ভাব সম্প্রসারণ

ভাব সম্প্রসারণঃ “জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট মুক্তি সেখানে অসম্ভব” / জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ মুক্তি সেখানে অসম্ভব ভাবসম্প্রসারণ

1 min read

ভাব-সম্প্রসারণ করার নিয়ম

ক. যে উক্তি বা অংশের ভাব-সম্প্রসারণ করতে হবে, তা ভালোভাবে পড়ে মূল ভাবটি উদ্ঘাটন করতে হবে। খ. যুক্তিতর্কের মাধ্যমে ভাবটিকে বিশ্লেষণ করতে হব।।

গ. প্রাসঙ্গিক দৃষ্টান্ত বা উপমা দেওয়া যাবে।

ঘ. এক কথার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে । রচনা সহজ, সরল ও সহজবোধ্য হতে হবে ।

উত্তরের কলেবর বা আয়তনের কোনো মাপকাঠি নেই। ভাবটি সম্প্রসারিত হওয়া মাত্রই উত্তর শেষ করতে হবে।

ভাব-সম্প্রসারণ করার ক্ষেত্রে মূলভাব এবং সারকথা লেখার প্রয়োজন নেই। ভাব হলো কোনো নিগূঢ় চিন্তা যা সংক্ষেপে গদ্যে বা পদ্যে নিহিত থাকে । সুতরাং ভাব সম্প্রসারণের জন্য প্রশ্নোল্লিখিত বক্তব্যটিই একটি মূলভাব বা একটি সারকথা। তার আবার মূলভাব, সারকথা কেন? আধুনিক রীতিতে ভাব-সম্প্রসারণ লেখার একটি নমুনা নিচে দেওয়া হলো—

যদি পরিক্ষার প্রশ্নে থাকেঃ 

জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ,

বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট,

মুক্তি সেখানে অসম্ভব”

জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট মুক্তি সেখানে অসম্ভব

ভাব-সম্প্রসারণ : জ্ঞান-বিজ্ঞানের আসল উদ্দেশ্য মানুষকে প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত করে গুণে-মানে পরিপূর্ণ করে তোলা। আর তা সম্ভব হলেই একজন মানুষ প্রকৃত মানুষ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। আর জাতি হিসেবে মানুষ উঠে যায় উন্নতির শিখরে। এর প্রভাবেই নানা ধরনের কুসংস্কার, জড়তা ও হীনতা থেকে মুক্ত হয়ে শক্তিশালী জাতি হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে বিশ্বের দরবারে । আর এই জ্ঞান যদি সীমাবদ্ধ হয়ে যায় পুঁথি-পুস্তক কিংবা সংকীর্ণ চিন্তা-চেতনায়, তবে বুদ্ধি-বিবেক সেখানে আড়ষ্ট হয়ে পড়ে এবং সামগ্রিক মুক্তি সেখানে হয় সুদূর পরাহত। এ জন্যই মুক্তবুদ্ধির চর্চার মধ্য দিয়ে জ্ঞান-বিজ্ঞানকে সীমাবদ্ধ না রেখে যারা উদারভাবে জ্ঞানের আলোয় আলোকিত হয় তারাই সমাজের আদর্শ মানুষ হিসেবে পরিপূর্ণ মর্যাদা লাভ করেন। মুক্ত জ্ঞানের চর্চার মাধ্যমেই জাতি পেতে পারে সঠিক পথের সোনালি ভবিষ্যৎ। আজকে যে জাতি যত উন্নত, সে জাতির উন্নতির মূলে রয়েছে অসীম জ্ঞান শিক্ষার তৃষ্ণা। ফলে তারা কূপমণ্ডুক না হয়ে, বুদ্ধির আড়ষ্টতায় জড়িয়ে না গিয়ে মুক্তির সোপানে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছেন স্বমহিমায়। আমরা জানি, জ্ঞানশক্তির বিকাশ ঘটিয়েই কোনো ব্যক্তি জাতীয় উন্নতিতে অংশগ্রহণ করতে পারে। তাই প্রকৃত জ্ঞান অর্জনের জন্য প্রয়োজন উদার শিক্ষানীতি, যা বুদ্ধি ও বিবেকের আড়ষ্টতা থেকে রক্ষা করবে মানুষকে এবং জাতিকে এনে দেবে কাঙ্ক্ষিত মুক্তির সোনালি অধ্যায়। জ্ঞানের সাধনা মূলত আড়ষ্টতাহীন মুক্তিরই সাধনা। তাই সীমাবদ্ধ কিংবা লোক দেখানো জ্ঞান অর্জন না করে প্রকৃত জ্ঞান অর্জনই সকলের কাম্য হওয়া উচিত। এই লক্ষ্যে অগ্রসর হলে দেশের ভেতর আবির্ভাব ঘটবে মনীষী বুদ্ধিজীবী, বিজ্ঞানী, ডাক্তারসহ নামিদামি গুণী মানুষের। যাঁরা দেশ, জাতি ও বিশ্বকে দেখাতে সক্ষম হবে প্রকৃত মুক্তির পথ। আত্মপরিচয়ে বলীয়ান হয়ে উঠতে সক্ষম হবে সমগ্র মানবজাতি। আসলে প্রকৃত সম্মান ও মর্যাদা অর্জনের জন্য উদার জ্ঞানচর্চা ও মুক্ত বুদ্ধির সাধনাই একমাত্র পথ । আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে পরিচিতি লাভ করতে হলে, প্রকৃত মুক্তি পেতে হলে এর কোনো বিকল্প নেই।

