প্রিপেইড এবং পোস্টপেইড সিমের মধ্যে পার্থক্য কি? কোনটি সবচেয়ে ভালো

আপনি নিশ্চয়ই প্রিপেইড সিম এবং পোস্টপেইড সিম এই দুইটি শব্দের সঙ্গে পরিচিত রয়েছেন। তবে হয়তো আমাদের মধ্যে অনেকেই এমন রয়েছেন যারা প্রিপেইড সিম এবং পোস্টপেইড সিম বলতে কি বুঝায় এই দুইটার মধ্যে পার্থক্য কি এ সম্পর্কে জানেন না। তাই আজকের পোস্টে আমরা প্রিপেইড সিম এবং পোস্টপেইড সিম বলতে কি বুঝায় এদের মধ্যে পার্থক্য কি এবং এ দুটোর মধ্যে কোনটা আপনার জন্য ভালো হবে সেটা নিয়ে আলোচনা করব। 

প্রিপেইড সিম কি?

প্রিপেইড শব্দটির বাংলা অর্থ হচ্ছে আগে প্রদান বা আগে মূল্য পরিশোধ। অর্থাৎ প্রিপেইড বলতে আমরা বুঝি কোন একটি সেবা গ্রহণ করার আগেই তার মূল্য পরিশোধ করা। অর্থাৎ আমরা যেই সিমে সেবা গ্রহণ করার পূর্বে মূল্য পরিশোধ করে থাকি তাকেই প্রিপেইড সিম বলা যায়। প্রিপেইড সিমে মূলত আমরা ইন্টারনেট অথবা এসএমএস কিংবা কথা বলার ক্ষেত্রে আগে মূল্য পরিশোধ করে তারপর সেবা গ্রহণ করি। প্রিপেইড সিমে যদি আমরা আগে রিচার্জ না করি তাহলে কোন ধরনের সেবা গ্রহণ করতে পারি না। যখন প্রিপেইড সিমের পরিশোধকৃত মূল্য বা টাকা শেষ হয়ে যায় তখন আমরা কিন্তু সেই সিম দিয়ে কোন ধরনের সেবা গ্রহণ করতে পারে না। প্রিপেইড সিমে সাধারণত আগে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা পরিশোধ করলে তার বিনিময়ে সেই পরিমাণ ব্যালেন্স সিমে এড করে দেওয়া হয়। আর সেই ব্যালেন্স যতদিন পর্যন্ত সিমে অবশিষ্ট থাকে ঠিক ততদিন পর্যন্তই তাদের সেবা গ্রহণ করা যায় যখন ব্যালেন্স শেষ হয়ে যাবে তখন কোন ধরনের সেবা গ্রহণ করা যাবে না। অর্থাৎ প্রিপেইড সিমে টাকা না থাকলে বা আগে থেকে রিচার্জ করা না থাকলে কোন ধরনের কাজ করে না। তো আমরা বুঝতে পারলাম যে প্রিপেইড সিম হচ্ছে সেই সিম যেটাতে আগেই টাকা পরিশোধ করতে হয়।

পোস্টপেইড সিম কি?

পোস্টপেইড সিমের সাধারণত সেবা গ্রহণের পরে টাকা পরিশোধ করতে হয়।  পোস্টপেইড সিম হচ্ছে এক ধরনের সিম যেটাতে আগে সেবা গ্রহণ করতে হয় পরে টাকা পরিশোধ করতে হয়। অর্থাৎ পোস্টপেইড সিমে আপনি অফুরন্ত কথা বলবেন অথবা নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত কথা বলতে পারবেন এবং তার বিনিময়ে আপনার বিল জমা হবে এবং নির্দিষ্ট সময় পর সেই বিল পরিশোধ করে পুনরায় সেবা গ্রহণ করা শুরু করতে পারবেন। পোস্টপেইড সিম হচ্ছে প্রিপেইড সিমের বিপরীত। পোস্টপেইড সিমে সাধারণত আগে টাকা পরিশোধ করতে হয় না। আপনি যদি অফুরন্ত কথা বলতে চান অথবা ইন্টারনেট ব্যবহার করতে চান তাহলে পোস্টপেইড সিম ব্যবহার করতে হবে যেখানে কল কেটে যাওয়ার ভয় নেই অথবা ব্যালেন্স ফুরিয়ে গেলে রিচার্জ এর দোকান খোজার ঝামেলা নেই। তাহলে আমরা বুঝতে পারলাম পোস্ট পেইড সিম হচ্ছে সেই সিম যেটাতে আগে সেবা গ্রহণ করে পরে মূল্য পরিশোধ করার সুযোগ রয়েছে।

