ভাব সম্প্রসারণ

ভাব সম্প্রসারণঃ “বিদ্যার সাধনা শিষ্যকে নিজে অর্জন করতে হয়, গুরু উত্তরসাধক মাত্র” ভাবসম্প্রসারণ

1 min read

ভাব সম্প্রসারণঃ “বিদ্যার সাধনা শিষ্যকে নিজে অর্জন করতে হয়, গুরু উত্তরসাধক মাত্র” । বিদ্যার সাধনা শিষ্যকে নিজে অর্জন করতে হয়, গুরু উত্তরসাধক মাত্র ভাবসম্প্রসারণ

ভাব-সম্প্রসারণ করার নিয়ম

ক. যে উক্তি বা অংশের ভাব-সম্প্রসারণ করতে হবে, তা ভালোভাবে পড়ে মূল ভাবটি উদ্ঘাটন করতে হবে। খ. যুক্তিতর্কের মাধ্যমে ভাবটিকে বিশ্লেষণ করতে হব।।

গ. প্রাসঙ্গিক দৃষ্টান্ত বা উপমা দেওয়া যাবে।

ঘ. এক কথার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে । রচনা সহজ, সরল ও সহজবোধ্য হতে হবে ।

উত্তরের কলেবর বা আয়তনের কোনো মাপকাঠি নেই। ভাবটি সম্প্রসারিত হওয়া মাত্রই উত্তর শেষ করতে হবে।

ভাব-সম্প্রসারণ করার ক্ষেত্রে মূলভাব এবং সারকথা লেখার প্রয়োজন নেই। ভাব হলো কোনো নিগূঢ় চিন্তা যা সংক্ষেপে গদ্যে বা পদ্যে নিহিত থাকে । সুতরাং ভাব সম্প্রসারণের জন্য প্রশ্নোল্লিখিত বক্তব্যটিই একটি মূলভাব বা একটি সারকথা। তার আবার মূলভাব, সারকথা কেন? আধুনিক রীতিতে ভাব-সম্প্রসারণ লেখার একটি নমুনা নিচে দেওয়া হলো—

যদি পরিক্ষার প্রশ্নে থাকেঃ 

“বিদ্যার সাধনা শিষ্যকে নিজে অর্জন করতে হয়,

গুরু উত্তরসাধক মাত্র”

বিদ্যার সাধনা শিষ্যকে নিজে অর্জন করতে হয়, গুরু উত্তরসাধক মাত্র

ভাব-সম্প্রসারণ : বিদ্যা অমূল্য সম্পদ। প্রত্যেকটি মানুষেরই আল্লাহ প্রদত্ত জ্ঞান আছে আর সেটা চর্চার মাধ্যমে উৎকর্ষ হয় । শিক্ষক শুধু দিকনির্দেশনা দিতে পারেন। ‘Knowledge is power.’ কিন্তু এটা আপনা আপনি হয় না। কষ্ট করে অর্জন করতে হয়। জীবন পুষ্পশয্যা নয় । এ পঙ্কিল জগতের সবকিছুই কণ্টকাকীর্ণ।। বেহেস্তের ফলের মতো সবকিছুই হাতে এসে পৌছায় না। দীর্ঘ সাধনা করে সেটা পেতে হয় । টাকা-পয়সা, মান-সম্মান, যাই বল না কেন সাধনা ছাড়া অর্জন করা যায় না। এক্ষেত্রে শুধু সাধনাই নয় অপরের সাহায্য-সহযোগিতা, আদেশ, উপদেশ তাকে অনুসরণ করতে হয়। কেউ একা কোনো কাজে লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে না। তাকে কিছু দিকনির্দেশনা পেতে হয়, তা না হলে সাফল্য অর্জন করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। অপরের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করেই সে নিজ সাধনায় ব্রতী হয় এবং কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে উপনীত হয়। তাই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যের সাথে উপদেশ, বিদ্যা এবং সাধনা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এগুলো ঠিকমতো একত্রিত না হলে তা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। বিদ্যা অর্জন করতে হলে সাধনার প্রয়োজন হয়; এটা সর্বসত্য। এ সাধনা কীভাবে করতে হবে তা গুরুজনের মাধ্যমেই জানতে হয়। গুরুর দ্বারস্থ হয়েই, একজন মানুষ পায় সঠিক সাধনার পথসন্ধান। মানুষের পরিপূর্ণভাবে বিকশিত হওয়ার পথের সন্ধান দেখান গুরু। গুরু এক্ষেত্রে শুধু সন্ধানদাতা; কিন্তু ফলপ্রাপ্তি করতে হলে নিজেকে সাধনা করতে হয়। নিজ সাধনাই মানুষকে বিকশিত করে। গুরু প্রতিভাকে বিকশিত করতে পারেন না। গুরু হলেন আলোকবর্তিকা আর শিষ্য হলেন আলোকিত জগৎ; সদ্যফোটা ফুলের মতো। কোনো কিছু সাধনা করতে গেলে একটা মাধ্যম দরকার। গুরু হলেন সে মাধ্যম। পৃথিবীতে অজস্র দৃষ্টান্ত আছে যাঁরা গুরুর উপদেশ পাথেয় হিসেবে গ্রহণ করে নিজ সাধনায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, সক্রেটিস, প্লেটো এবং অ্যারিস্টটলের কথা। গুরু সক্রেটিসের উপদেশ অনুসরণ করে প্লেটো এবং গুরু প্লেটোর উপদেশ অনুসরণ করে অ্যারিস্টটল জগৎখ্যাত হয়েছেন। মূলত পরিশ্রমই সৌভাগ্যের চাবিকাঠি। গুরু চালিকাশক্তি মাত্র। এক্ষেত্রে তিনি উত্তরসাধক। দিগ্‌দর্শন যন্ত্রের মতো, দিগ্‌নির্ণয় করাই গুরুর কাজ; কিন্তু গন্তব্যে পৌঁছাতে হয় নিজ ক্ষমতাবলে।

শেষ কথাঃ

আশা করি আজকের এই ভাব সম্প্রসারণঃ “বিদ্যার সাধনা শিষ্যকে নিজে অর্জন করতে হয়, গুরু উত্তরসাধক মাত্র” পোস্টটি আপনার অনেক উপকারে এসেছে । যদি এই পোস্টি আপনাদের ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না । এতক্ষণ সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ । আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ ।

Rate this post
Mithu Khan

I am a blogger and educator with a passion for sharing knowledge and insights with others. I am currently studying for my honors degree in mathematics at Govt. Edward College, Pabna.

Leave a Comment

x