ভাব সম্প্রসারণঃ “জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট মুক্তি সেখানে অসম্ভব”। জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ মুক্তি সেখানে অসম্ভব ভাবসম্প্রসারণ

জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট মুক্তি সেখানে অসম্ভব

ভাব-সম্প্রসারণ :জ্ঞান না থাকলে বুদ্ধি আসে না আর বুদ্ধি ছাড়া মুক্তি আসতে পারে না।

মানুষের জ্ঞান তার সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ। মানুষের এ সম্পদের কোন বিনাশ নেই। এ সম্পদ মানুষকে বুদ্ধির গভীরে প্রবেশের পথ খুলে দেয় এবং তখন মানুষ অতি সহজেই তার মুক্তির পথ খুঁজে নিতে পারে। বলা হয় . জ্ঞানহীন মানুষ পশুর সমান । পশুর সাথে মানুষের পার্থক্য হল মানুষের বুদ্ধি ও বিবেক আছে আর পশুর বুদ্ধি ও বিবেক নেই। জ্ঞানহীন মানুষের বুদ্ধিবৃত্তিগুলো সঠিকভাবে বিকশিত হয় না। আর হয় না বলেই সে আপনার ভালোমন্দ, ন্যায় অন্যায় সম্পর্কে সঠিক ধারণা লাভ করতে পারে না। জ্ঞান আর বুদ্ধির এ সীমাবদ্ধতাহেতু তাকে প্রতিনিয়ত প্রতিকূল পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, জ্ঞানবান ব্যক্তি তার যুক্তির নিরিখে অনেক কঠিন বিষয়কেও নিজের জন্য এবং অপরের জন্য সহজতর করে ধরে তুলতে পারেন। এ কথাটি ব্যক্তির জীবনে যেমন সত্য, তেমনি জাতির জীবনেও সত্য। কোন জাতির লোকেরা যদি জ্ঞানের চর্চা না করে তাহলে সে জাতি কোন দিন উন্নতি করতে পারে না। যে জাতি যত বেশি শিক্ষিত সে জাতি তত বেশি উন্নত। জাতীয় জীবনে জ্ঞানচর্চার উপযুক্ত পরিবেশ না পেলে মানুষের বুদ্ধিবৃত্তির বিকাশ ঘটানোর সুযোগ সীমিত হয়ে আসে। তখন অনেক মেধার অপচয় হয়। কোন জাতি যখন মেধার এ অপচয় রোধ করে জ্ঞান ও মেধার সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারে, তখন সে জাতির মুক্তি ও উন্নতি নিশ্চিত। অন্যথায় তাদের পিছিয়ে পড়া ছাড়া কোন পথ নেই। তাছাড়া পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোর দিকে তাকালেও আমরা এর সত্যতা দেখতে পাই।

তাই জাতীয় মুক্তি ও অগ্রগতির পূর্বশর্ত জনগণের বুদ্ধিবৃত্তিকে বিকাশ। এর জন্য চাই জ্ঞানের চর্চা ও গুণীর কদর। এটা যত ব্যাপক হবে জাতীয় মুক্তি ও অগ্রগতিও ততই ত্বরান্বিত।

জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট মুক্তি সেখানে অসম্ভব উক্তিটি কার

জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট মুক্তি সেখানে অসম্ভব উক্তিটি সাহিত্যিক আবদুল কাদির-এর ।

শেষ কথাঃ

আশা করি আজকের এই ভাব সম্প্রসারণঃ “জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট মুক্তি সেখানে অসম্ভব” পোস্টটি আপনার অনেক উপকারে এসেছে । যদি এই পোস্টি আপনাদের ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না । এতক্ষণ সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ । আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ ।

Tags: জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট মুক্তি সেখানে অসম্ভব ভাব সম্প্রসারণ,জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ মুক্তি সেখানে অসম্ভব ভাবসম্প্রসারণ,জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট মুক্তি সেখানে অসম্ভব,জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ বুদ্ধি,জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ বুদ্ধি সেখানে ভাব সম্প্রসারণ,জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট উক্তিটি কার

Rate this post
Mithu Khan

I am a blogger and educator with a passion for sharing knowledge and insights with others. I am currently studying for my honors degree in mathematics at Govt. Edward College, Pabna.

Leave a Comment

x