প্রিপেইড এবং পোস্টপেইড সিমের মধ্যে পার্থক্য কি

উপরে আমরা যেহেতু প্রিপেইড সিম কি এবং পোস্টপেইড সিম কি সেটা সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেছে তাই আমার মনে হয় এতক্ষণে আপনারা বুঝতে পেরেছেন যে প্রিপেইড সিম এবং পোস্টপেইড সিমের মধ্যে পার্থক্য কি। মূলত পোস্টপেইড এবং প্রিপেইড সিমের মূল পার্থক্য একটাই তা হচ্ছে প্রিপেইড সিমে আগে টাকা পরিশোধ করতে হয় কিন্তু পোস্টপেইড সিমে পরে টাকা পরিশোধ করতে হয়। আশা করছি আপনারা প্রিপেইড সিম এবং পোস্টপেইড সিমের মূল পার্থক্যটা কি সেটা বুঝতে পেরেছেন।

প্রিপেইড সিমে টাকা ফুরিয়ে গেলে অসুবিধা হচ্ছে এটাতে টাকা রিচার্জ না করা পর্যন্ত কোন সেবা গ্রহণ করা যায় না পক্ষান্তরে পোস্টপেইড সিমে টাকা ফুরিয়ে যাওয়ার অথবা ইন্টারনেট ফুরিয়ে যাওয়ার কোন ভয় নেই।

যারা মোবাইলে প্রচুর পরিমাণ কথা বলেন ব্যবসায়িক প্রয়োজনে অথবা অন্য প্রয়োজনে এবং প্রচুর ইন্টারনেট খরচ করেন তাদের জন্য পোস্টপেইড সিম ব্যবহার করে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন কিন্তু যারা মোবাইলে কম টাকা খরচ করেন কম কথা বলেন কম ইন্টারনেট ব্যবহার করেন তাদের জন্য প্রিপেইড সিম ভালো বা তারা প্রিপেইড সিম ব্যবহার করতে সচ্ছন্দ্যবোধ করেন।

মূল কথা হচ্ছে লাইন না কেটে ইচ্ছামত কথা বলার জন্য পোস্টপেইড সিম আর হালকা পাতলা কথা বলার জন্য প্রিপেইড সিম।

পোস্টপেইড সিমে যেমন ব্যালেন্স ফুরিয়ে যাওয়ার ভয় নেই কিন্তু প্রিপেইড সিমে ব্যালেন্স ফুরিয়ে যাওয়ার ভয় রয়েছে।

প্রিপেইড সিমে যেমন ব্যালেন্স ফুরিয়ে গেলে রিচার্জ করার একটা ঝামেলা রয়েছে কিন্তু পোস্টপেইড সিমে সেই ঝামেলা নেই।

প্রিপেইড অথবা পোস্টপেইড কোন সিমটি আপনার জন্য ভালো হবে

প্রিপেইড অথবা পোস্টপেইড কোন সিমটি সবচেয়ে ভালো সেটা আলাদা করে বলা সম্ভব নয়। ব্যবহার ভেদে এবং ব্যক্তি ভেদে এক একজনের কাছে একেকটা সিম ভালো মনে হতে পারে।

যারা ব্যবসায়িক পাক কাজে প্রচুর পরিমাণ কথা বলেন এবং মোবাইল অপারেটর কোম্পানির সেবা গ্রহণ করার প্রয়োজন হয় তাদের জন্য মূলত পোস্টপেইড সিম। এছাড়া সাধারণত ব্যবসায়ী এবং কর্পোরেট লেভেলের ব্যক্তিবর্গের নিকট জনপ্রিয় সিম হচ্ছে পোস্টপেইড সিম। কারণ এটাতে টাকা ফুরিয়ে যাওয়ার ভয় নেই এছাড়া প্রচুর কথা বলার কারনেও ভালো সুযোগ-সুবিধা বা কম কল রেট পাওয়া যায়। তাই আপনি যদি একজন ব্যবসায়ী হন এবং ব্যবসায়িক কার্যক্রমের জন্য প্রচুর পরিমাণ মোবাইল ইন্টারনেট কিংবা মোবাইলে কথা বলার প্রয়োজন হয় সে ক্ষেত্রে আপনার জন্য পোস্টপেইড সিম ভালো হবে।

এছাড়া যারা মোবাইলে কম কথা বলেন কম ইন্টারনেট ব্যবহার করেন অথবা কম মোবাইল ব্যবহার করে তাদের জন্য প্রিপেইড সিম ভালো হবে। বিশেষ করে যারা স্টুডেন্ট অথবা গৃহিণী রয়েছেন তাদের জন্য প্রিপেইড সিম উপযুক্ত।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *