুটির সাথে এক বাটি রান্না করা সবজি খেতে পারেন অথবা এক বাটি রান্না করা বুটের ডাল খেতে পারেন। সাথে একটা ডিম খাবেন ডিমটি কুসুম ছাড়া সেদ্ধ ডিম হলে ভালো হয়। সেই সাথে আধা কাপ টক দই খাবেন। টকদইপিটের চর্বি কমাতে বিশেষ উপকারী একটি খাবার। শরীর মেট কমানোর পাশাপাশি এটি আপনার শরীরের ক্যালসিয়াম ফসফরাস এবং ভিটামিন ডি এর যোগান দেয়। ভিটামিন ডি দাঁত এবং আপনার শরীরের হার কে শক্তিশালী করে তোলে।

দুপুরের খাবার: দুপুরে খাবারে ভাত খাবেন এক প্লেট। ভাতের সাথে শাক খাবেন এক বাটি। এক বাটি রান্না করা সবুজ অথবা রঙিন পাতায় যুক্ত সাক খাবেন। তার সাথে খেতে পারেন সবজি সহ রান্না করা একটা বড় সাইজের মাছের পিস। এখানে সবজির পরিমাণ হবে তিন সারভিং অর্থাৎ দের বাটি। এবং মাছের টুকরা ওজন হবে ১২০ গ্রামের মতো অথবা সবজি সহ রান্না করা ৪ থেকে ৫ টুকরা মাংস খাবেন। এখানে মাংসের পরিমাণ হবে ১২০ গ্রামের মতো। এর সাথে আরো খাবেন আধা কাপ পরিমাণ এর সবজির সালাত এবং এক টুকরা লেবু।

রাতের খাবার: আপনি রাতের খাবারে গমেরু ডি মাঝারি সাইজের একটা খাবেন রুটির সাথে রান্না করা সবজি খাবেন এবং দুই টুকরো মাংস খাবেন এর বেশি খাওয়া যাবে না। অথবা রান্না করা এক বাটি সবজি ও ছোট মাছ খেতে পারেন। অথবা একবাটি নিরামিষ তরকারি খেতে পারেন।

মিষ্টি জাতীয় খাবার থেকে দূরে থাকতে হবে

মিষ্টি জাতীয় খাবারগুলো আমাদের শরীর ইন্সুলিনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। ইন্সুলিন হল শরীরে চর্বি সংরক্ষণ করার প্রধান হরমোন। দেহে ইনসুলিন বেড়ে গেলে হজম প্রক্রিয়া খুবই ধীর গতিতে হয়।

প্রোটিন ও সবজি বেশি খান:

দিনের প্রতিবার খাবারে প্রোটিন, ফ্যাট এবং অল্প কার্বোহাইড্রেড যুক্ত সবজি রাখতে হবে। এগুলো আপনাদেরকে সুস্থ, সবল রাখার পাশাপাশি ওজন কমাতে সাহায্য করবে। মাংস, মাছ, সামুদ্রিক খাবার, ডিম, দুধ এ সব খাবারে প্রোটিন থাকে। নিয়মিত এ সব খাবার খান।

অল্প কার্বোহাইড্রেড যুক্ত সবজিগুলোর মধ্যে ব্রোকলি, ফুলকপি, পালংশাক, বাঁধাকপি, শিম, লেটুস, শসা, গাজর, ইত্যাদি সবজি বেশি বেশি করে খাবেন।

না খেয়ে থাকবেন না:

ডায়েট মানেই অনেকেই মনে করেন না খেলেই বোধহয় ওজন কমে যাবে। এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। না খেয়ে থাকলে ওজন কমবে না বরং অসুস্থ হয়ে যাবেন। তাই দিনে ৩-৪ বার খেতে হবে। তবে পেটা ভরে খাওয়া যাবে না। আর পরিমাণ মতো জল খেতে হবে।

ঘুম

বন্ধুরা ঘুম মানবদেহের গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ। এটা শরীর, মন, অনুভূতিকে প্রভাবিত করে। সারাদিনে খাওয়া খাবারের পুষ্টিগুণগুলো ঘুমের মধ্যে দেহের প্রয়োজনীয় অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে গিয়ে তাদের কর্মক্ষম করে। তাই একজন পূর্ণবয়স্ক নারীর দিনে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানো উচিত। ঘুম কম হলে শরীর খারাপ হয়, মন খারাপ থাকে, মাথাব্যাথা হতে পারে, কাজে অনিচ্ছা জাগে, নানা দুশ্চিন্তা এসে ভর করে। এগুলো মেয়েদের ওজন কমানোর জন্য প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।

ব্যায়াম

বন্ধুরা আপনারা চাইলে ঘরে বসে বা আশেপাশে খোলা মাঠেও ব্যায়াম করতে পারেন। বাইরে হাঁটতে যেতে পারেন এবং ঘরে স্কিপিং করতে পারেন। নিয়মিত এগুলো করলেই আপনাদের ওজন কমতে বাধ্য।

পরিশেষে, আমাদের টিপস গুলো যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনারা আমাদের কমেন্ট সেকশনে জানাবেন,আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করবো আপনাদের নতুন তথ্য দেওয়ার।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *